সত্যিই “বভ্বারম্ভে লঘু ক্রিয়া” বললেও পুরোটা বোঝানো যাবে না, ফেসবুক এ একজন লিখেছেন
” ওরে হল্লা রাজার সেনা, তোরা লাইনে দাঁড়িয়ে গুনলি কি তাই বল” …
সত্যিই তো হল্লারাজার না খেতে পাওয়া সেনাদের মত ১৩০ কোটি মানুষকে এক রাতের ভিতর তাদের লক্ষ্মীর ভাঁড়, বইয়ের ভাঁজে জমানো হাতে গোনা ৫০০-১০০০ এর নোট পকেট এ নিয়ে নভেম্বর এর ১০তারিখ থেকে ব্যাংক এর দরজায় দরজায় ৫০০ জনের পিছনে “কালাধন” নামক মুদ্রারাক্ষস এর ভয় দেখিয়ে দাঁড় করানোর কি যুক্তি আজ দেবেন মোদী সরকার?
গতকাল আরবিআই এর রিপোর্ট বলেছে নোটবাতিল এর পর ৯৯% বাতিল টাকাই ফেরত চলে এসেছে দেশের মূল অর্থনীতিতে। বাকি মাত্র ১৬হাজার কোটি টাকা~
স্বভাবতই মানুষের মনে প্রশ্ন জাগছে, এই ১% ই যদি কালো টাকা হয়, তাহলে এতো গুলো দিন এত সময় ব্যাংকে দাঁড়িয়ে নতুন নোট নিয়ে সেলফি দেওয়া ছাড়া কি পেলাম? ৮তারিখে রাত ৮ টায় যে স্বপ্ন ফানুস দেখানো হযেছিল তার হিসেব তো একটুও মিললো না! রাঘব বোয়াল রা জালের ফাঁদে পড়াতো দূরের কথা উল্টে আজ ১০০% সাদা টাকা করে তেনারা আগের থেকে বেশি ৫৬” বুক ফুলিয়ে চলছেন।
গতকাল প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম ট্যুইট করেছেন, এই ১% ” কালাধন” উদ্ধারের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে, বলেছেন ” এই সব অর্থনীতিবিদ দের নোবেল প্রাইজ পাওয়া উচিত” ।
সত্যিই ১৬হাজার কোটি উদ্ধার করতে রিজার্ভ ব্যাংককে শুধু নোটই ছাপাতে খরচ করতে হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা, সাধারণ মানুষের উপর কর বা নতুন করে জিএসটি চাপিয়ে আদায় করা টাকার এভাবে ব্যবহার সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।
তাও বাদ দিলাম নোটবাতিলের জন্য উদ্ভূত পরিস্তিতি সামাল দিতে, ব্যাংক, পোষ্টঅফিস, এটিএম পরিসেবা প্রদানকারী ও বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্থার সাথে যুক্ত লক্ষ লক্ষ কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রমএর সময় অর্থাৎ কোটি কোটি man-hours, সেটা হিসেব করার প্রয়োজন মনে হয় অর্থমন্ত্রকের পড়েনা। এটিএম বা ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয দেশের নানান কোণায়় মৃত্যু হল যে ৫৪জনের তাদের প্রাণের মূল্য সরকার নির্ধারণ করতে পারবেন কখনো? তখন নেতাদের বলতে শুনেছিলাম বড়ো বড়ো ব্যাপারে এই ছোট ছোট বলিদান….
১৩০কোটি জনগনকে নিয়ে নোটবাতিলকে ঘিরে একেরপর এক এক্সপেরিমেন্ট করার সাহস যে ৫৬” দেখিয়েছেন, স্বপ্ন দেখিয়ে “আচ্ছে দিন ” গড়ার যে কাজে সভায় সমিতিতে চোখের জল অব্ধি ফেলেছেন, কিন্তু পারলেন না অঙ্কের হিসেবে সেটা প্রমাণ করতে।
তারসাথে, আরো একবার প্রমাণ হলো ” কালাধণ” রাখনেওয়ালারা এই সরকারের থিঙ্ক ট্যাংকের থেকে বেশি বুদ্ধি রাখেন। আমরা ছাপোষা না খেতে পাওয়া হল্লারাজার সেনারা, এতকিছুর পড়েও জানি আর মেনে নিতে বাধ্য যে- দুর্নীতি, ঘুষ, ব্ল্যাকমানি সবই আজও সমান তালেই চলছে, শুধু নতুন নোট আর নতুন রঙে।।