কলকাতা থেকে প্রায় ৬৭০ কিলোমিটার এবং শিলিগুড়ি থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্ব পশ্চিম সিকিমে অবস্থিত হি-বারমিওক এর। পাহাড়ঘেরা পাশাপাশি অনেকগুলো গ্রাম। শান্ত, চোখজুড়নো। হি-বারমিওক – মারতাঙ্গ – কালুক – রিনচেনপং পাহাড়ের গায়ে আটকে রয়েছে সারি বেঁধে।
রাত্রে হোটেলের বারান্দা থেকে পাশের পাহাড়ের দিকে তাকালে মনে হবে যেন তারা ঝিলমিলে আকাশ! তিস্তা পেরিয়ে সেবক রোড ধরে এগোনোর সময় মনে হবে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করছেন।
এপ্রিল – মে মাসে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। অবশ্য কপাল খারাপ থাকলে মেঘে আকাশের মুখ ভার থাকতে পারে।
রাস্তার দু’ধারে থোকা থোকা রডোডেনড্রন। এই সময় রডোডেনড্রন উৎসবও হয় এখানে। এছাড়াও অজস্র রংবেরঙের পাহাড়ি ফুল দেখতে পাবেন রাস্তার ধারে।
একদিনের মধ্যে ঘুরে দেখে নিতে পারেন বারমিওকের আশপাশটা। নির্জন গ্রামগুলোয় সাকুল্যে গোটা দশ-বারোটা বাড়ি। ধু-ধু রাস্তা দিয়ে হেঁটে বেড়ান। মাঝে মাঝে পথের ধারে সিমেন্টে বাঁধানো শেড দেওয়া চাতালে বসে জিরিয়ে নিন খানিক।চুপ করে কিছুক্ষণ বসে থাকলেই অজস্র পাখির ডাক কানে আসবে। এখানে সন্ধে নামে ঝুপ করে। তাই সঙ্গে একটা টর্চ রাখবেন অবশ্যই। গাড়ি নিয়ে আশেপাশের জায়গা গুলি ঘুরে আসুন~
শিরজুঙ্গা ফল্স
ছায়াতাল
হি ওয়াটার গার্ডেন
হাতে সময় থাকলে বারমিওক থেকে বার্সে কিংবা উত্তারে পর্যন্ত ট্রেক করে যেতে পারেন। বার্সেতে রডোডেনড্রন স্যাংচুয়ারি রয়েছে। উত্তারে পৌঁছলে দেখতে পাবেন ট্রাউট মাছের চাষ।
অ্যালপাইন চিজ ফ্যাক্টরিও বারমিওকের অন্যতম আকর্ষণ। ছাঙ্গে ফল্স, ডেন্টাম ভ্যালি, শিংসোর ব্রিজ (এশিয়ার দ্বিতীয় উচ্চতম) এগুলোও খুব দূরে নয় বারমিওক থেকে। দু’দিনের সাইট-সিইংয়ে ছুঁয়ে আসা যাবে সবগুলোই।
শিংসোর ব্রিজ
মনে রাখবেন, সিকিম প্লাস্টিক বর্জিত একটা রাজ্য। কাজেই পর্যটক হিসেবে আপনার দায়িত্ব সেটা মাথায় রাখা। অনেক বন্ধুবান্ধব নিয়ে হইহই করার জায়গা এটা নয়। শান্তভাবে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে গেলে তবেই পাড়ি দিন পাহাড়ের কোলে এই ছোট্ট গ্রামটায়।
কখন যাবেনঃ
যাওয়ার সেরা সময় এপ্রিল-মে মাস।
কীভাবে যাবেনঃ
কলকাতা থেকে ট্রেন বা বাসে পৌঁছে যান নিউ জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে গাড়িতে ঘণ্টা চারেকের জার্নি। বাগডোগরা এয়ারপোর্ট থেকেও গাড়িতে মোটামুটি একই সময় লাগে। সাইট-সিইংয়ের জন্য একটা ছোট গাড়ি ভাড়া করে নিলে ঘুরতে সুবিধে হবে।
কোথায় থাকবেনঃ
বারমিওকে এখন নিত্য নতুন হোম স্টে গজিয়ে উঠছে। কালেজ ভ্যালি, সাইলেন্ট ভ্যালি কিংবা কাঞ্চন ভিউয়ের মতো হোটেল রয়েছে। কিছু হোটেলের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইন ঘর বুক করা যায়।