কোনোদিন নয় ~ *************** মশা আঁধারি আলো আবছায়া তারা ছোঁয়া সন্ধ্যা পাশ ফিরে শোয় -ঘুম ঘোর - ঘুমহীন চোখে ; আবদুল্লা মাঝির একখানা নৌকা ; সেখানে তালপাতার ফাঁকে আধখানা চাঁদ উঁকি দিত । তোর কোলে মাথা রেখে তখন আমরা দুজন মাঝ নদীতে । সেই ঢেউয়ের দোলা এখনো শরীর দোলায় ; ব্যাঙগুলো লাফায় আর বৃষ্টি একটু থামলে রাতে আমাদের ঘরের পিছনের - পুকুরের পাড় থেকে আসে ঝিঁ ঝিঁ র আওয়াজ ; ঘুম কুটকুটে রাত মনখারাপের ছেলেবেলা যেন ; আঁকড়ানো সন্ধ্যায় আঁকতে বসি তোর চোখ - নিরুদ্দেশের নৌকায় আমায় বসিয়ে ঠেলে দিয়েছিস দূরে ; তোর জীবন থেকে পাপ বিদায় করলি এই ভেবে ; বিদায় করেছিস ঝাঁটানো জড়ো করা কিছু - সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত আসে - রাত দুপুর - আমি এক সমুদ্রতট কোলে নিয়ে ঢেউ গুনে চলেছি একাকী বসে - এখানে পূর্ণিমা চাঁদ ফালি ফালি হয়ে যায় ঢেউয়ে ঢেউয়ে - তবু তার কত শোভা ! তোর বিষ ছোবলে মরতে ভয় পাইনি কোনদিন । এখন শুধু মনে পড়ছে আদর করে তুই খাওয়ালে - তা অমৃত হয়ে যেত সময় ছিল যেন সোহাগী সময় । কেউ তা ধরে রাখতে পারিনি - এখানে তোর কোনো ক্ষতি নাই - তোর মরমে এ হেন বীণা কোনদিন বাজেনি - এইবার - মনে হয় চোটটা অনেক গভীর হয়েছে - আঘাতটা বেশ দৃঢ় এবং ধারালো ; ভালো হয়েছে - ফুলগুলো শুকিয়ে যেত - চটকে গেছে ; এখন মেঘলা বিকালে ছাদে পায়চারি করি ; আবদ্দুল্লা মাঝির সেই নৌকাটা দেখি মেঘ আর আকাশ যেন -আমি তোর কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছি - একদিন -দুদিন -দিন দিন - বছর পেরিয়ে বছর - যেন কালে কালে ; তোর হাতের ছোঁয়া তোর শরীরের গন্ধ যেন কত নির্জনতা ; এরপর তুই মুখ ঢেকে সুটার হয়ে আসিস আমার কাছে - বার বার ঝাঁঝরা করে দিয়ে চলে যাস ; তারপর কি খেয়ালে চোখের জল আর আদর দিয়ে তুই সেই ক্ষত ভোলাবার আপ্রাণ চেষ্টা করিস - শরীরে বুনে চলিস নীরব হয়ে থাকার ক্ষয় - সুখে - অসুখে - এরপর হয়তো একদিন তুই আমি দুটো রাস্তায় হারিয়ে যাব - কোনোদিন দেখা হবে না আর - কোনোদিন নয় ... সুচেতনা সেন~01/07/2017