পৃথিবীর শেষের সেইদিন খুব কাছেই, ধ্বংস কিভাবে আসন্ন ?

পৃথিবীর শেষের সেইদিন খুব কাছেই,  ধ্বংস কিভাবে আসন্ন ?

সৃষ্টির শেষ লগ্নে উপনীত মানব সভ্যতা  !! আসুন জেনে নেই বিজ্ঞানীরা কি বলছেন

আমরা প্রায় সবাই হলিউড সিনেমায় দেখেছি মানবনির্মিত অতি অত্যাধুনিক রোবট বা কম্পিউটার, মেশিন অথবা অনারগ্য ভাইরাস, পুরো পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিচ্ছে !!!!!!!

বাস্তবে বিজ্ঞানীরা এমনই কিছু ভয়াবহ সত্যের দাবী করছেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের( Oxford University ) Future of Humanity Institute and the Global Challenges Foundation – এই প্রথম কিছু বৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন দ্বারা এর রহস্য উধঘাটন করেছেন……

  • পারমানবিক ও রাসায়নিক বিশ্ব যুদ্ধ 

 

এই আধুনিক যুগে বিশ্বের প্রায় বহু দেশ আজ পারমাণবিক অস্ত্র (Nuclear weapons) ক্ষমতায় সক্ষম। কোন ভুল হাতে গেলে খুব সহজেই বিপর্যয়কারী গঠনা হতে পারে।

ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, আমেরিকা এবং নর্থ কোরিয়া সহ নয়টি দেশের দখলে রয়েছে  প্রায় ১৬,৩০০ পারমাণবিক অস্ত্র।  ২০০৮ সালে Physics Today journalজানায় যে, ১০০টি পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ‘পারমাণবিক শীতকাল’ এনে দিতে পারে, যার প্রভাবে ১০০০ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়ে যাবে এবং সম্ভবত মানুষের জনসংখ্যার অধিকাংশ নিষ্কাশন হতে পারে।

নর্থ কোরিয়া ইতিমধ্যে আমেরিকাকে যেকোনো সময় পারমাণবিক আক্রমণের হুমকি দিয়েছে

আজকের দিনে আরেক ভয়াবহ যুদ্ধ এর দিক হচ্ছে জৈবিক অস্ত্র বা biological weapons। এর বিকাশ করাও খুব সহজ। যেমন উদাহরণ সরূপ যদি  বাতাসে “anthrax”যা একপ্রকার ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ, ছড়িয়ে দেওয়া হয় তবে জনসংখ্যার প্রায় ৯০শতাংশ মৃত্যু হয়ে যাবে।

 

 

  • Global pandemic :

এক অনারগ্য রহস্য-জনিত রোগ হচ্ছে “ইবোলা( Ebola )”,এটা হচ্ছে অনেকটা -“Rabies”, যা খুবই মারাত্মক বা সাধারণ সর্দি,যা সহজেই সংক্রামক অথবা দীর্ঘ সুপ্তাবস্থায় থাকা HIV, এর মতো ।

যদি এই বিধ্বংসী বৈশিষ্ঠ কোন প্যাথজেনে দেখা দেয়, তবে এই ইনফ্লুয়েঞ্জা বিভিন্ন প্রকার ভাইরাসের বিশিষ্ট মিশ্রণ গঠনে সক্ষম হবে। আর তখনই মৃত্যুর হার চরম হবে। আধুনিক পরিবহন ও জনসংখ্যা এই সংক্রামণকে দ্রুত ছড়িয়ে দেয়।

১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্ল, ১৪শ্তাব্দির ইউরোপের The Black Plague অথবা সম্প্রীতির বার্ড ফ্ল,আরবের MERS(corona virus)এ সবই হচ্ছে বিশ্বব্যাপী মহামারী।

 

  • Supervolcano (মহা অগ্নুৎপাত):

প্রকৃতিতে কিছু কিছু পরিস্তিথির উত্থান হয় যা আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যেমন- কোন গ্রহাণুর দ্বারা পৃথিবীকে আঘাত বা কোন আগ্নেয়গিরির মহাঅগ্নুৎপাত।

আগ্নেয়গিরির মহাঅগ্নুৎপাতের ভয়ঙ্কর পরিণাম হল এ সাধারণ অগ্নুৎপাতের তুলনায় ১০০০ পরিণাম বেশী এরোসল অ ধূলিকণা আবহাওয়ায় বাড়িয়ে দেবে। আর এই ধূলিকণাই সূর্যের আলোকে শোষণ করে নেবে, যা থেকে দেখা দেবে বিশ্বব্যাপী ‘volcanic winter’. এর পরিণাম যা কোন গ্রহাণুর প্রভাব বা পারমাণবিক যুধের পরিণাম থেকে কম নয়।

  • Artificial Intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা :

এখন অবধি সবচাইতে আলোচিত ভয়াবহ ভবিষ্যৎ গঠনা হল এই  artifical intelligence, যা সৃষ্টি হচ্ছে কিছু যন্ত্র ও সফটওয়ার দ্বারা। Artificial intelligence কথাটির মানে হচ্ছে যখন কোন মেশিন মানব মস্তিস্কের ক্ষমতাকে যেমন – ‘Learning’এবং ‘Problem solving’কে নকল করছে। এই মানব নির্মিত মেশিন ক্রমাগত মস্তিস্কের ক্ষমতাকে অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। যেমন, মানব ভাষাকে বোঝা, সেলফ ড্রাইভিং কার বা কোন অত্যাধুনিক প্রভ্লেম সলভিন ভিডিও গেইম ইত্যাদি।

আর মেশিনের এই বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতাকে সহজে নিয়ন্ত্রনে আনা যায় না এবং ধীরে ধীরে নিজস্ব বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সক্ষম হয়ে উঠতে পারে এবং পৃথিবী থেকে মানবতার মান কমে সবই হয়ে উঠবে যন্ত্র নির্ভর। যেমন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বা Autonomous weapons যাতে AI পদ্ধতি রয়েছে, যদি কোন ভুল মানুষের হাতে যায় তবে এই অস্ত্র খুব সহজেই বৃহৎ হতাহত গঠাতে পারে। যুদ্ধে শত্রুদের মারার জন্য এই অস্ত্রগুলিকে এমন পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে যা সহজেই মানব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

‘টারমিনেটর’ হয়ত কল্পবিজ্ঞানের কোন রবটিক মারণাস্ত্র যার নিজস্ব চিন্তা ও কাযের ক্ষমতা রয়েছে, তা বাস্তব রূপে আসতে আর বেশি দিন নেই।

 

  • আবহাওয়ার চরম পরিবর্তন  :

 

বিজ্ঞানীদের মতে পরিবেশে কার্বনডাইঅক্সাইড এর বৃদ্ধি প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রাকে ৫ থেকে ৭ ডিগ্রী বাড়িয়ে দিচ্ছে। অতিরিক্ত তাপমান বৃদ্ধি বা খরা, ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ইত্যাদি প্রতিনিয়ত বিশ্বজুড়ে হয়ে চলছে। প্রায় ৪০ শতাংশ অধিক কার্বনডাইঅক্সাইড পরিবেশে বেড়ে চলছে, আর ধীরে ধীরে “গ্রিন হাউস”( green house) প্রভাব বাড়ছে। কিছু আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ছাড়াও শুধু মাত্র মানবীয় ক্রিয়া থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০বিলিয়ন টন কার্বনডাইঅক্সাইড বায়ুমণ্ডলে বৃদ্ধি হচ্ছে।

রিচাস এও বলছে এই জলবায়ুর প্রভাব প্রায় সবদেশেই দেখা দিতে পারে এবং ধীরে ধীরে বাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে।

গ্লোবাল ওয়ার্ম এর প্রভাবে বরফ গলে সমুদ্রের জল তল প্রায় ৩০০ ফুট মত বাড়তে পারে, যা মানব সভ্যতার সর্বনাশা হয়ে দাঁড়াবে। আবার এদিকে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জল খুব দ্রুত বাষ্পীভূত হচ্ছে, পৃথিবীর তাপমাত্রাও বেড়ে চলছে, তাই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিচ্ছেন ‘ভেনাস’ গ্রহের মতো পৃথিবীও শেষ হয়ে যেতে পারে । খুব সম্প্রীতি  IPCC (Intergovernmental Panel on Climate Change)এর বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা ৬.৪ শতাংশ বেড়ে যাবে।

  • গ্রহাণু প্রভাব (Asteroid impact) :

 

এটা আপনাকে শুনতে কিছুটা কল্পবিজ্ঞানও মনে হতে পারে, কিন্ত  এটা সত্যি যে, কোন বৃহৎ গ্রহাণুর প্রভাব পৃথিবীর ধ্বংসের কারন হতে পারে।

প্রতি ২০মিলিয়ন বছর এ কোন বৃহৎ গ্রহাণুর ৫কিমি বা এরও বেশি বড় মাপের পৃথিবীর সাথে ধাক্কার সম্ভাবনা রয়েছে। যার প্রভাব প্রায় ১০০,০০০গুন অধিক কোন বোমা বিস্ফোরণের সমান। অতি সহজেই যেকোনো দেশের বিনাশ হতে পারে বা দেখা দিতে পারে জলবায়ু, খাদ্য ও রাজনীতির অস্থায়িত্ব।

প্রায় ৬৬মিলিয়ন বছর আগে ‘ডাইনাসর’ এর বিনাশ এমনই গ্রহানূর দ্বারা পৃথিবীর আঘাতের ফলে হয়েছে বলে বিশ্বাস।

 

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here