ওয়েব ডেস্কঃ “নারী চরিত্রের সৃজন কর্তা হিসাবে শরৎচন্দ্রের উদ্দেশ্যে বাংলা সাহিত্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয় থাকে, সকলের বিনোদিনীর ভগ্নাংশ,আর নয় বিনোদিনীর কাঠামোয় অন্য শরীরের রূপরঙ “-
আজ সেই “অপরাজেয় কথাশিল্পী ” শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের শ্রদ্ধা স্মরণ। “চোখের বালি ” বেরোনোর প্রায় এক যুগ পরে শরৎচন্দ্র যখন সমাজ বিগর্হিত প্রেমকে উপজীব্য করে তাঁর উপন্যাসবলী প্রকাশ করতে লাগলেন, তখন দেখা গেল যে,প্রতিপত্তির সাফল্যে এবং জনচিত্ত দখলে তাঁর সৃজিত নারী চরিত্রগুলি বিনোদিনীকে বহু পশ্চাতে ফেলে এগিয়ে গেছে। শরৎচন্দ্রের লেখক চারিত্র্যের ভিতরেই এই মনোহরণের সাফল্য বীজ নিহিত ছিল।
শরৎচন্দ্র ১৮৭৬ খ্রীস্টাব্দের ১৫ ই সেপ্টেম্বর হুগলী জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাস্তবিক জীবনে শরৎচন্দ্র অত্যন্ত দু:খের টানাপোড়নে সংসার চালান। ভাই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর জীবন কথনে আছে ভাগলপুরে তাঁর মাতুলালয়ে তিনি বেড়ে উঠেন। কারণ পিতার অর্থনৈতিক অধ:পতন তাঁকে এই জায়গায় থাকতে বাধ্য করে।
তিনি যে সময় লেখনী ধরেন, সেই সময়ের পাঠকসমাজ ন যযৌ ন তস্থৌ। সেই সময়ে রবীন্দ্র বীক্ষার সাথে তাঁর আত্মনিয়োগ সম্ভব হয়ে ওঠে নি। উপন্যাসে বারে বারে উঠে এসেছে রোমান্টিকতা প্রসাদে তরলীকরণ। প্রেম ও বিরহ তাঁর কথনে উপজীব্য হয়ে ঊঠেছে। সৌরেন্দ্রমোহন, মণীন্দ্রলাল বসু প্রমুখ এর মধ্যে পড়েন। যুগের প্রয়োজনে এসেছে পাঠকশ্রেণীর পরিতোষণ।
পাঠক জনতা ভাগ তাঁর লেখায় উঠে আসে। একদিকে সচেতন পাঠকমণ্ডলী আর অপরদিকে গল্পপিপাসু সাধারণ পাঠক সমাজ।
তাঁর উল্লেখ্য কলমের তালিকা :
উপন্যাস সম্পাদন…
১৯১৩-বিরাজবৌ,
১৯১৪-পন্ডিতমশাই,
১৯১৪-পল্লী-সমাজ,
১৯১৬-চন্দ্রনাথ,
১৯১৬-শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব,
১৯১৭-দেবদাস,
১৯১৭-চরিত্রহীন,
১৯১৭-দত্তা,
১৯১৮-শ্রীকান্ত-দ্বিতীয় পর্ব,
১৯১৮-গৃহদাহ,
১৯২০-বামুনের মেয়ে,
১৯২০-দেনা পাওনা,
১৯২৩-নব-বিধান,
১৯২৪-পথের দাবী,
১৯২৬-শ্রীকান্ত-তৃতীয় পর্ব,
১৯২৭-শেষ প্রশ্ন,
১৯৩১-শ্রীকান্ত-চতুর্থ পর্ব,
১৯৩৩-বিপ্রদাস,
১৯৩৫-শুভদা…
নাটকের তালিকায় :
১৯৩৫-ষোড়শী,
১৯২৮-রমা,
১৯২৮-বিরাজ বউ,
১৯৩৪-বিজয়া,
গল্প সম্পাদন……
১৯৩৫-রামের সুমতি,
১৯১৪-পরিণীতা,
১৯১৪-বিন্দুর ছেলে,
১৯১৪-পথ-নির্দেশ,
১৯১৪-মেজদিদি,
১৯১৫-আঁধারে আলো
১৯১৫-দর্পচূর্ণ
১৯১৫-বৈকুণ্ঠের উইল,
১৯১৬-অরক্ষণীয়া,
১৯১৬-নিষ্কৃতি,
১৯১৭-কাশীনাথ,
১৯১৭-স্বামী,
১৯১৭-ছবি,
১৯২০-বিলাসী,
১৯২০-মামলার ফল,
১৯২০-হরিলক্ষ্মী,
১৯২৬-মহেশ,
১৯২৬-অভাগীর স্বর্গ,
১৯২৬-অনুরাধা,
১৯৩৪-সতী,
১৯৩৪-পরেশ ইত্যাদি…
সহানুভূতিতে মর্যাদা সম্পূর্ণ করে হয়ত উপন্যাসকে যথার্থতা দেওয়া সম্ভব, কিন্তু যুগের রক্ষণে তিনি ভবিষ্যৎ সময়ের জনক নন, তবে সাহিত্য মর্যাদায় সার্থক রূপ পেয়েছে। এখানে কথাসাহিত্যকের সার্থকতা।