Homeসাবধান !! এনারা জন্মেছিলেন...

সাবধান !! এনারা জন্মেছিলেন এইসমাজেই ~ ভারতের কুখ্যাত কিছু সিরিয়াল কিলার…

সিরিয়াল কিলিং বা সিরিয়াল কিলারদের নিয়ে আমাদের আগ্রহের শেষ নেই। তাদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে মনোবিজ্ঞানী থেকে শুরু করে অপরাধবিজ্ঞানীদেরও গবেষণার শেষ নেই। সিরিয়াল কিলার বা ধারাবাহিক খুনিদের নিয়ে যুগে যুগে বহু সিনেমা, গল্প, কাহিনীর জন্ম হয়েছে। রহস্যময় সেই সিরিয়াল কিলাররা হয়ত আমাদের আশেপাশেই লুকিয়ে আছে… ঠিক যেমন সুরিন্দর কোলী-পান্ধের ।

আসুন ইতিহাস এর পাতা উল্টে দেখে নেওয়া যাক, দেশের বাছাই করা কিছু সিরিয়াল কিলারদের ঘটনা এবং পন্থা ~

ঠগ বেহরাম

যেই পথ দিয়ে উনি যেতেন সেই পথে মানুষ কি মানুষের আর কোন চিহ্নই অবশিষ্ট থাকত না, যেই এলাকায় যেতেন সেই সেই এলাকা ছেড়ে লোকেরা ওনার ভয়ে পালিয়ে বেড়াত। জানেন কেন !! মানবরূপে উনি ছিলেন এক হিংস্র জানোয়ার। ভারতের ইতিহাসে সর্বকালের নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলারের উপাধি দেওয়া হয় ঠগ বেহরামকে। উনি হত্যা করে থাকেন ৯৩১ জন মানুষকে
১৭৬৫ থেকে ১৮৪০ শতাব্দী ভারতে তখন ব্রিটিশদের রাজত্ব। ব্রিটিশ পুলিশ তখন দেশে আইন ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টায়। অন্যদিকে দিল্লী থেকে গোয়ালিয়র ও জব্বলপুর রাস্তায় চলতে থাকে এই ঠগ বেহরামের ছিনতাই, লুটপাট, খুনের সন্ত্রাস। এই রাস্তা দিয়ে কোন ব্যবসায়ী, জমিদার, কোন তীর্থযাত্রী, কোন সাধুর দল, সাধারণ মানুষজন, বা কোন বধূর পালকি কাউকেই রেহাই দেওয়া হত না, টাকাপয়সা লুটপাটের পর প্রত্যেকের হত্যা করা হত। আর তাঁর হাতিয়ার হত একটি ‘রুমাল’। হ্যাঁ একটি রুমাল দিয়েই গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হত সকলকে। একের পর এক পুরো দলকেই সবার চোখের সামনে মারা হত। এইভাবে এক নয়, দুই নয়, দুশো নয়, তিনশোও নয় পুরো নয়শো একত্রিশ লোকের হত্যা করা হয়। করাচী, লাহোর, মাড়বার, কাঠিয়াবাড়, মুর্শিদাবাদ থেকে বড় পরিমাণে ব্যবসায়ীর দল রহস্যময় পরিস্থিতিতে পুরো দল সহ নিখোঁজ হতে থাকে। এমনকি ছুটিতে ঘরমুখো  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সেনাবাহিনীর দলও নিখোঁজ হয়ে যায়। ব্রিটিশ পুলিশবাহিনী এর কোন সূত্রই খুজে পাচ্ছিলেন না। প্রায় দুশো জনের দল ছিল এই ঠগ বেহরামের, যার প্রকৃত নাম ছিল বেহরাম জিমেদার। এরা খুবই ধূর্ত, শক্তিশালী ও হিংস্র ছিল। নিজেদের মধ্যে এক ভিন্ন ভাষায় কথা বলতেন, ঠগেদের এই বিশেষ ভাষাকে “রামোসি” বলা হত।
১৮২৮ সালে ব্রিটিশ কোম্পানী  উইলিয়াম স্লিমেন নামে এক অধিকর্তাকে ইংল্যান্ড থেকে ভারতে পাঠান হয় নিখোঁজ ব্যক্তিদের রহস্যভেদ করতে। কিছুদেনের মধ্যেই উনি জানতে পারেন ঠগ বেহরামের ভয়ানক দলের ব্যাপারে। উইলিয়াম সাহেব দিল্লী থেকে গোয়ালিয়র এবং জব্বলপুর অবধি যাতায়তের রাস্তার সব বন জঙ্গলের সাফাই করেন, যাতে কোন ঠগি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে না পারে। বেশকিছু গুপ্তচরও লাগানো হয়, অনেকের ধারণা ভারতে ইন্টেলিজেন্স ব্যুয়েরর(IB) সুচনা সেই সময় থেকেই হয়। গুপ্তচরের সাহায্যে উইলিয়াম প্রথমে ঠগিদের ভাষা বোঝার প্রচেষ্টা করেন। প্রায় দশ বছর বাদে অনেক পরিশ্রমে  ১৮৩৯সালে ৭৫ বছর বয়সের ঠগ বেহরামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। ধীরে ধীরে বেহরামের সব সহচরকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তার সাথেই হদিস পাওয়া যায় প্রায় পাঁচ হাজারের মত নরকঙ্কাল বা মৃতদেহের। ঠগ বেহরাম নিজে স্বীকার করেন ৯৩১জন লোকের হত্যার ও ৯৫৬ জনের হত্যার সাক্ষী হতে। ঠগ বেহরাম সহ তাঁর দলের সব কুখ্যাত ঠগিদের জব্বলপুরের এক বৃক্ষে ফাঁসি দেওয়া হয়, আজও নাকি সেই বৃক্ষটি জব্বলপুরে রয়েছে। আর ঠগির দলের নতুন সদস্যদের বন্দি গৃহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জব্বলপুরে প্রতি সপ্তাহে হাট বসে, এই হাটে বসা দোকানদাররা  ঠগিদেরই বংশধর যাদের উইলিয়াম স্লিমেন জীবনের মূলধারায় ফিরে আসতে সাহায্য করেন।

