Home ঘুরে আসি চারটি ধর্মের মানুষের বিশ্বাসের পবিত্র তীর্থস্থল ~ ঘুরে আসুন শ্রীপদ (Adams Peak)

চারটি ধর্মের মানুষের বিশ্বাসের পবিত্র তীর্থস্থল ~ ঘুরে আসুন শ্রীপদ (Adams Peak)

চারটি ধর্মের মানুষের বিশ্বাসের পবিত্র তীর্থস্থল ~ ঘুরে আসুন শ্রীপদ (Adams Peak)

ভ্রমণ কথাটির সাথে আমরা সকলেই কম বেশি পরিচিত। শ্রুতিমধুর তো বটেই, তার সাথে সাথে ঘুমিয়ে পড়া অনুভূতিগুলোকে জাগিয়ে তুলতে এর জুড়িমেলা ভার। শুধু কি তাই ? দূর কোনো অজানা অচেনা পথে হারিয়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা আর অন্য দিকে রোমাঞ্চ


আর বিস্ময়ের সংমিশ্রনে প্রতিদিনেরব্যস্ত মুহূর্তগুলোর কাছে বয়ে আনা নতুনের ছোঁয়া , এসব ই তো ভ্রমণ এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর এই অনুভূতিগুলোকে ঘিরেই আমাদেরএবারের প্রচ্ছদ কাহিনী -এডামস পিক- শ্রী পদ। এডামস পিক যার আর এক নাম শ্রী পদ, অবস্থান করছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলংকায়। আরো ভালোভাবে বলতে গেলে মধ্য শ্রীলংকায়।
 হাজারবছরের ও বেশি সময় ধরে এই পর্বত এক প্রসিদ্ধ বৌদ্ধ তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে বহু মানুষের কাছেই এই স্থানের মাহাত্মঅপরিসীম। কেউ ভাবে এখানে প্রথম পা দিয়েছিলেন পৃথিবীর প্রথম পুরুষ আদম। আবার কেউ ভাবে ভগবান শিব এর পদধূলি পড়েছিল এখানে।কারোর কাছে এই স্থান স্মরণীয়  ভগবানের দূত সেন্ট টমাস এর নামে।

 সিংহলীদের কাছে এই পর্বত সামানালাকান্দা নামেও পরিচিত। কথায় আছেভগবান সামান, এই পর্বতে বসবাস করতেন। তবে সব থেকে আলোচ্য ঘটনা এই যে, এই স্থানেই ভগবান বুদ্ধের পদ চিহ্ন আঁকা হয়ে গিয়েছিলো যখনতিনি স্বর্গের পথে পারি দিয়েছিলেন ।

শঙ্কু আকৃতি বিশিষ্ট্য এই পর্বতের উচ্চতা ৭৩৫৯ ফিট, (২২৪৩ মিটার)। আশেপাশের সমস্ত এলাকা ঘন জঙ্গলে ঘেরা যেখানে হায়েনা, হাতি, এবংআরো অনেক বন্য জন্তুর দেখা মেলে।  উপরন্তু অনেক ধরণের মূল্যবান রত্নের ও হদিশ পাওয়া যায় যেমন নীলা, রুবি, পান্না ইত্যাদি।

পবিত্র স্থান হিসেবে প্রতি বছর অন্ততপক্ষে  কুড়ি হাজার মানুষ এই পাহাড়ে চড়ার উদ্যোগ নিয়ে থাকেন।

মোটামুটি ২ থেকে ৪ ঘন্টা সময় লাগে পাহাড়েচড়তে। তবে অনেক সময় সেটা নির্ভর করে পর্বতারোহীর শারীরিক সক্ষমতা এবং বিরতি সময়ের উপর। সুতরাং প্রত্যেক পর্বতারোহীর ই প্রয়োজন যাত্রাশুরুর আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া। নিচে দেয়া নিৰ্দেশিকা আপনাকে সাহায্য করবে বিষয়টি আরো ভালভাৱে বোঝার জন্য।

পাহাড়ে চড়ার নিয়মাবলী

১। দিনের বেলা প্রচন্ড সূর্যের তাপ থাকার জন্য,সাধারণত রাতের অন্ধকারেই যাত্রা শুরু হয়। তাই পাহাড়ে চড়ার বেশ কিছুক্ষন আগে থাকতেই হালকাখাবার খেয়ে অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নিন।

২। পাহাড়ে ওঠার সময় তাড়াহুড়ো করবেন না।

৩। সর্বমোট ৫৫০০ ধাপ আপনাকে উঠতে এবং নামতে হবে। ওঠাটা সহজ হলেও নামাটা কিন্তু অপেক্ষাকৃত কঠিন। তাই নিজের শরীর এবং মনকেসেভাবেই প্রস্তুত করুন।

৪। পাহাড়ে চড়ার জন্য কোনো প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • এডামস পিক যাওয়ার সবথেকে ভালো সময় ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত।
  • আপনার বাজেট অনুযায়ী হোটেলে থাকার সুযোগ পাবেন। অবশই চেষ্টা করবেন আগে থেকে বুকিং করে যেতে, বিশেষত জানুয়ারী মাসে যখন সবথেকে বেশি ভিড় হয়।
  • পাহাড়ে ওঠার একটাই রাস্তা এবং সেটি সহজেই অনুসরণ করা যায়। আর যদি আপনার সাথে থাকে উপযুক্ত সঙ্গী বা দল তাহলে সেটা সহজতর হয়েযায়।

অবশ্যই সঙ্গে রাখুন ,

  • জলের বোতল
  • বর্ষাতি
  • প্রয়োজনীয় ওষুধ
  • রোদ চশমা
  • ক্যামেরা এবং
  • ভ্রমণ বীমা (ঐচ্ছিক)

শ্রীলংকার পঞ্চমতম উঁচু পর্বত স্থানে মানুষ যে শুধু ধর্মীয় অনুভূতির টানেই ছুটে আসে তা নয়, তারা আসে এক স্বর্গীয় সৌন্দর্যের ভাগিদার হতে, যাআপনি এবং আপনার পরিবার ও হতে পারেন। তবে অবশ্যই নিজেদের সুরক্ষার কথাটাও মাথায় রাখুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here