Home আপডেট আজ ঐশ্বর্যগুণে সম্পদ সৌভাগ্য দেবী ” কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো “……

আজ ঐশ্বর্যগুণে সম্পদ সৌভাগ্য দেবী ” কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো “……

আজ ঐশ্বর্যগুণে সম্পদ সৌভাগ্য দেবী ” কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো “……

আদ্যাশক্তি মহামায়া কৈলাসে অর্থাৎ আপন পতিগৃহে যাত্রা করেছেন। বৈকুণ্ঠ ছেড়ে স্বামীকে ছেড়ে শারদ পূর্ণিমারাতে ভুবনমোহিনী চাঁদের আলোকে মালক্ষ্মী আসছেন ধরাধামে। আমরা বাঙালীরা বারোমাসে তেরো পার্বন বলে একটি প্রবাদবাক্যে নিজেদের বেঁধে ফেলি। কিন্তু কথাটি যে নেহাত বাহুল্য নয় এটা তো বলাই যায়। আর সেই উপলক্ষেই আজ সৌভাগ্য সৌন্দর্যের আধ্যাত্মদেবী মালক্ষ্মী পূজা। তিনি বিষ্ণুর পত্নী, তবে বিষ্ণু যখন রাম ও কৃষ্ণ রূপে অবতার গ্রহণ করেন তখন তিনি সীতা ও রাধারূপে তাঁর অর্ধাঙ্গিনী হন। এমন রুক্মিণী ও সত্যভামাও লক্ষ্মীরূপে পূজিত হন।
তাই মন্ত্রে আজ লক্ষ্মী আহ্বানে-

Time and fixture of Laxmi Puja 2019 dgtl - Anandabazar

ওঁ পাশাক্ষমালিকাম্ভোজ-সৃণিভির্ষাম্য-সৌম্যয়োঃ।

পদ্মাসনাস্থাং ধ্যায়েচ্চ শ্রিয়ং ত্রৈলোক্যমাতরম্।।

এবার মনে হতেই পারে যে লক্ষ্মী কে? আর কেনই বা তাঁর আরাধনা করবো?? তবে পুরাণ মত মেনে কিছু বলা যাক! লক্ষ্মী হলেন প্রসূতির গর্ভে উৎপন্ন দক্ষের চতুর্ব্বিংশতি কন্যার অন্যতমা এবং ধর্ম্মের এয়োদশ পত্নীর একতমা। লক্ষ্মীর গর্ভে দর্প জন্মগ্রহণ করেন। আবার একথাও বলা হয় যে ভগবান নারায়ণ ধর্ম্ম, ব্রাহ্মণ্য ও লোকানুরাগের একমাত্র আধার। এই জন্যই তো মা লক্ষ্মী অভিন্ন দেহে নারায়ণের দেহেই অবস্থান করেন। তাই তিনি অর্থ, যশ ও সম্পদের আধার স্বরূপা। তবে সমুদ্রমন্থনে পদ্মাসনা, পদ্মহস্তা লক্ষ্মীদেবী আবির্ভূত হন। আর তারপরেই মহর্ষিগণ তাঁর স্তব করেন- এ কিংবদন্তি মত সর্বত্র প্রচলিত। আচ্ছা, পৌরাণিক ঘটনা তো অনেকটাই শুনলাম, আর দেবীর ঐশ্বর্য রূপটাও জানলাম, কিন্তু এই “কোজাগরী” শব্দের অর্থ কি “নিশীথে বরদা লক্ষ্মী কোজাগর্তিভাষিণী”- অর্থ, নিশিথে লক্ষ্মীদেবী কে জেগে আছো? ঠিক তাই, প্রচলিত বিশ্বাস বলে আজ মা বিষ্ণুলোক হতে পৃথিবীতে নেমে আসেন আর দ্বারে দ্বারে প্রশ্ন করেন, যার কাছে সাড়া পান তার গৃহেই অবস্থান করেন। তাইতো আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথি কোজাগরী পূর্ণিমা এবং এই তিথির লক্ষ্মীপূজা হিসাবে প্রচলিত। জানেন কি এই উৎসব কৌমুদী উৎসব হিসাবে খ্যাত। বকা হয় ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এই দিন গোপীদের সাথে কেলী করতেন। আচ্ছা এবার আপনাদের মনে হচ্ছে নিশ্চয় যে মা কে চিরন্তন বাঁধবো কি করে? “এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে, আমার এ ঘরে থাকো আলো করে।” এই প্রার্থনায় মাকে আহ্বান করে অন্নপূর্ণা আলতারাঙা পায়ে এঁকে ফুল, ফল, মিষ্টি নৈবিদ্যে করোজড়ে পুষ্পাঞ্জলি অর্ঘ দানে মায়ের উপাচার সম্পূর্ণ করি আমরা। পূজার মন্ত্রটা একবার জেনেনি-