মল্লিকা বা সায়নাইড মল্লিকা

মল্লিকা ভারতের প্রথম মহিলা সিরিয়াল কিলার

ব্যঙ্গালুরুর মল্লিকা যার আসল নাম কে ডি কেম্পাম্মা ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে মোট ছয়জন মহিলাকে খুন করেন। প্রতিটি খুন করা হয় সায়নাইড বিষ দিয়ে, তাই তাকে ‘সায়ানাইড মল্লিকা’ বলা হয়। পরিচারিকা হিসেবে কাজ করার সময় ছোট ছোট চুরি ডাকাতি থেকে অপরাধ জগতে আসেন মল্লিকা, প্রথম খুন করেন ১৯৯৯ সালে। নিজে ভক্ত সেজে ব্যাঙ্গালুরুর  মন্দিরে যেতেন আর নজর রাখতেন অন্যান্য গৃহিণীদের উপর যারা পূজার্চনার জন্য মন্দিরে যেতেন। মল্লিকা ধীরে ধীরে সেই সব মহিলাদের মনের কষ্ট বোঝার ছলে তাদের বিশ্বাস অর্জন করে ফেলত এবং তাদের দুঃখ কষ্ট দূর করার জন্য মন্দিরে বিশেষ যজ্ঞ বা পূজার দেওয়ার পরামর্শ দিতেন।  শহর থেকে কিছুটা দূরে সেইসব পূজার্চনার আয়োজন করা হত। আর সেই পূজার প্রসাদ বা জলের মধ্যে সায়নাইড দ্বারা মহিলাদের হত্যা করতেন। হত্যার পর এদের টাকাপয়সা, গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন। ১৯শে অক্টোবর ১৯৯৯ সালে মামাথা রাজন নামে মহিলার প্রথম খুন করেন। অন্য এক ৩০ বছর বয়স্কা মহিলা যিনি নিঃসন্তান ছিলেন, মল্লিকার ষষ্ঠ ও শেষ শিকার। ২০০৬ এ মল্লিকাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ২০১০ এ মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়, যা পরে ২০১২ এ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।

ডাঃ দেবেন্দ্র শর্মা

ডাক্তারদের আমরা জীবন দাতা বলে থাকি। কিন্তু এই যুগে একজন ডাক্তারও সিরিয়াল কিলার হতে পারেন।
ডাঃ দেবেন্দ্র শর্মা পেশায় একজন আয়ুর্বেদিক ডাক্তার কিন্তু প্রায় ৪০ টি খুন করেছেন। ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে উনি উত্তর প্রদেশ, দিল্লী, হরিয়ানা এবং রাজস্থান জুড়ে বেশ কয়েকজন ট্যাক্সি ড্রাইভারকে খুন করেন। ওনার নিশানা ছিল নিরীহ ট্যাক্সি ড্রাইভাররা। যাত্রী রূপে তিনি ট্যাক্সিতে বসতেন, কিছুদূর চলার পর যেকোনো অছিলায় ট্যাক্সি দাঁড় করিয়ে অন্য সাথীদের এনে ড্রাইভারের খুন করতেন। মূলতঃ লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করা হত। পরে সেই ট্যাক্সি চোর বাজারে বিক্রি করে দিতেন। ৯ই ফ্রেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে দেবেন্দ্র শর্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৩ই মার্চ, ২০০৭ এ আজীবন কারাদন্ডের শাস্তি দেওয়া হয়, তবে পরবর্তীতে শর্মাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

