হাতের তালুতে থাকা নানা ধরনের জীবাণু হাত মেলানোর সঙ্গে সঙ্গেই একহাত থেকে অন্য হাতে চালান হয়ে যায়।তাই হ্যান্ড শেক করলেই এক হাতের জীবাণু চলে যায় অন্যের শরীরে৷ জানেন কি? কি ধরণের রোগ বাসা বাঁধতে পারে আমাদের শরীরে। রইল হদিশ৷
১. জেনিটাল হার্পিসের আশঙ্কা থাকে:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে জেনিটাল হার্পিসে আক্রান্ত রোগীর হাতেও অনেক সময় এই রোগের জীবাণু থাকে, যা একজনের শরীর থেকে আরেক জনের শরীরে ছড়াতে পারে। তাই সাবধানে থাকা প্রয়োজন৷
২. টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে :
সম্প্রতি প্রকাশিত এক সমীক্ষা রিপোর্ট অনুসারে আমাদের বেশিরভাগের হাতেই স্যালমোনেলা নামে এক ধরনের জীবাণু এসে বাসা বাঁধে। এই জীবাণুটি একবার শরীরে প্রবেশ করলেই টাইফয়েড, ফুড পয়েজেনিং, গ্যাসট্রোএন্ট্রাইটিস এবং এনটেরিক ফিবার সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আর এই জীবাণুটি হ্যান্ডশেকের মাধ্যমেও এক শরীর থেকে অনেক জনের শরীরে ছড়িয়ে পরতে পারে।
৩. চোখের সংক্রমণ:
চোখের সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তির হাতেও অনেক সময় সেই ক্ষতিকর জীবাণু পৌঁছে যায়। সেই সময় সেই রোগী যদি কারও সঙ্গে হাত মেলান, তাহলে সেই জাবীণু এক শরীর থেকে অরেক শরীরে পৌঁছে যাওয়া সুযোগ পেয়ে যায়। এইভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে এক থেকে অনেকের শরীরে।
৪. নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে:
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে হাত মেলানোর সময় নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই তো সুস্থ থাকতে হ্য়ান্ডশেক করা থেকে বিরত থাকারই নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
৫. জীবাণুর আক্রমণ বাড়ে:
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এবং টয়েলেট সিটে যে পরিমাণ জীবানু থাকে, তা আর কোথাও থাকে না। শুধু তাই নয়, নাক পরিষ্কার এবং রান্না করার পরেও আমাদের হাতে বিপুল পরিমাণ জীবাণু থাকে। একই ঘটনা ঘটে হাঁচি-কাশির পরেও। কিন্তু এইসব ক্ষেত্রেও আমরা হাত ধোয়ার প্রয়োজন বোধ করি না।
৬.পাবলিক ট্রান্সপোর্ট থেকে সাবধান:
সম্প্রতি আমাদের দেশের মেট্রো শহরগুলির বাসে-ট্রামে একটা সমীক্ষা চালিয়েছিলেন একদল গবেষক।সমীক্ষার মূল লক্ষ ছিল পাবলিক ট্রান্সপোর্টে কী পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া এবং ক্ষতিকর জীবাণু বাসা বেঁধে থাকে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা করা।সমীক্ষাটির শেষে দেখা যায়, বাসেট্রামে যাতায়াত করা প্রায় ২০-৩০ শতাংশ যাত্রীর হাতে ক্ষতিকর জীবাণু রয়েছে, যা থেকে নানা ধরনের জটিল রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এবার থেকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাতায়াত করা মানুষদের সঙ্গে একটু বুঝেশুনে হাত মেলাবান। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
৭. সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে:
একাধিক সংক্রমণ হাতের মাধ্যমে এক শরীর থেকে অনেকের শরীরে ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা থাকে।কারণ জীবাণুরা হাতের তালুর অমসৃণ তলে সহজেই বাসা বেঁধে ফলতে পারে। ফলে হাত মেলানোর সময় প্রথমে এক হাত থেকে আরেক হাতে পৌঁছে যায়।
৮.ডায়ারিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পায়:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্ট অনুসারে তৃতীয় বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক বড় অংশই ঠিক মতো হাত ধোন না। যে কারণে প্রতি বছর এই দেশগুলিতে ডায়ারিয়ায় মতো রোগের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। আসলে ঠিক মতো হাত না ধুলে খুব সহজেই জীবাণুদের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠে হাতের তালু। ফলে অপরিষ্কার হাত থেকে আরেক হাতে পৌঁছে যেতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের একেবারে সময়ই লাগে না।
৯. ভাইরাল ফিবারও হতে পারে:
অপরিষ্কার হাতের কারণে ভাইরাল ফিবার এবং চিকেন পক্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই অফিসে কাউকে হাঁচতে-কাশতে দেখলে ভুলেও তার সঙ্গে হাত মেলাবেন না। কে বলতে পারে এমনটা করলে হয়তো আপনিও অসুস্থ হয়ে পরতে পারেন।