ওয়েব ডেস্কঃ যুবক বা যুবতী সকলেই নিজেদের সৌন্দর্য সম্পর্কে খুবই সচেতন থাকি। আর এই সৌন্দর্যের প্রথম ধাপই হল ত্বককে সুন্দর রাখা। কোমল, নমনীয়, ঔজ্বল ত্বক সকলের চাহিদা। পারিপার্শ্বিক দূষণ ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রভাব থেকে ত্বকের যত্ন নেওয়া আবশ্যক। শুরু হয়ে গেল বর্ষাকাল। গরমের দাবদাহ থেকে বর্ষাকাল অনেকটা স্বস্তি এনে দেয় কিন্ত তার সাথে সাথে বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ত্বকের ইনফেকশনের সম্ভবনাও বেড়ে যায়। তাই তৈলাক্ত ত্বক হোক বা শুষ্ক এই সময়টাতে ত্বক কিছুটা সংবেদনশীল বা সেনসিটিভ হয়ে উঠে। তাই বর্ষাকালে ত্বকের একটু বেশী যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। বাজারে স্কিন ক্যায়ারের উপর বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে, কিন্ত ঘরোয়া উপাদান ব্যবহারের দ্বারা যদি আপনি ত্বকের যত্ন নিতে পারেন তবে তার কোন তুলনা হয় না। তাই ত্বকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যতা বজায় রাখতে আসুন জেনে নেই কিছু সহজ সরল ঘরোয়া উপায়…
ত্বককে নিয়মিত রূপে প্রাকৃতিক ক্লিনজার, যেমন বেসন দ্বারা ধীরে ধীরে মেসেজ করে পরিষ্কার রাখুন। কারন দেখা গেছে বাজারে পাওয়া ফেস ক্লিনজার দ্বারা ত্বক এই সময়টাতে কিছুটা রুক্ষ হয়ে উঠে।
বর্ষাকালেও যতটা সম্ভব জল বেশি করে পান করুন, এটা জেনে রাখুন এই বর্ষাকালে আপনার ত্বক আপনার থেকে বেশি পিপাসু থাকে।
ত্বকের পি এচ(pH) ব্যালেন্স বজায় রাখতে প্রতি ওয়াসের পর অবশ্যই toner এর ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের রোম ছিদ্রকনা গুলি খুলে যায় ও ত্বক কিছুটা নমনীয় হয়ে উঠে।
স্নানের পর নিয়মিত পুরো শরীরে এলোভেরা জেল লাগাতে পারেন, এলোভেরা তে রয়েছে প্রায় সব ধরনের ভিটামিন যা ত্বকের সজীবতাকে বজায় রাখে।
এসব ছাড়াও অবশ্যই ব্যবহার করুন কিছু ফেসপ্যাক। ফেসপ্যাক আপনার ডেড স্কিনকে দূর করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে।
ঘরেই এমন কিছু উপাদান রাখা থাকে যা ব্যবহার করে অনায়াসেই ফেসপ্যাক তৈরি করা সম্ভব। শুধু আপনাকে পদ্ধতিটা জানতে হবে। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারে তৈরি করা ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারলে তার একটা আলাদা গুন রয়েছেই। জেনে নেই কি কি ফাসপ্যাক কীভাবে তৈরি করবেন।
১) টমেটোর প্যাক –
আপনার হয়তো জানা নেই যে, টমেটো এই বর্ষাকালে আপনার ত্বকের যত্নের জন্য খুবই উপকারী প্রমানিত হয়। ১ টি রসালো লাল টমেটো নিন, এর চামড়াকে ছাড়িয়ে ও ভিতরের বিচি গুলোকে ফেলে এটিকে ভাল করে চটকে নিন। শুধু এই চটকানো টমেটোটিকেই মুখে ভাল করে মেসেজ করুন, যতক্ষণ না পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। এরপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। বর্ষাকালে এর ব্যবহার ত্বককে খুবই ঔজ্বল রাখে।
২) ওটমিল ও টকদই –
২ থেকে ৩ টেবলচামচ টকদই এবং ২ টেবলচামচ ওটমিল একটি পাত্রে নিয়ে ভাল করে মেশাতে হবে। পেস্টটি যাতে নরম ও ঘন হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন। এবার এটি ত্বকে ব্যবহার করুন। প্যাকটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম জলে মুখ ধুয়ে নিন,অথবা নরম তোয়ালে গরম জলে ডুবিয়ে চিপে সেই তোয়ালেটা দিয়ে মুখ মুছুন। এতে আপনার ত্বক নরম থাকবে।
৩) দুধ, লেবুর রস ও হলুদ –
১ টেবল চামচ লেবুর রসের সঙ্গে ৩ টেবল চামচ কাঁচা দুধ এবং ১ চিমটে হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাকটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এতে আপনার ত্বকের ট্যাঁন দূর হবে এবং ঔজ্বল হয়ে উঠবে।
৪) মধু এবং গাজরের প্যাক –
২-৩ টি গাজর সিদ্ধ করে চটকে নিতে হবে। এবার তার সঙ্গে ১ থেকে ২ টেবলচামচ মধু মিশিয়ে পেস্টটি তৈরি করতে হবে। এবার প্যাকটি ত্বকে ভাল করে লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট রাখার পর ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিন। এই ফেস প্যাকটি ত্বকে লাগালে খুব তাড়াতাড়ি উজ্জ্বলতা এনে দেবে। আবার ত্বক ভাল থাকবে।
৫) কাঠবাদাম এবং ডিমের প্যাক –
৪-৫ টি কাঠবাদাম ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তার সঙ্গে ১ টি ডিম মেশাতে হবে। কাঠবাদাম এবং ডিমের প্যাকটি ত্বকে ব্যবহার করুন। ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুদিন লাগাতে হবে। কিছুদিন ব্যবহারের পরেই সুফল পাবেন।
৬) কলা, ডিমের সাদা অংশ এবং টকদই –
প্রথমে ১ টি পাত্রে ১ টি কলা ভাল করে চটকে নিতে হবে। এবার তার সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ ও ১ টেবলচামচ টকদই মেশান। সব উপকরণ একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে হবে। সেই প্যাকটি ত্বকে ১৫ মিনিট রেখে হালকা গরম জলে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই প্যাকটি সেনসিটিভ ত্বকের জন্য বেশ ভাল।
বাজারে অনেক ভেষজ প্রোডাক্ট রয়েছে, কিন্ত ঘরে নিজের হাতে বানানো উপাদানের কোন বিকল্প নেই, তাই না।