Home পাঁচমিশালি জানেন কি, এই মন্দিরে ঢুকলেই আপনি হয়ে যাবেন পাথরের মূর্তি!!

জানেন কি, এই মন্দিরে ঢুকলেই আপনি হয়ে যাবেন পাথরের মূর্তি!!

জানেন কি, এই মন্দিরে ঢুকলেই আপনি হয়ে যাবেন পাথরের মূর্তি!!

মন্দিরে ফ্রিজ বললেই আপনি হয়ে যাবেন সত্যিই কারের ‘স্ট্যাচু’!! যাবেন নাকি রাজস্থানে…

আমাদের ভারতবর্ষে লুকিয়ে রয়েছে রোমহর্ষক রহস্য। জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক সব কাজেই রয়েছে থ্রিলিং বিষয়। কারণ ভারতে রয়েছে অজস্র ধর্মের মানুষ। সবার নিজস্ব মতামত। তাই প্রকৃতির মাঝেই রয়ে গেছে গল্পের বাস্তব থ্রিলিং চ্যাপটার। আপনি যদি রাজস্থানে বারমেরের দিকে যান নানা কেল্লা তো দেখতে পাবেনই তার সাথে পাবেন দেখতে এক মন্দির। কার্যত এখানে ফেলুদার মতো আপনি সোনারকেল্লা যেমন দেখতে পাবেন তার সাথেই অনুভব করতে পারবেন মরু শহরে ও গ্রামে সন্ধ্যার পরে মৃত্যুর হাতছানি। বারমারের কাছেই “কিরাডু” নামক মন্দির রয়েছে। সেখানে আপনি গেলেও নাকি হয়ে যাবেন স্ট্যাচু। আগে জানা ছিল না মন্দিরকে কেন্দ্র করে এমন বিশ্বাস তৈরি হতে পাবে।

किराडू के मंदिर का रहस्य – Rahasyamaya

আপনিও যদি এই মন্দিরে যান, তবে দেখতে পাবেন…কারুকার্যময় এক মন্দির। “কিরাডু” মন্দিরের কারুকার্য দেখে  মনে হতেই পারে আপনি কোনও এক আর্ট গ্যালারিতে এসে পৌঁছে গেছেন। সাথে যদি লেন্স আর ভিউ ফাইন্ডার থাকে তাহলে তো কথাই নেই। তবে যাই করুন দিনের বেলায় যাবে। যদি সন্ধ্যা বেলায় যান…তাহলে….অজানা এক রহস্য। ওখানকার সাধুরা বলেন সন্ধ্যের পরে যেতে নেই। যদি যান সাধুরাই আপনাকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে গিয়ে বলতেই পারেন – আপনিও মূর্তি হয়ে যাবেন…

किराड़ू का अनोखा प्राचीन मंदिर - Barmer ...

পাথুর মূর্তি হয়ে যাবেন –

ঐ অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা মনপ্রাণ দিয়ে বিশ্বাস করেন সন্ধ্যার নামার পরে সেই মন্দিরে যদি প্রবেশ করেন তাহলে এক অজানা অভিশাপের বলে রক্তমাংসের মানুষ পাথর হয়ে যাবে। তার মানে হল মৃত্যু নিশ্চিত। (অহল্যা সিনেমার কথা মনে পরে গেল নিশ্চয়ই) বারমের থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত “কিরাদকোট” নামে পরিচিত এই স্থানের একত্রিত পাঁচটি মন্দির খোদাই করা কারুকার্যের জন্য এক কালে বেশ জনপ্রিয় ছিল। তাই তো এই স্থানটিকে রাজস্থানের খাজুরাহো বলা হতো এক সময়ে। কিন্তু এখন অজানা রহস্যের শ্যাওলাতে কেবল কালো বিড়ালের চোখ গ্রাস করেছে এই মন্দিরগুলোকে। তাই এই মন্দিরগুলিতে রাতে-দিনে কোনও সময়েই খুব একটা মানুষ দেখতে পাওয়া যায় না। এমনকি হাতমা নামক যে গ্রামটিতে এই মন্দিরটি রয়েছে সেখানেও লোকের জনবসতি বেশ কম।

Kiradu temples - Wikipedia
ইতিহাসের পাতায় পাতায়

ইতিহাসের ধুলো ঘেটে জানা যায় ষষ্ঠ থেকে অষ্ট শতকে রাজপুতদের বংশধর কিরাদ নামক গোষ্ঠিরা এই অঞ্চলে শাষণ করতেন। এই মন্দিরগুলি সেই সময়ই বানানো হয়েছিল। সেই সময় কিরাডু মন্দিরের অন্তর্ভুক্ত বেশ কিছু মন্দিরে ভগবান শিবের আর বাকিগুলিতে ভগবান বিষ্ণুর পুজো করা হত। কিরাদ রাজাদের শাসনকালে এই স্থানটি সমগ্র রাজস্থানের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তার প্রমাণ পুরনো ইতিহাস বইতে বিশেষ করে পাওয়া যায়। আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার বেশ কিছু নথি ঘেঁটে জানা গেছে একাদশ ও দ্বাদশ শতকে এই অঞ্চল জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠেছিল।

