বাচ্চা বুড়ো আমাদের সকলেই চকলেট জিনিসটা খুবই প্রিয়। চকলেট কে না ভালবাসে? এই আধুনিক যুগে উৎসব উদযাপনে, উপহার হিসেবে বা পুরস্কার হিসেবে সবচেয়ে বেশি আদান প্রদান হয় হরেক রকমের চকলেট।
অবশ্য চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, নাকি মন্দ এটির এখনো পুরোপুরি মীমাংসা হয়নি। বিজ্ঞানী ও গবেষকরা চকলেট কে কখনো ভালো বলছেন আবার কখনো এর উপকারিতা বেশি নয় বলেও রায় দিয়েছেন। তবে এর উপকারিতা বেশি বলেই জানিয়েছেন।
চকলেট তৈরির মূল উপাদান কোকোয়া। গবেষণায় এই কোকোয়ার নানা অদ্ভত গুনের কথা জানা গেছে। প্রাচীন সভ্যতায় দৌড়ানোর সহায়ক হিসেবে চকলেট পাউডার ব্যবহার করা হত। এটি খেলে নাকি বেশি দৌড়ানো যেতো। আর বর্তমানে জানা গেছে, চকলেটে থাকা রাসায়নিক পদার্থ ডায়েরিয়া নিরাময়ে বেশ উপকারী ভূমিকা রাখে।
সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেছে, এটি উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক করে এবং হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত্ হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এছাড়া রক্তে শর্করার হ্রাস বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রন করে স্বাভাবিক রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়। যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওর সেইন্ট ভিনসেন্ট মারসি মেডিকেল সেন্টারের কার্ডওলজি বিভাগের গবেষক ওয়াইস খাজা বলেন, চকোলেট খুব ভালো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। শরীরের প্রদাহজনিত রোগ কমাতে এটি ভালো কাজে দেয়। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হওয়ার কারনেই এর উপকারী দিক বেশি। চকলেট খেলে ক্যানসার ও স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকিও কমে আসে।
তবে যেকোনো চকলেট খেলেই যে আপনি চকলেটের এই গুন গুলি পেয়ে যাবেন তা নয়। কারন সব চকলেট একই রেসিপিতে তৈরি হয় না। কোকোয়া বীজে থাকা ফ্ল্যাভনয়েডস নামক একটি পুষ্টিকণা চকলেটকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এ পরিণত করে এবং প্রদাহজনিত রোগ কমানোর গুন দেয়। কালো কুচকুচে ডার্ক চকলেটে এই গুন বেশি থাকে, সাদা রঙের চকলেটে থাকে অনেক কম। আসুন জেনে নেই ডার্ক চকলেট কী! যেসব চকলেটের ৭০ শতাংশ কোকোয়া দিয়ে তৈরি, সেগুলকেই বলা হয় ডার্ক চকলেট। এর তৈরির উপরই নির্ভর করে কোন চকলেটে কি পরিমাণ কোকোয়া থাকবে। তাই কোকোয়ার পরিমাণ যত বেশি থাকবে, সেটি স্বাস্থ্যের জন্যও বেশি উপকারী হবে।
এখন প্রশ্ন হল, আমরা বাজারে যেসব চকলেট কিনি সেগুলো কি বিশুদ্ধ ? বিশেষজ্ঞদের মতে বানিজ্যিকভাবে উৎপাদিত চকলেটে থাকে দুধ ও চিনি। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এগুলো খুব একটা পুষ্টিকরও নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দিনে দুবারের বেশি ডার্ক চকলেট না খাওয়াই ভালো।
গত কয়েক বছর ধরে চকলেট নিয়ে অনেক উন্নত পর্যায়ের গবেষণা চলছে।
২০০২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, চকলেটে থাকা ক্যাটেকিনস নামের একটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পদার্থ ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। আর ডার্ক চকলেট ডায়বাটিস কে দূরে রাখে। কিছু প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের ওপর ২০০৫ সালে চালানো এক গবেষণায় এ তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা থাকে চকলেটে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। হৃদযন্ত্র ও ত্বকের জন্যও উপকারী চকলেট। তাই সর্বদা নয় মাঝে সাঝে বাচ্চাদের সাথে আমরাও নিশিন্তে একটু চেখে নিতে পারি চকলেটের স্বাদ।