রেনুকা সিন্ধে ও সীমা গবিত

রেনুকা সিন্ধে ও সীমা গবিত ১৯০০ সাল থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে কুড়িটির ও বেশি শিশুর অপহরণ ও মোট দশটি শিশুর হত্যা করে…

মহারাষ্ট্রের রেনুকা সিন্ধে ও সীমা গবিত, দুইবোন ভারতের প্রথম মহিলা দোষী যাদের সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। মা অঞ্জনার সাথে রেনুকা ও সীমা দুইবোন প্রায় তেরোটি শিশুর অপহরণ ও দশটি শিশুর হত্যা করে। এরা শিশুদের অপহরণ করে তাদেরকে নিয়ে ভিড় বহুল এলাকায় যেত ও লোকেদের পকেট, ব্যাগ, চেইন ইত্যাদি ছিনতাই করত, যদি কোন কারনে ধরা পরে যায় তো বাচ্চা দেখিয়ে সহানুভূতি অর্জন করে সঙ্গীর পালানোর জন্য রাস্তা করে দিত। তাদের মা অঞ্জনা একবার সন্তোষ নামের একটি শিশুর অপহরণ করে, মেয়ে সীমা যখন পার্স ছিনতাইে ধরা পরে লোকেদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অঞ্জনা শিশুটির মাথা একটি বৈদ্যুতিক পিলারে খুব জোরে আঘাত করে, রক্তাক্ত শিশুটির এমন ভয়াবহ দৃশ্য যথেষ্ট ছিল সীমার গঠনা স্থল থেকে পালানোর। পরে এই সন্তোষ নামের শিশুটির মৃতদেহকে এক রিকশ স্ট্যান্ডে ফেলে দেওয়া হয়। এইভাবেই এরা শিশুদের অপহরণ করত ও কাজ শেষের পর এদের হত্যা করে ফেলত। পুনে, থানে, কল্যাণ, কোলাহপুর, নাসিক সবজায়গায় এরা বছরের পর বছর শিশু অপহরণ ও হত্যার ভয়াবহ ক্রিয়াকলাপ চালাতে থাকে। এতে জনসাধারণের মনে এত সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেয় যে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতেও মা বাবারা ভয় পেতেন। অবশেষে ১৯৯৬ সালে নাসিকে ক্রান্তি নামের এক নয় মাসের শিশুর অপহরণে এরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। মা অঞ্জনা সহ দুই মেয়ে রেনুকা ও সীমাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে , গ্রেপ্তারের দুই বছর বাদে ১৯৯৮ সালে মা অঞ্জনার  মৃত্যু হয় । ২৯শে জুন ২০০১ সালে শেশান কোর্ট রেনুকা ও সীমাকে তেরো জন শিশুর অপহরণ ও ছয় শিশুর হত্যার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ও মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত করেন। ৩১ শে আগস্ট ২০০৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট এদের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি অব্যাহত রাখেন। ১৪ই আগস্ট ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখারজ্জি সুপ্রিম কোর্টের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিকে অব্যাহত রেখে ফাঁসির আবেদনকে নাকচ করেন।