Kiradu Temples Barmer | Kiradu Temple History & Information

একবিংশ শতাব্দী

এখন বর্তমানে কেবলমাত্র মানুষ পাথর হয়ে যাওয়ার ভয়ে স্থানীয় কাউকেই এই স্থানে বিশেষ ভাবে দেখতেই পাওয়া যায় না। এমনকি টুরিস্টদেরও এখানে আসতে মানা করা হয়েছে। তবু খবর চব্বিশের পাঠকরা একবার নিশ্চয়ই যাবেন!

राजस्थान का खजुराहो - किराडू मंदिर ...

গল্প হলেও সত্যি

ইন্ডিয়ান প্যারানর্মাল সোসাইটির বিশেষজ্ঞরা কিছুদিন পূর্বেই কিরাডু মন্দির চত্বরে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। তারা স্বীকার করে নেন, তারা প্রমাণ পেয়েছেন ঐ অঞ্চলে নেগেটিভ এনার্জি রয়েছে, তা আত্মা হতে পারে বা অন্য কিছু। তথ্যের সত্যাসত্য জানা না থাকলেও জানা গেছে সেই অনুসন্ধানের পর থেকেই স্থানীয় প্রশাসন আরও কড়াকড়ি শুরু করেছে এই মন্দিরে যাওয়ার বিষয়টিতে। নো এন্ট্রি।

আপনি যদি এই পুজোতে রাজস্থান যান তবে বারমের যেতেই পারেন, আর গেলে সকালের আলোতে দেখে আসুন অদ্ভুত সুন্দর এই কিরাডু মন্দির। সন্ধ্যের পরে ভুলেও যাবেন নাকি!!

इस मंदिर में जाने से इंसान बन जाता है ...
রক্তমাংসের মানুষ হয়ে যায় পাথর কিন্তু কেন?

কথিত রয়েছে সোমেশ্বর রাজার শাষণকালে এক সাধু তার ছাত্রদের নিয়ে এই মন্দিরে থাকতেন। শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যেই সেই সাধুবাবা এখানে এসেছিলেন। একদিন তিনি সিদ্ধান নেন রাজস্থান ভ্রমণে যাবেন। সেই মতো তিনি ভ্রমণে যান। মন্দির দেখভালের দায়িত্ব ছাত্রদের উপরেই দেওয়া ছিল। জানা যায় ঠিক সে সময়ই  অজানা এক মহামারীর আক্রমণে একের পর এক ছাত্রের মৃত্যু ঘটতে থাকে। এদিকে ছোঁয়াচে রোগে মৃত্যু ভয়ে কোনও গ্রামবাসী সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেনি। তখনই কেবল একজন মহিলা সেবা ও দয়ার মন নিয়ে বাচ্চাদের সেবা করতে থাকেন। আস্তে আস্তে ছাত্ররা সুস্থ হয়ে ওঠে।

Browse Kiradu Ancient Temples, Barmer Photos and Image Gallery ...

কিছু সময় এর মধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে। প্রায় দুই বছর কেটে যায়। সাধুবাবা হঠাৎ একদিন ফিরে আসেন। প্রিয় ছাত্রদের এই অবস্থা হয়েছে! সেটা তিনি মেনে নিতে পারেননি নিজের নিজের চোখ। তাই রাগে-দুঃখে তিনি গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে অভিশাপ দেন। সেই গ্রামে প্রাণের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না বলেই তিনি অভিশাপ দিয়েছিলেন। সবাই নাকি সেখানে পাথরে পরিণত হবে। কেবলমাত্র যে মহিলা সেবা করেছেন তিনি নাকি বেঁচে থাকবেন। যদিও তিনি বলেছিলেন “সাবধান এই মন্দির থেকে যাওয়ার সময় ভুলেও পিছনে ফিরে তাকাবে না, তাকালে তুমিও পাথর হয়ে যাবে।” একদিন সেই মহিলা সাধুবাবার কথাটি ভুলে যান, পিছনে ফিরে তাকান। সঙ্গে সঙ্গেই স্ট্যাচু। আজও মন্দিরের মাঝে সেই মহিলার পাথুরে মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়।

এবার এই গল্প কথার সত্য বিচার করতে হলে আপনাকে যেতেই হবে বারমের কিরাডু মন্দিরে। পুজোর আগেই বুক করে দিন রাজস্থানের বারমেরের টিকিট…

 



LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here