Web Desk: ভূত কেউ মানেন, কেউ অবজ্ঞা করেন। ভূত তো বিজ্ঞানের যুগে অচল। তবু ভূতের ভয় পাইনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই আমরা বলতেই পারি কম বেশি ভূত রয়েছে। অনেকেই সামনাসামনি ভূত দেখেননি। অনেকে দেখেছেন, অনুভব করেছেন। অনেকে অজ্ঞান হয়েছেন। অনেকে হেসেই উড়িয়ে দিয়েছেন। জানলে অবাক হবেন অস্ট্রেলিয়াতে রয়েছে ঘোস্ট ইউনিভার্সিটি। যাই বলুন ভূতের গল্প শুনতে এই বর্ষার দিনে আমার বেশ লাগে। আসলে আমি তো ভূত ধরা আর ভূত তাড়ানোর গল্প শুনেই বড় হয়ে উঠেছি। ছোটবেলার ভূত ধরা বা তা তাড়ানোর কথা উঠলেই মনে পড়ে ঠাকুরমার ঝুলিতে লঙ্কাপোড়া, ওঝা মুড়ো ঝাঁটা, তেল, জল, সর্ষে হাতে কিভাবে ভূত তাড়াতো সে সব ছবিগুলি মনে ফিরে ফিরে চলে আসে। সেসব তো আগের কথা। পরবর্তীকালে ভারতীয় প্যারানর্মাল বিশ্লেষক গৌরব তিওয়ারির অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর প্রচলিত হওয়ার পরের থেকেই আমরা জানতে পেরেছি এখন ভূত প্রেতের চর্চাও কতটা অত্যাধুনিক হয়ে উঠেছে। তাই আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভারতেও ‘প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেশন’ বেশ জোর কদমে চলছে। ভূত খুঁজে বেড়ানোই সেই সংস্থার লোকজনের প্রধান কাজ। কিন্তু প্রশ্ন হল তারা কীভাবে এসব খোঁজেন? কুসংস্কারের সময়ে এনারা নেই। অনেক আধুনিক। আমরা এখন বিজ্ঞানের আধুনিকতায় তাই ঝাড়ফুঁক, তুকতাক, মন্ত্র দিয়ে ভূত ধরা নয়, এঁদের ভূত ধরার যন্ত্রপাতি বেশ উন্নত ও আধুনিক। আসুন জেনে নেওয়া যাক, একুশ শতকের ‘প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেশন’-এ সেই সমস্ত আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবহার কেমন করে হয় সেই সব কথা।
ইলেকট্রনিক ভয়েস ফেনোমেনা (ইভিপি):
প্রেতাত্মারা নাকি ক্ষীণ শব্দ করে আমাদের সাথে কথা বলে। তাই আমরা অনেক সময় শুনতে পাই পিছন থেকে কে যেন ডাকছেন। গায়ে কাঁটা দেয়, তারপর আর কিছুই দেখতে পাই না। আসলে প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটরদের মতামত অনুসারে প্রেতাত্মারা আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত ক্ষীণ শব্দ তরঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে থাকে। আমরা সাধারণ মানুষ, তাই আমরা কিছুই এমনিতে ভাল করে শুনতে পাই না। এই যন্ত্রের মধ্য দিয়েই আমরা জানতে পারি সেই সব ইনফ্রা সাউন্ড বা ক্ষীণ শব্দ তরঙ্গ। যার মাধ্যমে বোঝা যায় তেনারা আছেন।
ডিজিটাল ইনফ্রারেড ক্যামেরা:
ইনফ্রারেড ক্যামেরাকে অন্য কথায় বলা যায় থার্মাল ইমেজার। ইনফ্রারেড ক্যামেরায় সাধারণত রাতের অন্ধকারে আমরা বনের মধ্যে পশুপাখির কার্যকলাপ টিভিতে লক্ষ্য করেছি। আবার এই ক্যামেরা দিয়েই গাঢ় অন্ধকারের মধ্যেও ইনফ্রারেড ক্যামেরার সাহায্যে ভূত সম্পর্কে মোটামুটি স্পষ্ট ছবি তোলা সম্ভবপর। তারফলে অন্ধকারের মধ্যেও এই ক্যামেরার সাহায্যে ‘প্যারানরমাল ভিডিও ডকুমেন্টেশন’-এ অনেক সুবিধে হয়।ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ডিটেক্টর:
এই যন্ত্রটিকে খুব সংক্ষেপে আরেক নামে বলা হয়ে থাকে ইএমএফ মিটার। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডে কোনও আত্মা থাকলে বিশেষ ভাবে তা যন্ত্রের মধ্যে ধরা দেয়।
তাই প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটররা মনে করেন আত্মার উপস্থিতি বা কোনও অস্বাভাবিক কার্যকলাপ হলে তা অবশ্যই এই যন্ত্রে বিশেষ ভাবে ধরা পড়ে যাবে।
এক্সটার্নাল থার্মোমিটার:
‘প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেশন’-এর ক্ষেত্রে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র বলেই মনে করা হয়। যন্ত্রটি দিয়ে সেই স্থানের তাপমাত্রা মাপা যায়। আসলে পরিবেশের মধ্যে আত্মা রয়েছে। সেই আত্মার তাপমাত্রা সাধারণ আমাদের ঘরের তাপমাত্রা থেকে অনেকটাই আলাদা। তাই ভূত-সন্ধানীদের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, কোনও স্থানের তাপমাত্রার অস্বাভাবিক রকমের দ্রুত পরিবর্তন ঘটলে সেখানে প্রেতাত্মার উপস্থিতিরই ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। আসলে অভিজ্ঞ ভূত সন্ধানকারীরা বুঝতে পারেন এখানে কোনও ভূত রয়েছে নাকি।
কী ভাবছেন, আপনিও যন্ত্রগুলি আজই অর্ডার করবেন!! অর্ডার না করলেও ভেবে দেখুন ভূত বিজ্ঞান কতটা এগিয়েছে, আচ্ছা ভূতের নিজস্ব বিজ্ঞানও কী এগিয়েছে…এই দেখুন আমার মাউসটা ধরে কে যেন টানছে…