শরীর ও মনকে ফুরফুরে রাখতে আমাদের মধ্যে অনেকেই সুগন্ধি মোমবাতি ব্যবহার করি। আপাতদৃষ্টিতে এই বিষয়টি সুখকর মনে হলেও একাধিক বৈজ্ঞানিক তথ্য বলছে অন্য কথা। সেখানে মুখ্যতঃ সুগন্ধি মোমবাতিকে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলা হচ্ছে। এই বিশেষ মোমবাতি জ্বালালে পুরো ঘর বিষাক্ত ধোঁয়ায় ভরে ওঠে বলে বৈজ্ঞানিকদের দাবি,যা খালি চোখে দেখা যায় না। প্রসঙ্গত, আমেরিকার মিচিগান ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা বেশ কিছু পরীক্ষায় এই সত্যি বেরিয়ে এসেছে যে, সুগন্ধি মোমবাতিতে থাকা বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিকের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি শরীরে প্রবেশ করতে শুরু করলে বিষক্রিয়ায় আক্রান্তহয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মোমবাতির থেকে হাজার গুণ বেশি বিষাক্ত হল সুগন্ধি মোমবাতি। সুগন্ধি মোমবাতির ধোঁয়া দীর্ঘ সময় মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে যে যে ক্ষতিগুলি হয়ে থাকে, সেগুলি হল…
১. সীসার বিষাক্তরূপ (Lead Poisoning)…
পৃথিবীর প্রায় সবধরণের ক্যাণ্ডেলের ওপরের অংশ,যেটি জ্বলে(পোলতে) মূলত সীসা(Lead) থাকে, যা জ্বলে উঠলেই তার থেকে যে ধোঁয়া নির্গত হয় তার প্রভাব সরাসরি মানব দেহের ফুসফুস,মস্তিষ্ক, এবং লিভারের পড়ে। এখানেই শেষ নয়, বেশিরভাগ মোমবাতিতেই পেনল, ক্রেসল, ক্লোরোবেনজেন, ট্রিক্য়ালেকথেন, এসেটন, জাইলিন, প্রভৃতি ক্ষতিকর টক্সিন থাকে, যার ফলে শরীরে হরমোনের তারতম্য আশঙ্কা বৃদ্ধি করে।
২.অ্যাস্থেমা বা হাঁপানির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়…
বিশ্ব জোড়া সুগন্ধি মোমবাতি বানানোর সময় এমন সব ধরণের রাসায়নিক ব্যভার করা হয় ,যার ফলে সেই সকল পোলতে থেকে বেরিয়ে আসা দূষিত ধোঁয়া মানব দেহের বিশেষ করে শিশুদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস করে এবং যার ফলে মাথা চাড়া দেয় বিভিন্ন ধরনের সব ফুসফুস সংক্রান্ত মারাত্মক সব রোগ।
৩. কিডনি সমস্যা…
কিছু কিছু মোমবাতিতে আবার প্যারাফিনল নামে একটি রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা যেটি ধোঁয়ার মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়লে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি ্করে। কিছু ক্ষেত্রে তা কিডনির টিউমার হওয়ার আশঙ্কাও বাড়িয়ে তোলে।
৪. অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ায় …
মোমবাতি থেকে সুগন্ধ বেরোবার জন্য এক ধরণের আর্টিফিসিয়েল এসেন্স ব্যবহার করা হয় ,যারফলে শরীরে অ্যালার্জি সৃষ্টি হয় এবং ফুসফুসের শিরা-উপশিরাগুলো অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠে। যার ফলস্বরূপ, মানবদেহের ‘রেসপিরেটরি ট্রাক’-এর মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাসে যথেস্ট অসুবিধে হয়। প্রসঙ্গত, অনেকের ক্ষেত্রে পারফিউম ব্যবহার করলেও এই সমস্যা সৃষ্টি হতে দেখা যায় ।
৫. মাথা ব্যাথার প্রকোপ…
মোমবাতিতে মুলত, বেঞ্জল ও টলুয়েন থাকে ,যা আগুনের সংস্পর্শে এলে ধোঁয়া সৃষ্টি করে, যা সরাসরি নাকের মাধ্যমে মস্তিস্কে গিয়ে পৌঁছয় এবং মাথা যন্ত্রণা শুরু করায় ।তাই ,যতটা সম্ভব সুগন্ধি মোমবাতি কম ব্যবহার করা উচিত।