আজ আন্তর্জাতিক যোগা দিবস

আজ আন্তর্জাতিক যোগা দিবস

ওয়েব ডেস্কঃ     ‘হেলথ ইজ ওয়েলথ’, সকলেই জানি। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ২১ জুন এক ইতিহাসের সূচনা। এই দিনটি এখন বিশ্বের ১৯০টি দেশের ২৬০টিরও বেশী শহরে  যোগ দিবস বা বিশ্ব যোগ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। যোগ হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা। তার উদ্দেশ্য মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাবিধান। এই প্রথা ভারতে আজও প্রচলিত আছে। সুস্থ ভারত নয়, সুস্থ বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস বলে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন। সেই বছরই ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘে – রাস্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদ ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস বলে ঘোষণা করেন।

সত্যিই তো পরিশ্রম করতে কার ভাল লাগে? প্রত্যেকদিন সকালবেলায় ব্যায়াম করার কথা ভাবলেই গায়ে জ্বর আসে? তার থেকে শুয়ে শুয়ে পছন্দের বই পড়া বা মোবাইলে সোশ্যাল মিডিয়া না হলে টিভি দেখা অনেক ভালো। এমনটা আমাদের অনেকেরই মনে হয়। কিন্তু সুস্থ থাকতে গেলে ব্যায়াম বা শরীরটা ঘামিয়ে নেওয়ার মতো ওষুধ জুড়ি মেলা ভার। ওয়ার্কআউট যদি একান্তই ভাল না লাগে সে ক্ষেত্রে যোগাসন করা যেতেই পারে। ভাল স্বাস্থ্য, শান্ত মন, উজ্জল ত্বক, ওজন কমানো, শক্তিশালী নমনীয় শরীর ইত্যাদি যা কিছু আমরা পেতে চাই সব কিছুর দাওয়াই কিন্তু যোগাসন। তাতে অনেকরকম শারীরিক সমস্যা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়েবেটিস, করোনারী আর্টারী ব্লকেজ ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক ভাবে একটা সুস্থ জীবন অবশ্যই কাম্য। যোগ জীবন দর্শনের মধ্য দিয়ে আত্মানুশাসন করে জীবন পদ্ধতিকে করে তোলে ব্যাধিমুক্ত এবং সমাধিযুক্ত। সর্বদা আপনাকে শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক ভাবে ফিট রাখে।

মানসিক চাপ কমায়:

আমরা সারাদিনের কাজের চাপে সবাই কমবেশি কাহিল হয়ে পড়ি। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর ক্লান্ত লাগে। অনেক সময়ই মেজাজ খারাপ থাকে। তার কারণ কিন্তু স্ট্রেস। শারীরিক এবং মানসিক দুভাবেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে যাই। যোগাসন আসলে মুক্তির পথ। কিছু কিছু যোগাসন, প্রাণায়াম এবং ধ্যান স্ট্রেস বা মানসিক চাপকে দূরে সরিয়ে প্রাণোচ্ছল জীবন যাপনকে আনন্দময় করে তোলে।

মানসিক শান্তি:

মানসিক শান্তি কে না চায়? একটু খানি মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য আমাদের কতই না প্রচেষ্টা। আমরা সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাই, ভাল গান শুনি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে সময় কাটাতে চাই তবে নিয়মিত মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য এত কিছু করার দরকার নেই। নিয়ম করে একটু যোগাসন, ধ্যান, প্রাণায়ম, নিউরোবিক ইত্যাদির মাধ্যমে মনোসংযোগ এবং মানসিক শান্তি উভয়ই বাড়ানো সম্ভব। অভ্যাস করে দেখুন, নিশ্চিত ফল পাবেন। বিংগো…

https://youtu.be/KyPZGhA-rMU

প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:

নিয়মিত যোগাভ্যাস আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চারিদিকে এখন এত দূষণ যে সবসময় নানারকম জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে এবং ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরের অভ্যন্তরীন প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকা দরকার। যোগাসন রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে টিস্যু এবং পেশীকে শক্তি দেয়। শ্বেতকণিকাগুলিকে আরও উজ্জীবিত করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শ্বাসপ্রশ্বাসের টেকনিক এবং ধ্যান এতে সাহয্য করে।

Image result for world yoga day 2017

এনার্জি বাড়ায়:

সারাদিনের শেষে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। সারাদিন ধরে নানারকম কাজ করতে হয়। তার পাশাপাশি এখন এই বিচ্ছরি গরমে একেবারে নাজেহাল অবস্থা। বাড়ি ফেরার পর আর একটুও এনার্জি অবশিষ্ট থাকে না। সারা দিনে মাত্র কয়েক মিনিটের যোগভ্যাস কিন্তু সারাদিনের পরেও এনার্জিও যোগান দেবে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ যোগাসন করলে কাজের ফাকেও ফ্রেশ আর এনার্জেটিক থাকা যাবে।

মনে রাখতে হবে যোগভ্যাস কিন্তু একটি নিয়মিত অভ্যাস। দুদিন করে ছেড়ে দিলে হবে না, নিয়মিত অভ্যাসের মাধ্যমেই এর সুফল পাওয়া সম্ভব। তবে নিজে নিজে অভ্যাস না করে একজন ট্রেনারের অধীনে এগুলো অভ্যাস করা ভাল। কারণ প্রয়োজন বুঝে ট্রেনার নির্দেশ দিতে পারবে ঠিক কোন ধরণের আসনগুলো করা উচিত।

Image result for world yoga day 2017

উপরে যে বিষয়গুলি নিয়ে কথা বললাম সেগুলোর পাশাপাশি নানারকম রোগ যোগাসনের মাধ্যমে সারানো সম্ভব। যেমন-উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, অ্যাজমা, বদহজম, কোষ্টকাঠিন্য, মাইগ্রেন, দুশ্চিন্তা এবং অবসাদ ইত্যাদি। বিশেষ কয়েকটি যোগাসন (প্রাণায়ম, মেডিটেশন, নিউরোবিক জিম ও আকুপ্রেসার) নিয়মিত অভ্যাসের মাধ্যমে এই ধরণের রোগগুলো থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। তাহলে দেখবেন নাকি একবার চেষ্টা করে!

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here