ওয়েব ডেস্ক~ অবাঙালিদের যেমন ধনতেরস, আমাদের তেমনই অক্ষয় তৃতীয়া৷ তবে এখন সব যেন মিলে মিশে একাকার৷ কিন্তু কি এই অক্ষয় তৃতীয়া?
সনাতন ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী আজকের এই দিনটি মহা পূর্ণময়। অক্ষয় তৃতীয়া হল চান্দ্র বৈশাখ মাসের শুক্ল পক্ষের তৃতীয়া তিথি। এই দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তিথি।
অক্ষয় শব্দের অর্থ হল যা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না। বৈদিক বিশ্বাস অনুসারে এই পবিত্র তিথিতে কোন শুভকার্য সম্পন্ন হলে তা অনন্তকাল অক্ষয় হয়ে থাকে। যদি ভালো কাজ করা হয় তার জন্যে আমাদের লাভ হয় অক্ষয় পূণ্য। আর যদি খারাপ কাজ করা হয় তবে লাভ হয় অক্ষয় পাপ।
পৌরাণিক মতে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম জন্ম নেন পৃথিবীতে। এই দিনেই রাজা ভগীরথ গঙ্গা দেবীকে মর্ত্যে নিয়ে এসে ছিলেন। এই দিনেই দেবাদিদেব মহেশ্বর পুত্র গণপতি গনেশ বেদব্যাসের মুখনিঃসৃত বাণী শুনে মহাভারত রচনাশুরু করেন।এই দিনেই দেবী অন্নপূর্ণার আবির্ভাব ঘটে। এই দিনেই চারযুগের প্রথম যুগ সত্যযুগ শেষ হয়ে ত্রেতাযুগের সূচনা হয়।
এই অক্ষয় তিথিতে কুবেরের তপস্যায় তুষ্ট হয়ে দেবাদিদেব মহাদেব তাঁকে অতুল ঐশ্বর্য প্রদান করেন। এছাড়া এই মাহেন্দ্র তিথিতে কুবেরের লক্ষ্মী লাভ হয়েছিল বলে এদিন বৈভব-লক্ষ্মীর পূজা করা হয়। এই তিথিতে ভক্তরাজ সুদামা শ্রী কৃষ্ণের সাথে দ্বারকায় গিয়ে দেখা করেন এবং তাঁর থেকে সামান্য চালভাজা নিয়ে শ্রী কৃষ্ণ তাঁর সকল দুঃখ মোচন করেন।এই তিথেই মহাভারতের দুঃশাসন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে যান এবং সখী কৃষ্ণাকে রক্ষা করেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। শরনাগতের পরিত্রাতা রূপে এইদিন শ্রী কৃষ্ণাদ্রৌপদীকে রক্ষা করেন।
পুরীধামে জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উপলক্ষ্যে রথ নির্মাণ শুরু হয় এই তিথিতে। অপরদিকে কেদার, বদরী, গঙ্গোত্রী, যমুনত্রীর যে মন্দির ছয়মাস বন্ধ থাকে এই দিনেই তার দ্বার উদঘাটন হয়। দ্বার খুল্লেই দেখা যায় সেই অক্ষয়দীপ যা ছয়মাস আগে জ্বালিয়ে আসা হয়েছিল প্রজ্জ্বলিত রয়েছে। এই দিনেই সত্যযুগের শেষ হয়ে প্রতি কল্পে ত্রেতা যুগ শুরু হয়।
তাই এই বিশেষ তিথিতে অক্ষয়প্রাপ্তির মোহেই সোনা কেনা হয়৷ ব্যক্তিগত জীবনে বা ব্যবসায়িক জীবনে সোনার মাহাত্ম্য সবথেকে বেশি৷ সুখ সমৃদ্ধি ও সম্পদের প্রতীক এই সোনা৷ এই বিশেষ দিনে সোনা কেনার অর্থ জীবনে কখনও সমৃদ্ধির অভাব হবেনা৷
অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে প্রতিটি সোনার দোকানেই চলে বিশেষ ছাড়। পিছিয়ে নেই অনলাইন সংস্থাগুলিও। অনলাইনে নামীদামি সংস্থাগুলোতে চলছে বিশেষ ছাড়। আর দেরি না করে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের সোনা।
এছাড়া সোনার গয়নার দোকানগুলিও অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষে মজুরিতে দিচ্ছে বিশেষ ছাড়। ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সোনার কয়েনের ওপরে পেয়ে যাচ্ছেন বিশেষ ছাড়।
সোনা এবং হীরের যেকোন গয়নার ওপরে পেয়ে যাচ্ছেন ২৫ শতাংশের বিশেষ ছাড়। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত থাকছে এই বিশেষ সুযোগ।
এখানে সোনার গয়নার ওপরে থাকছে ২৭ শতাংশ ছাড় এবং হীরের গয়নার ওপরে থাকছে ৫০ শতাংশের বিশেষ ছাড়। এই সুবর্ণ সুযোগ হাত ছাড়া না করে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের গয়না।
সোনার কেনার সময় কতটা খাঁটি তা যাচাই করে তবেই কিনুন। কারণ এর থেকেই সোনার প্রকৃত মূল্য বিচার হয়। দ্য ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড হলমার্ক সোনার অথরাইজড এজেন্সি। হলমার্ক সোনার গয়নায় একটা নম্বর থাকে, বিআইএস স্ট্যাম্প, কত ক্যারাট ও হলমার্কিংয়ের বছর লেখা থাকবে। সেই সঙ্গেই থাকে জুয়েলারের আইন্ডেটিফিকেশন মার্ক। সোনার গয়না কেনার আগে হলমার্ক দেখে নিন। ক্যারাট, ওজন, দাম বিচার করে তবেই কিনুন। ২৪ ক্যারাট মানে ১০০ শতাংশ খাঁটি।
তাই মন খুলে কেনাকাটা করুন এই অক্ষয় তৃতীয়ায়৷ ঘরে নিয়ে আসুন সোনা৷ আর ঘরে আবাহন করুন সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি ও শান্তিকে৷ অনেক শুভ কাজ করার জন্য বাঙালি বেছে নেয় এই বিশেষ তিথিকে৷ সুযোগ হাতছাড়া করবেন না আপনিও৷ বেড়িয়ে পড়ুন৷ মিষ্টির প্যাকেট, ক্যালেন্ডার, নরম পানীয় দিয়ে জমজমাট হোক আপনার অক্ষয় তৃতীয়া৷