ওয়েব ডেস্কঃ দ্রোণগিরি ” নাম করলেই পুরাণের পাতা কথা বলে। রামায়ণের হনুমান, পবনপুত্র সেখানে বহু বছর ব্রাত্য। উত্তরাখণ্ডের আলমোড়া বললেই সাধু তীর্থ মনে পড়ে যায়। মনে পড়ে যায় আলমোড়া থেকে বিবেকানন্দের পত্র। মিস বুলের কথা, আর নিবেদিতার গুরুশিক্ষার পত্রাবলী। সব মিলিয়ে স্থানটি আধ্যাত্মের ধারাপাত বয়ে নিয়ে চলেছে। কিন্তু আশ্চর্য রামায়ণের খণ্ড কথা বললেই মহাবীরের লাল রঙ ও ব্রাত্য আজ। স্বভবতই প্রশ্ন আসে কেন? আজ মঙ্গলবার তাই মহাবীর পূজার সাথে মাহ্যাত্ম আর পৌরাণিকতা দেখে নিতে মন চাইছে – আসুন তবে সেই রহস্যের বিশ্বাসী জনগোষ্ঠীর প্রথা সর্বস্বতায় সামিল হওয়া যাক।
গ্রামের নাম দ্রোণগিরি, বহু হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বাস। গ্রামের বহু প্রাচীন ভুটিয়াদের বিশ্বাস এখানেই নাকি ছিল দ্রোণপাহাড়। সেখানেই ছিল বিশল্যকরণী লতা। এবার নিশ্চয় মনে পড়বে যে এই সেই পাতা যা হনুমান জীর খুঁজেছিলেন – কারণ? বানররাজ সুগ্রীবের বৈদ্য সুষেণ বলেছিলেন যে, ইন্দ্রজিৎ যে শরে লক্ষ্মণ কে আঘাত করেছে, তা থেকে একমাত্র বাঁচার উপায় হলো এই লতা। কিন্তু হনুমান ভক্ত তাই বেরিয়েতো পড়লেন, চেনেন না তো কোথায় সে পাহাড়? এক পৌঢ়া নাকি তাঁকে সেই পাহাড় চিনিয়েছিলেন, আর চিনিয়েছিলেন সেই ভরা ঔষধের নির্দিষ্ট স্থান। কিন্তু পাহাড় পেলেও মহাবীর তো সেই লতা চেনেন না! তবে কি করে বার করবেন তিনি। মহা সমুদ্রে যেমন তল খোঁজা যায় না, মহাবীর ও পেলেন না, সেই নির্দিষ্ট লতার খোঁজ। কিন্তু গুরুর আদেশ যেচ,তাই ব্রহ্মজ্ঞানী গোটা পাহাড় তুলে চললেন স্বর্ণলঙ্কায়। রামানুজ সুস্থ, খুশি সকলে, এবার পাহাড় ফেরানোর পালা। কিন্তু যেখান থেকে বিশল্যকরণী খোঁজ করলেন আর না পেয়ে দ্রোণগিরি নিয়ে গেছিলেন তাকে আর স্ব স্থানে ফেরালেন না। বসিয়ে রেখে এলেন ওড়িশার কোন এক স্থানে।
এবার বাধ সাধলেন অধিবাসীরা। কারণ এতো সেই চুরি হলো যেমন করে বেদের পরিচয় ভারত থেকে বিদেশ পাড়ি দিয়ে নানা ঔষধ তৈরি হলো। আর ভারতকোষ একাকী বয়ে গেলো নীরব ভাণ্ডারে। তাই সেখানের অধিবাসীরা হনুমান জীর পূজা করে না। এমনকি দ্রোণগিরিতে বছরে একদিন পূজা হয় তা ঐ দ্রোণগিরির উদ্দেশ্যে। সেদিন পুরুষেরা মহিলাদের হাতে খাবার খান না। কারণ হনুমানজীকে এক মহিলাই পথ দেখিয়েছিলেন। এইভাবে সেখানে হনুমান জী এবং লাল রঙ আজও ব্রাত্য।!