সুস্থ জীবন যাপন মেনে চলুন, ‘ব্রেন স্ট্রোক’ থেকে বাঁচুন…

সুস্থ জীবন যাপন মেনে চলুন, ‘ব্রেন স্ট্রোক’ থেকে বাঁচুন…

ওয়েব ডেস্কঃ  স্মার্ট ফোন হাতে পেয়ে আমরা সবাই আজকাল কোন কাজকর্ম না থাকলেও কিছুটা ব্যস্ত থাকি, যার ফলে শারীরিক চর্চা বা স্বাস্থ্যের প্রতি সচেনতা বোধ সবার মধ্যেই কমে গেছে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, এসব ছোটবড় সবার মধ্যেই দেখা দিচ্ছে। ধূমপান বা মদও নিয়মিত না হলে চলে না, তাই না? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশে ক্রমাগত বাড়তে থাকা ব্রেন স্ট্রোকের জন্য এ সমস্ত কারণই দায়ী। আর এর নেই কোন বয়সসীমা। বিশিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ থেকে আসুন জেনে নেই ব্রেন স্ট্রোক সম্পর্কিত কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য…

কি করে হচ্ছে এই ব্রেন স্ট্রোক


হৃদপিণ্ড সব সময় শরীরের সমস্ত কোষে অক্সিজেন যুক্ত রক্ত সরবরাহ করে আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এই রক্ত পৌঁছানোর কাজ করে বিভিন্ন ধমনী। আরও যদি রক্তচাপ বেশি থাকে কিংবা মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকে তাহলে তা ধমনীর ভিতর জমে গিয়ে রক্ত চলাচলের পটহ সরু বা একেবারে বন্ধ করে দিতে পারে। আর অক্সিজেন ঠিক করে পৌঁছাতে না পারলে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত বা অকেজো হয়ে যেতে পারে। শারীরিক এই সমস্যাকেই ‘স্ট্রোক’ বা সেরিব্রভাস্কুলার অ্যাটাক অথবা ব্রেন অ্যাটাকও বলা হয়। এই স্ট্রোকের আবার প্রকারভেদ আছে। মস্তিষ্কের ধমনীতে যদি কোন ব্লাড ক্লট বা রক্তে জমাত বেঁধে যায় এবং স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে এই অবস্থাকে বলা হয় ‘থ্রম্বটিক স্ট্রোক’। রক্তের প্রবাহ মস্তিস্কে সূক্ষ্ম আরটাররিতে আটকে গেলে ‘এম্বলিক স্ট্রোক’, আর দুর্বল ধমনী যদি রক্তচাপ সামলাতে না পারে বা রক্তের প্রবাহ আটকে গিয়ে ধমনী ফেটে গিয়ে রক্তপাত শুরু হলে তাকে ‘হেমারেজিক স্ট্রোক’ নামে বলা হয়ে থাকে।

অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ হল এর প্রধানতম কারন। অনেকেই রক্তচাপ আছে তা জানা সত্ত্বেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খান না। এছাড়াও যেই সব কারনে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে তা হল, রক্তে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরল থাকা, মেদবহুলতা, ডায়াবেটিস, ধূমপান, মদপান অথবা কোকেনের নেশা, শরীরচর্চা না করা, হৃদরোগ।

ব্রেন স্ট্রোকের এই লক্ষণ গুলো থেকে আপনি সচেতন থাকুন এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ঃ

অজ্ঞান হয়ে যাওয়া তো আছেই। তবে অনেক সময় জ্ঞান থাকলেও স্ট্রোক হতে পারে। কাজেই যেসব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে তা হল…
.কথা জড়িয়ে যাওয়া। ফলে কথা বুঝতে অসুবিধে হয়।
. মনে একটা সংশয় দেখা দেওয়া।
. মুখ, জিভের কিছু অংশ হাত, পা অবশ হয়ে যাওয়া। শরীরের একটা দিক অবশ হয়ে যাওয়ায় হাত, পা নাড়তে না পারা।
. দু চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা।
. মাথা যন্ত্রণা, বমি ভাব, দাঁড়িয়ে থাকার সময় এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়তে হবে। কাজেই স্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ব্রেন স্ট্রোক প্রতিরোধের কিছু প্রাথমিক উপায়

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখা। হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে এর হাড় দ্বিগুণ এমনকি তিনগুণও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই অসুখ ধরা পড়লে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে এবং মনিটরিং করতে হবে প্রেসার ঠিক আছে কিনা। এছাড়া নুন খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রন রাখতে হবে, ফাস্ট ফুড খাওয়া চলবে না। ধূমপান বা যে কোন প্রকার নেশা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।

ডায়েটিং করে, এক্সারসাইজ করে ওজন রাখতে হবে স্বাভাবিক। বাড়তি ওজন মানেই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকা। আর এইসব ডেকে আনে ব্রেন স্ট্রোকের মত বিপদ। রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে ব্লাড ভেসেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, স্ট্রোকের চান্স বাড়ে। অনেকে আবার স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেখলেও গুরুত্ব দেন না, এতে সমস্যা জটিল হয়ে যায়। ছাড়তে হবে ধূমপান। স্ট্রোক হবার পর প্রতিটা মিনিটই খুব গুরুত্বপূর্ণ। সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলুন। সুস্থ থাকুন ও সচেতন থাকুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here