ওয়েব ডেস্কঃ সঙ্গীত সাধনা , ঈশ্বর স্বরূপ। যা কিছু ভালো , ইতিবাচক , তাই শক্তি । তবে বিপরীত ক্রিয়ার সে সঙ্গীত কেন ?সঙ্গীত হলো সারস্বত সাধনা । সুর ও লয়ের সারস্বত ভাষা । সুসংবদ্ধ শব্দ ও নৈশব্দের চিরন্তন সমন্বয়ের কলা বিশেষ । ধ্বনির প্রধান বাহন হল সুর । ইতিহাস বলে প্রস্থর যুগে মানুষ সঙ্গীত গাইত কিন্তু সেটাও শব্দ , ছন্দ ও প্রকৃতির সমন্বয়ে তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হত । ক্ষিতি , অপ্ ,ত্যজ , মরুৎ, ব্যোম এই পঞ্চভূতে সম্বৃদ্ধ পৃথিবীতে সঙ্গীতের নাদ বিশেষ ভাবে ক্রিয়া করে । প্রাচীনে রাগের সুরমুর্ছনায় অগ্নি নির্বাপিত হত , আবার প্রয়োজনে মাটিতে জলের প্রবাহ আনা সম্ভব হত । কিন্তু এখানের পজিটিভ
(ইতিবাচকতা ) ও নেগেটিভের (নেতিবাচকতা ) একটি ধারাবাহিকতা বজায় থাকে । পজিটিভিটি (ইতিবাচকতা) সুরে থাকলে তা আলোর বিচ্ছুরণের মতো কাজ করে ,কিন্তু যদি সত্যি সেটা আলো আঁধারী নেগেটিভ বা না বাচকের ভণিতায় , অর্থাৎ সঙ্গীত যদি ক্লান্ত , বিধ্বস্ত মনে গাওয়া হয় তখন তা মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে । কারণ সেখানে মনের নেগেটিভিটি প্রবল ভাবে ক্রিয়া করে । আজ এই প্রবন্ধে আমরা এমনই এক সঙ্গীতকে তুলে ধরবো যা বহু যুগ ধরে মৃত্যুকে ত্বরান্মিত করে আসছে।
্কিন্তু প্রশ্ন হল সঙ্গীত কিভাবে মৃত্যুর কারক ?
আমরা আজ যে গানটির কথা আলোচনা করবো, তার নাম ‘গ্লুমি সানডে'(Gloomy Sunday)। ‘গ্লুমি সান্ডে’ গানটির সুরকার হলেন হাঙ্গেরিয়ান পিয়ানোবাদক ও কম্পোজার রেজসো সেরেশ’ (REZSO SERESS)। ১৯৩৩ সালে গানটি তিনি সুর করেন। তখন এটি ‘এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ (END of the world) শিরোনামে বের হয়েছিল।পরবর্তীতে বিকল্পভাবে “জুমোরো ভার্সানাপ” (SAD SUNDAY) শিরোনামে গানের কথা পুনরায় লেখা হয়, যা তৎকালীন সময়ে লাজা জাভর রচনা করেন। ্মূল গানটি ছিল যুদ্ধ-বিধ্বস্ত হাঙ্গেরি,তথা সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের কাছে নিঃশব্দ প্রার্থনাকে কেন্দ্র করে। তবে লাজা জাভর -এর সৃষ্টি গানের কথা ছিল একদম ভিন্ন।
তিনি যে গানটি লিখেছিলেন তার বিষয়্বস্তু ছিল ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে (মৃত্যুর কারণে) আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া। যেন তারা মরণের ওপারে পুনরায় মিলিত হতে পারে। এই গানটি ‘হাঙ্গেরিয়ান সুইসাইড সং’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কেননা গানটি প্রকাশ হবার পর থেকে অনেক মানুষকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং সেই মৃতদেহের আশপাশেই ‘গ্লুমি সানডে ‘ গানটি চলতে থাকা অবস্থায় পাওয়া যায়, যার অর্থ দাঁড়ায় ওই গানটি শুনতে শুনতেই তারা আত্মহত্যা করেন।
পরবর্তী সময়ে ‘গ্লুমি সানডে’ (GLOOMY SUNDAY) গানটি অনেক প্রথিতযশা শিল্পীরা রেকর্ড ও পরিবেশন করে থাকলেও ‘বিলি হলিডে’ (BILLIE HOLIDAY) নামক গায়িকা এই গানটির খুব জনপ্রিয় একটি সংস্করণ ১৯৪১ সালে প্রকাশ করেন, যা পরবর্তীতে একটি মাইলস্টোন হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। কিন্তু সেখানেও খ্যাতির মূল কারণ ছিল সেই মৃত্যু। এই গানটির কারণে শত শত মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নিতে শুরু করে। এদিকে, ১৯৬৯ সালে ‘গ্লুমি সানডে’ গানটির মূল সুরকার রেজসো সেরেশ নিজেই আত্মহত্যা করেন। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিদারুণ হতাশা, মানসিক চাপ, কারাবাস ও নাজিদের ক্যাম্পে তার মায়ের মৃত্যু কারণেই সম্ভবত আত্মহত্যা করেন। ওই গানের কারণে আত্মহত্যা করার সম্ভাবনা ছিল ক্ষীণ। তবে ‘গ্লুমি সানডে’ গানটি নিয়ে ওই সময়ে এত বেশি আলোড়ন তৈরী হয়েছিল যে, গানটিকে অভিশপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং সেই কারণে গানটি সেই সময়কার বেতার থেকে নিষিদ্ধ হয়।
পরিসংখ্যান বলছে অতীতে প্রায় ১০০ জনেও বেশী মানুষের মৃত্যু হয় এই গানে । শুধু তাই নয়, এই শুনে যারা এর পরীক্ষা করতে চেয়েছেন , গান শুনে মনের অলখে তাঁরাও আত্মহত্যা করেছেন । সুতরাং, বিশেষ সর্তকাতার জন্য একথা বলা হয় যে , কেউ যেন এই গানটি ব্যক্তিগত জীবনে না শোনেন , কারণ লোকশ্রুতি অনুযায়ী এই গান যারা যারা শুনেছেন তাঁদের কেউ আর এখন বেঁচে নেই । তাই আমাদের অনুরোধ, ব্যক্তিগত জীবনে এর প্রয়োগ করবেন না । তবে যদিও এখন ইউ টিউবে “GLOOMY SUNDAY” পাওয়া যায়, তবু যখন জানা গেলো যে এটি জীবনের ক্ষেত্রে হানিকারক তবে সেটা না প্রয়োগ করাই বাঞ্ছনীয়।