সর্বমঙ্গলমঙ্গল্যে শিবে সর্বাথসাধিকে |
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়ণি নমোস্তু তে ||
আজ মহা অষ্টমী ।উৎসবের আলোকে আলোকিত হোক আমাদের আনন্দ উৎসব। আপনাদের জানাই শুভ মহা অষ্টমীর প্রীতি শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন । ভোরের শিউলি ফুলকে নিয়ে মায়ের পায়ে পুস্পাঞ্জলি দেওয়ার দিন আজ । অষ্টমী পূজাতে দিনের পূজায় কল্পারম্ভ, মহাস্নান শেষে অষ্টমী পূজা হয়, এই দিনে ‘কুমারী পূজা’ হয় যেখানে বালিকাকে দেবী দুর্গারূপে আরাধনা করা হয়, মহাষ্টমীতে ভক্তরা দেবীর চরণে ফুল, বেলপাতার অঞ্জলি দান করে। মহাষ্টমীর সন্ধ্যায় ১০৮টি প্রদীপ জ্বালিয়ে সন্ধি পূজা করা হয় । মহিষাসুর বধযুদ্ধে সন্ধির এ ক্ষণেই দেবি দুর্গা চামুণ্ডা বা কালীমূর্তির রূপ ধারণ করেছিলেন। তবে অষ্টমীর অঞ্জলি আর অষ্টমীর ভোগ দুই –এর খুব প্রাধান্য বাঙালীর কাছে। এইদিন ভোগের খিচু়ড়ি না খেলে কি আর মন ভরে? ভোগের যে কোনও খাবারের স্বাদই আলাদা। খিচুড়ি হোক বা পাচমিশালি সব্জি , ভোগের যে কোনও পদ মানেই সুস্বাদু। উৎসব-অনুষ্ঠানে বাঙালীদের ঘরে ঘরে সব সুস্বাদু ও মজাদার খাবারের আয়োজন। আজ আপনাদের জন্য রইল ভোগের রেসিপি ।
ভুনা খিচুড়ি
উপকরণ
- গোবিন্দ ভোগ চাল ৪ কাপ
- ভাজা মুগ ডাল ২ কাপ
- আদা কুচি ১ টেবিল চামচ
- কাঁচা লঙ্কা
- তেজপাতা ২টি
- দারচিনি
- ছোট এলাচ
- ছোট এলাচ ৪টি
- লবঙ্গ ৪টি
- নুন
- চিনি আধা চা চামচ
- হলুদ আধা চা চামচ
- সর্ষের তেল
- ঘি
- কাজু
- কিসমিস
প্রণালী
চাল, ডাল ধুয়ে কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে দিন।
এবার তেল, ঘি, একসঙ্গে গরম করে গোটা গরম মশলা , তেজপাতা ও গোটা শুকনোলঙ্কা ফোড়ন দিন ।
চাল-ডাল দিয়ে ৮ থেকে ১০ মিনিট ভেজে নিন ।
নুন , হলুদ দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে গরম জল দিয়ে ঢেকে দিন।
ফুটে উঠলে গ্যাসের আঁচ কমিয়ে দিন ।
খিচুড়ির জল কমে গেলে চিনি, ঘি , কাজু , কিসমিস , কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ২০ / ২৫ মিনিট দমে রান্না করুন ।
তৈরি সুস্বাদু ভুনা খিচুড়ি ।
গরম গরম বেগুন ভাজার সাথে পরিবেশন করুন ভুনা খিচুড়ি ।
স্পেশাল বেগুনি
উপকরণ
- বেগু ৮ পিস (পাতলা পাতলা গোল করে কাটা)
- নুন— স্বাদমতো
- কালো জিরে— ১/২ চা-চামচ
- পোস্ত— ১ টেবিলচামচ
- লঙ্কাগুঁড়ো— ১/২ চা-চামচ
- বেকিং পাউডার— ১/২ চা-চামচ
- বেসন— ৬ টেবিলচামচ
- সুজি— ১/২ কাপ
- সাদা তেল
প্রণালী
বেগুন ধুয়ে নুন ও হলুদ মেখে রাখুন।
তেল বাদে বাকি সব উপকরণ দিয়ে একটা ব্যাটার তৈরি করুন।
ব্যাটারে ১ চা-চামচ সাদা তেল দেবেন , ফ্রিজের ঠান্ডা জলে বেসন – সুজি ও ১ চিমটি বেকিং পাউডার দিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন।
এবার একটি প্যানে তেল গরম করুন।
তেল গরম হলে একটি করে নুন- হলুদ মাখানো বেগুন গোলায় ডুবিয়ে ছাঁকা তেলে সোনালি করে ভেজে তুলুন।
পরিবেশন করুন গরম গরম ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে।
পাঁচ মিশালি সব্জি
উপকরণ
- পটল— ৬টি
- আলু ৪ / ৫ টি
- কুমড়ো— ১০০ গ্রাম
- বেগুন— ১টি (মাঝারি)
- বরবটি— ১০০ গ্রাম
- ঝিঙে— ৩টি
- ফুলকপি— ১টি
- বড়ি— ১০-১২টি
- নারকেল কোরা— ১ কাপ
- পাঁচফোড়ন— ১ চা-চামচ
- হলুদগুঁড়ো— ১ চা-চামচ
- লঙ্কাগুঁড়ো— ১ চা-চামচ
- আদাবাটা— ২ টেবিলচামচ
- জিরে গুঁড়ো— ২ চা-চামচ
- ঘি— ৪ টেবিলচামচ
- নুন— স্বাদমতো
- চিনি— ২ চা-চামচ
- কাঁচালঙ্কা— ৬টি
- তেজপাতা— ২টি
- গরমমশলা গুঁড়ো— ১/২ চা-চামচ
- সর্ষের তেল
- হিং— ১/২ চা-চামচ
- শুকনো লঙ্কা— ২টি
প্রণালী
সব সব্জি কেটে আলাদা আলাদা করে ধুয়ে নিন।
কড়াইতে তেল গরম করুন।
তেল গরম হলে তাতে বড়ি, বেগুন , কুমড়ো ও ফুলকপি ভেজে তুলে রাখুন।
এবার বাকি তেলে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা, হিং, শুকনো লঙ্কা ও তেজপাতা ফোড়ন দিন।
ফোড়ন দিয়ে তেলের মধ্যে আলু, বরবটি, ঝিঙে ও পটল দিয়ে ভাজতে থাকুন।
সব্জি ভাজা হলে তাতে নুন, চিনি, নারকেল কোরা, হলুদগুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, আদাবাটা ও জিরে গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে কষতে থাকুন।
সব্জি ও মশলা কষা হলে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন।
যখন দেখবেন, জল প্রায় শুকিয়ে এসেছে ও সবজিও প্রায় সেদ্ধ হয়ে গেছে, তখন ভেজে রাখা বড়ি, বেগুন, ফুলকপি ও কুমড়ো দিয়ে আবার ঢাকা দিয়ে রান্না করুন।
আরও ৫ থেকে ১০ মিনিট রান্না করে ঘি, গরমমশলা ও চেরা কাঁচালঙ্কা দিন ।
বেশ ভাজা ভাজা করুন।
যখন সব্জি থেকে তেল ছাড়বে তখন বুঝবেন সব্জি তৈরি।
গ্যাস বন্ধ করে সার্ভিং ডিশ-এ ঢেলে দিন।
ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে পরিবেশন করুন পাঁচ মিশালি সব্জি ।
আমসত্বের চাটনি
উপকরণ
- আমসত্ব
- চিনি
- শুকনো খোলায় মৌরি ভাজা
- নুন
- কাজু
- কিসমিস
- খেজুর
- নারকেল
প্রণালী
একটি কাচের পাত্রে ২ কাপ জল নিন।
আমসত্ব ছোট ছোট টুকরো করে জলে ভিজিয়ে দিন।
৪/৫ চামচ চিনি দিন।
১৫/ ২০ মিনিট পর মিক্সিতে জল সহ আমসত্ব পিষে নিন।
এবার কাজু ,কিসমিস,কাটা খেজুর, ছোট টুকরো করা নারকেল ও ১ চামচ নুন মিশিয়ে দিন।
এবার ভাজা মৌরি উপর দিয়ে ছড়িয়ে মিশিয়ে নিন ।
তৈরী সুস্বাদু আমসত্বের চাটনি।
কমলা ভোগ
উপকরণ
- রসগোল্লার জন্য ছানা ১ কাপ
- অরেঞ্জ ফুড কালার আধা চা চামচ
- কমলার রস আধা কাপ
- চিনি ১ কাপ
প্রণালী
রসগোল্লার ছানা তৈরির জন্য ১ লিটার দুধ নিন।
দুধ ফুটে উঠলেএর মাধ্যে ৩/৪ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে দিন।
গ্যাস বন্ধ করে ঢেকে রাখুন।
১০ মিনিট পর পাতলা কাপড় দিয়ে ছানা ছেঁকে নিন ।
ভালো করে ধুয়ে চিপে নিন ও ঝুলিয়ে রাখুন মিনিট পাঁচেক।
জল ঝরে গেলেই ছানা তৈরি।
গরম থাকতেই মিষ্টি তৈরি করবেন।
ছানায় ফুড কালার মিশিয়ে খুব ভালো করে মখে নিন যেন ছানা তেলতেলে হয়ে যায়।
চিনির রস বানিয়ে নিন।
চিনির রস যেন বেশি ঘন না হয়ে যায়।
পাতলা রস হবে।
ছানার বল বানিয়ে নিন এবং চিনির রসে দিয়ে অল্প আঁচে ২০-২৫ মিনিট রাখুন।
এবার গ্যাস বন্ধ করে কমলার রস মিষ্টির হাঁড়িতে ঢেলে দিয়ে মিষ্টি সহ ২ ঘন্টা ঢেকে রেখে দিন।
পরিবেশন করার জন্য কমলা ভোগ তৈরি ।