[ad_1]
গত ২৭ অক্টোবর ইডি গ্রেফতার করে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। রেশন দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হন তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতা। বালুর গ্রেফতারির পর প্রাথমিক ভাবে তাঁর পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। তবে গতকাল রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে যেন ‘বদল’ হল মমতার সুর। গতকাল বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে রেশন দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমি এক পয়সাও নিই না, তাও আমি চোর?’ রেশন দুর্নীতির বিষয়টিকে ‘ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে আখ্যা দেন মমতা। এখানেই অনেকের মনে প্রশ্ন উঠেছে। তাহলে কি ধীরে ধীরে বালুর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছে তৃণমূল? (আরও পড়ুন: এবার রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে উদ্ধার টাকার পাহাড়, নোটের চোরাবালিতে ফাঁসবেন বালু?)
এর আগে উত্তর ২৪ পরগনায় বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানের পোস্টারে বালুর ছবি না থাকা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। মাঝে বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘ব্যক্তি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কী করেছেন, তার জন্য দলের ভাবমূর্তি কেন নষ্ট হবে?’ আর গতকাল মমতা বলেন, ‘একটা ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে…. আর সব চেয়ে বড় চোর যারা তারা মুখে গোবর লেপে বসে আছে। আর আজ পুলিশের মুখে আটা ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে।’ এরপর বিগত বাম সরকারকে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘৩৪ বছর চাষিদের থেকে চাল কেনা হত না। এটা পরিষ্কার করতে গিয়ে আমার ১০ বছর লেগেছে। ১ কোটি রেশন কার্ড আমরা বাদ দিয়েছি। ওই ১ কোটি রেশন কার্ডে বাম জমানায় চাল তোলা হত। ওই রেশন কার্ড ব্যবহার করে ভুয়ো ভোট দেওয়া হত। এই ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বাদ দিতে আমার ৭ থেকে ৮ বছর সময় লেগেছে। আমরা রেশন কার্ড সব ডিজিটাইড করে দিয়েছি।’
এর আগে নবান্নে বালুর গ্রেফতারির প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, ‘সবাইকে গ্রেফতার করে কি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ভেস্তে দেবে ভাবছে? সব মন্ত্রীকে কিছু না কিছু বলে গ্রেফতার করবে? কিছু প্রমাণই হল না, আপনারা চোর বানিয়ে দিলেন! একবারও ভাবছেন, তাঁর পরিবার–পরিজনের কী অবস্থা? যাঁরা এসব অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের নিজেদের কত বেনামি সম্পত্তি আছে, সে কি আমরা জানি না।’ এর আগে সাংবাদিকদের জ্যোতিপ্রিয় বলেছিলেন, ‘আমি চক্রান্তের শিকার। বিজেপি আমায় ফাঁসিয়েছে। মমতাদি-অভিষেক সব জানে। আমি দলের সঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব।’ এর আগেও গ্রেফতারির দিন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারী চক্রান্তে জড়িত।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। ভারতীয় জনতা পার্টি ভালো কাজ করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার আমি।’ তবে গতকালকে মমতার ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’ মন্তব্যের জেরে অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে। এর মধ্যে অনেকেই তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন।