জয়তু জার্মানি – ২০১৮ বিশ্বকাপের হুঙ্কার!!
ফ্রান্সের পর প্রথম কোনও ইউরোপীয় দেশ কনফেড জিতল। আর জার্মান শুরু থেকেই প্রথমবারের মতো কনফেডারেশসন কাপ খেলতে এসে ১১টি গোল করে ফাইনালে পৌঁছে যায়। তবে খেলার হালটা চিলি ধরে রাখলেও জিতে গেল জার্মান। চিলির রক্ষণভাগে একাধিক ভুল হয়ে যায় মিস পাস। তবু ব্রাভো একবার ফসকে দেন বল। যদিও ব্রাভোর কিছুই করার ছিল না। তিনি না থাকলে জার্মানদের কাছে আরও গোল খেতে হত।
কোপা আমেরিকার শিরোপা জয়ী চিলি রোববার সেন্ট পিটার্সবার্গে শুরু থেকেই চেপে ধরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের রক্ষণকে। ম্যাচের প্রথম ২০ মিনিটে একাধিক সুযোগ তৈরি করা চিলি শুধু গোলটাই পায়নি। উল্টে ২০ মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে বসে চিলি। ডি বক্সের বাইরে মার্সেলো দিয়াসের ভুলে বল পেয়ে যায় জার্মানির ফরোয়ার্ড টিমো ভের্নার। বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক ক্লাওদিও ব্রাভোকে পরাস্ত করার বদলে এই ফরোয়ার্ড বল বাড়ান আরেক ফরোয়ার্ড স্টিনডলকে। অরক্ষিত স্টিনডল তা থেকেই গোল করেন।
পিছিয়ে পড়া চিলি আক্রমণের ধার আরও বাড়ায়, সুযোগও তৈরি করে। বারংবার আক্রমণ করতে থাকে। পুরো কনফেড-এ চিলি রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে থাকলেও আজ পুরো অচেনা চিলিকে মাঠে দেখা যায়। মারপিট। রেফারির সহায়তায় নাটকীয় সব কিছুই স্থিতিতে আসে। কিন্তু এত কিছু করার পরেও জার্মানীর জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। দশ দিন আগেই গ্রুপের খেলায় দুই দল ১-১ এ ড্র করেছিল। কিন্তু আজ যেন শুরু থেকেই জার্মানরা বডি ল্যাঙ্গুয়েজে এগিয়ে ছিল। এই কনফেড টুর্নামেন্টে ভিএআর মানে ভিডিও রেফারেল প্রথম ব্যবহার করা হয়। আজও তার সঠিক ব্যবহার করেন রেফারি। ফুটবলের মাঠে দিন দিন নতুন নতুন প্রযুক্তি আশ্চর্য করে দিচ্ছে। তবে প্লেয়ারদের ভিতর মারপিট, কোচের চোখ রাঙানি এসব কাম্য নয়।
৮১ মিনিটে মাঠে আসার কিছুক্ষণের মধ্যে ৮৫ মিনিটের মাথায় সমতা আনার সবচেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন আনহেলো সেহাল। এইরকম ভাবে তেকাঁঠিতে বল না রাখতে পারলে আলাদা করে কিছুই আর বলার থাকে না। কিন্তু বারের অনেক ওপর দিয়ে মেরে হতাশ করেন এই ফরোয়ার্ড। যোগ করা সময়ে সানচেজের দারুণ ফ্রি-কিক ঠেকিয়ে দেন টের স্টেগেন। আসলে চিলি এতটাই মাথা গরম করে ফেলেছিল, যে অনেক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারল না। বক্সের অনেক কাছ থেকে ফ্রিকিক পেয়েছিল শেষ লগ্নে সেটাও ভেস্তে দেয় জার্মানরা। বলা যেতেই পারে ম্যাচটা চিলিরা খেলে গেল সাতটি হলুদ কার্ডও পেলো। মারপিট করল। দুই দল মোট সাতটি হলুদ কার্ডও দেখে। তবে চ্যাম্পিয়ন হল চ্যাম্পিয়নরাই। শেষের কিছু মিনিট এক্সট্রা সময়ে মাথা গরম করে ফেলে দুই দল। তার জন্য মাঠে বেঞ্চের প্লেয়ারাও ঢুকে পরে। নাটকীয় এক খেলার নাটকীয় ট্রাজেডি হয়ে থেকে গেল চিলি। চিলি গোলে ২১ টা শর্ট করে, সেখানে জার্মান করে ৮টি। তবু রাজকীয় জয় কিন্তু ড্রাক্সলারের দলই পান। জার্মান কোচ জোকিম লো-এর মুখের আবেগগুলো আজ দেখার মতো ছিল। এ যেন যুদ্ধ জয়।
তার একটু পরেই খেলা শেষ হওয়ার বাঁশি বেজে উঠলে শিরোপা জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে জার্মানি। জয়ের এই টেম্পোটাই জার্মানরা ধরে রাখতে চায় আগামী বছরের বিশ্বকাপে। এখন এটাই দেখার জার্মানদের এই দলের সাথে মুখোমুখি হওয়ার জন্য বাকিরা কতটা প্রস্তুত।
তবে এই দিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিলের রোনাল্ডো এবং আর্জেন্টিনার মারাদোনা। সেদিকেও নজর ছিল সকলের। তারকা, মারপিট, খেলা, কার্ড, ভিডিও রেফারেল সব নিয়ে দর্শকরা অনেক দিন মনে রাখবে এই ফাইনালকে।
এক ঝলকে দেখে নিন ফাইনাল ম্যাচের বিশেষ মুহূর্ত গুলি..
https://www.youtube.com/watch?v=_8Hu_dQcdcA