প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর স্কুলবই ও পাঠ্যসূচি ঢেলে সাজানোর কাজে হাত দিয়েছে মোদি প্রশাসন। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (NCERT) প্রস্তাব দিয়েছে শিক্ষার সাথে যুক্ত সংগঠনদের সুপারিশ জমা দেওয়ার । সেই সুযোগে ঝাঁপিয়েছে গেরুয়াপন্থী বিভিন্ন সংগঠন। তাদের সুপারিশের যা বহর, তা নিয়েই প্রথমেই বিতর্ক তুঙ্গে। তার ছত্রে ছত্রে শিক্ষায় গৈরিকিরণের চেষ্টা স্পষ্ট।
পাঠ্যক্রমের সংস্কার ঘটাতে গিয়ে স্বয়ং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে আরএসএস অনুমোদিত সংস্থা শিক্ষা – সংস্কৃতি-উত্থান বা “ন্যাস”, চলুন দেখে নেওয়া যাক তাদের দাবি অ সুপারিশগুলি~
সুপারিশ ১
স্কুলবইতে কোনও ইংরাজি, উর্দু ও আরবি শব্দ নয়
সুপারিশ ২
বাদ দিতে হবে মির্জা গালিবের কবিতা, রবীন্দ্রনাথের জীবনী ও চিন্তা, এমএফ হুসেনের জীবনী ও শিল্পপরিচয়, মুঘল আমলে দেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির সহ একগুচ্ছ বিষয়
সুপারিশ ৩
বেশ কিছু তথ্য বাদ দেওয়া বা প্রকৃত তথ্য দেওয়া। বিজেপি হিন্দু পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স ধর্মনিরপেক্ষ – এসব বিকৃত তথ্যের বদলে প্রকৃত তথ্য জানানো ৷
শিখ দাঙ্গার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ক্ষমা চাওয়া, গুজরাত দাঙ্গায় ২ হাজার মুসলিমের মৃত্যুর মত ঘটনাও বাদ দেওয়ার তালিকায় স্থান পেয়েছে ৷
এমনই একগুচ্ছ সুপারিশ ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস বইতেও আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে ন্যাস। সবার আগে এসেছে রামমন্দির প্রসঙ্গ
প্রসঙ্গ রামমন্দির
যা আছে
রামমন্দির আন্দোলনের পথ ধরে বিজেপি উত্থান, বীর সাভারকরের ভূমিকা ও বাবরি মসজিদ বিতর্ক
যা সুপারিশ
রামমন্দির ঐতিহাসিক সত্য। মন্দির ধ্বংস করে মসজিদ বানানোর ইতিহাস ও বীর সাভারকরের ভূমিকার পুর্নমূল্যায়ন
প্রসঙ্গ গুজরাত দাঙ্গা
যা আছে
২০০২ সালে গোধরায় ট্রেনে আগুন ধরায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে
যা সুপারিশ
ট্রেনে আগুন ধরানোয় করসেবকদের মৃত্যুর পর দাঙ্গা ছড়ায়
শুধু তথ্য বা পাঠ্যসূচী নয়, শব্দ নিয়েও আপত্তি। তাই একাধিক শব্দ একেবারে ছেঁটে ফেলার সুপারিশ
ভাইস – চ্যান্সেলর
ওয়ার্কার
মার্জিন
বিজনেস
ব্যাকবোন
রয়্যাল
নেকেড
লাভমেকিং
এসব শব্দগুলোর কোনটা দেশবিরোধী কোনটা আবার সামাজিক বৈষম্য প্রকট করে। নেকেড, লাভমেকিং এর মতো শব্দই বা পড়ুয়ারা জেনে কি করবে! তাই এমনই অন্তত ১৫টি শব্দ একেবারে ছেঁটে ফেলার পক্ষেই মত দিয়েছে ন্যাস। ২৯টি উর্দু শব্দের ক্ষেত্রেও একই নিষেধাজ্ঞা জারির সুপারিশ আরএসএস পন্থী এই সংগঠনের।
আরএসএস অনুমোদিত সংস্থা শিক্ষা – সংস্কৃতি-উত্থান বা ন্যাসের দাবি, প্রাথমিক থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষার খোলনোলচে বদলানো হোক। ৫ পাতার চিঠিতে ৪৫টিরও বেশি সুপারিশে রয়েছে একের পর এক চমক।