Things one should buy before Laxmi Puja dgtl - Anandabazar
“নমামি সর্বভূতানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে”
যা গতিস্ত্বৎপ্রপন্নানাং সা মে ভূয়াৎ ত্বদর্চনাৎ | – কিন্তু পূজো করবো অথচ তিথি জানবো না তাতো হয়না, তাই মনে রাখতে হবে প্রদোষ থেকে নিশীথ অবধি তিথি থাকলেও এই পূজোটা প্রদোষকালেই যথার্থ। আর আপনারা জানেন কি বাঙলার বাইরে এই পূজা কখন হয়? গৌণ চান্দ্র কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে অর্থাৎ দ্বীপান্দিতা অমাবস্যা রাত্রে এই পূজা সম্পূর্ণ হয়। এটাও প্রচলিত আছে যে লক্ষ্মী পূজা করার পর বালক, বৃদ্ধ ও আতুরদের আহার করিয়ে পরে ব্রাহ্মণ ও বন্ধু-বান্ধবদের নারকেলের জল ও চিড়ে আহার করিয়ে তবেই গৃহকর্ত্রীকে জলপান করতে হয়। আচ্ছা যখন এতটাই জানলাম, তখন মায়ের প্রসাদি থালায় কি কি থাকে একটু দেখেনি, পাঁচ-সাত রকমের গোটা ফল, নারকেল, তিলের নাড়ু, মুরখির নাড়ু, চিঁড়ের নাড়ু, দই, পাঁচ রকম মিষ্টি, বিবিধ রঙের মটকা, সাদা রঙের কদমা, তিলপাতালি দেওয়া হয়।
আর থালিতে কি থাকে একটু জেনে নি। আমরা পূজা সবাই করি কিন্তু প্রসাদের থালির দিকে নজর কিন্তু সবার। আসুন এই পূজোয় সেই উপাচারে পাতে কি থাকে দেখে নি,

Special Bhog Preparation For Bengali Laskhmi Puja | Festival Day Routine In My Life - YouTube

ভোগের খিচুড়ি, সোনালী রাঙা বেগুনী, কাঁচকলা চিপস, নরম নরম আলুভাজা, লাবড়ার তরকারী, ঢাকাই পরোটা, ছোলার ডাল। আহা এই না হলে জমবে কি করে।
আবার নিরামিষ আরো এক থালি আছে যা, বর্ধিষ্ণু আভিজাত্য ঘরে পাবো আমরা। আসুন,
ফ্রাইরাইস, পনীর পাসিন্দা, চালের পায়ের, ফ্রুটস চাটনী।

কিন্তু শুধুই কি লোভনীয় থালি, না তার সাথে থাকবে, ধান, একছড়া কলা, সিঁদুর, মায়ের জন্য।

লক্ষ্মী পূজার বিধি জেনে নিন

প্রচলিত মত বলে, জগৎ শেঠ মাকে পরীক্ষা করেন। আর পরে অবশ্য সে রাজা হয়। তবে সেই দিল্লীর কথা।
কি মনে হচ্ছে তবে?
এমন জিভে জল আনা প্রসাদী ভোগের ভাগীদার হতে চান তো? আর মায়ের ঐশীগুণে সম্বৃদ্ধি পেতে পারেন এই পূজোয়।
তবে এ পূজা জেলা ভিত্তিক।
আঞ্চলিকতা ভেদে লক্ষ্মী সরায় তিন, পাঁচ, সাত পুতুল আঁকা হয়। এতে থাকে লক্ষ্মী, জয়া বিজয়া সহ লক্ষ্মী, রাধাকৃষ্ণ, সপরিবার দুর্গা ইত্যাদি। । লক্ষ্মী সরাও হয় নানা রকম, যেমন ঢাকাই সরা, ফরিদপুরি, সুরেশ্বরী এবং শান্তিপুরী ।সে যাই হোক মা ” ভিন্ন হন না, তাই মা সবার।
আসুন সবটুকু জেনে তো নিলাম,এবার উপাচারে মাতৃবন্দনায় নিজেকে সঁপে দিন আর মনে বলে উঠুন,
লক্ষ্মীঃ শ্রীঃ কমলা বিদ্যা মাতা বিষ্ণুপ্রিয়া সতী ।
পদ্মালয়া পদ্মহস্তা পদ্মাক্ষী পদ্মসুন্দরী ।।
ভূতানামীশ্বরী নিত্যা মতা সত্যাগতা শুভা ।
বিষ্ণুপত্নী মহাদেবী ক্ষীরোদতনয়া ক্ষমা ।।
অনন্তলোকলাভা চ ভূলীলা চ সুখপ্রদা ।
রুক্মিণী চ তথা সীতা মা বৈ বেদবতী শুভা ।।
এতানি পুন্যনামানি প্রাতরুথায় যঃ পঠেৎ ।
মহাশ্রিয়নবাপ্নোতি ধনধান্যকল্মষম্ ।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here