মোহন কুমার বা সায়নাইড মোহন

প্রফেসর মোহন কুমার কুঁড়ি জন মহিলার হত্যা করেন গর্ভ নিরোধক পিলের ছলে সায়নাইড পিল দ্বারা…
মোহন কুমার মাঙ্গালুরুর এক গ্রামের ‘শ্রিরাডি প্রাইমারী’ স্কুলে ইংলিশ, বিজ্ঞান ও গণিত এর শিক্ষক ছিলেন। উনি মহিলাদের সাথে বিশেষ করে যারা বিয়েতে পণ দিতে অক্ষম হতেন বা সঠিক পাত্রের খোঁজে থাকতেন তাদের সাথে ছলনা কৌশলে আলাপ পরিচয় বাড়াতেন ও বিয়ের প্রস্তাব দিতেন এবং এদের প্রত্যেকের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়তেন। যার পরে উনি মহিলাদের গর্ভ নিরোধক ঔষধের বাহানায় সায়নাইডের পিল দিয়ে হত্যা করতেন।
২০০৩ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে দক্ষিণ কর্ণাটকের পাঁচটি জেলার মধ্যে উনি মোট কুড়ি জন মহিলাকে এইভাবে সায়নাইড  দ্বারা হত্যা করেন। মহিলাদের প্রত্যেকের বয়স ছিল কুড়ি থেকে ত্রিশ বছর। আর এদের মৃত দেহ পাওয়া যেত বাসস্ট্যান্ডের বিশ্রামাগারে। মহিলারা প্রত্যেকের পরিধানে থাকত বিবাহের শাড়ি, কিন্তু গয়না বা অলঙ্কার কিছুই থাকত না। এইভাবে মোহন কুমার একের পর এক মহিলাদের হত্যা করতে থাকেন কিন্তু প্রায় ছয় বছর ধরে পুলিশের কাছে এই রহস্যময় খুনির চেহারার কোন হদিশ ছিল না। দশটি পুলিশ থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যু ও আত্মহত্যার কেস ফাইল হয়। ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রত্যেকের রক্তে সায়নাইড পাওয়া যায়, এটা এমনই একটা রসায়ন যা সহজে পাওয়া যায় না বা আত্মহত্যার কাজে সাধারনভাবে ব্যবহৃত হয় না, তা সত্ত্বেও অবশেষে এইসব খুনের সুত্র পাওয়া যায় মোহন কুমারের কুড়িতম শিকার বাইশ বছরের অনিতা বারিমার নিখোঁজ হওয়ার গঠনা থেকে। অনিতা বারিমারের ফোন রেকর্ড থেকে জানা যায় রোজ রাতে একটি নির্দিষ্ট নাম্বার থেকে ফোন আসত, আর সেই নাম্বারটি ছিল কাবেরি নামে এক মহিলার, পুলিশ খুবই বিস্মিত হয়ে পরে যখন জানতে পারে এই কাবেরি মহিলাটিও নিখোঁজ হয়েছিলেন এবং পরে এর মৃতদেহ পাওয়া যায়। একইভাবে কাবেরির ফোন রেকর্ড থেকে বেরিয়ে আসে অন্য আরেকটি ফোন নাম্বার, আর সেই নাম্বারটিও ছিল খুন হয়ে যাওয়া এক মহিলার। এইভাবে একের পর এক সমস্ত মহিলাদের কল রেকর্ড যাচাই এর পর দেখা যায় সবকটি নাম্বার ব্যাবহার করা ম্যাঙ্গালুরুর একটি গ্রাম ‘ডেরালাকাটে’ থেকে। ধরা পরেন মোহন কুমার। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে যা সামনে আসে তা পুলিশের কাছে ছিল কল্পনার বাইরে। মোহন কুমার জানান এইভাবে তিনি মোট বত্রিশ জন মহিলার হত্যা করেন। মহিলাদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে রাত্রি কাটাতেন, পরে এদেরকে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে গর্ভ নিরোধক ওষুধের ছলনায় সায়নাইড দিয়ে হত্যা করে এদের অলঙ্কার নিয়ে পালাতেন। ২২শে সেপ্টেম্বর ২০১৬ তে ম্যাঙ্গালুরুর কোর্টে মোহন কুমারকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আদালতে সকলের সামনে মোহন কুমারের বলেছিলেন, “প্রতি বার যখন কোন মহিলার মৃত্যু হত আমি খুবই দুঃখিত হতাম, কিন্তু সেটা শুধুমাত্র পনেরো কুড়ি দিন অবধি বজায় থাকত, অন্য নতুন সঙ্গীকে পাওয়া মাত্র আমি পূর্বের অতীত সব ভুলে যেতাম।।”

নীঠারি হত্যাকাণ্ড

২০০৬ সালে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা শহরে হওয়া নীঠারি হত্যাকাণ্ডে পুরো দেশ কেঁপে উঠেছিল।
নয়ডার হাউস নাম্বার ১০ এ মালিক মনিন্দর সিং পন্ধেরের সাথে থাকত তাঁর কর্মচারী বা কাজের লোক ৩৯ বছরের সুরিন্দর কোলী। সন্ধ্যার পর অন্ধকার নামা মাত্রই বাড়ীর গেইটে দাঁড়িয়ে সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়া মেয়েদের মুখ চাপা দিয়ে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে এদের সাথে যৌন নির্যাতনকরত, এরপর খুন করে ফেলত এদের প্রত্যেককে। শুধু তাই নয় নারকো টেস্টে কোলী তার কিছু পাশবিক অপরাধের কথা স্বীকার করে, খুন করার পর মৃত দেহকে বির্বস্ত্র করে সেই মৃত দেহের সাথে যৌন শোষণ করে থাকত সে। কখনো আবার মৃত দেহকে টুকরো করে সেই নর মাংস ভক্ষণ করত। ২০০৬ সালে কোলীর এই জঘন্য অপরাধ তখন সামনে আসে যখন রিম্পা হালদার ও পিঙ্কি সরকার নামে  বছর কুড়ির দুই যুবতীর নিখোঁজ হওয়ার তদন্ত নয়ডা পুলিশের থাতে আসে। ২৯শে ডিসেম্বর ২০০৬ এ পন্ধেরের বাংলোর পিছনে কিছু নর কঙ্কাল পাওয়া যায়। জায়গাটি খুঁড়ে রিম্পা ও পিঙ্কি সহ মোট পনেরোটি বাচ্চার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। বাংলোর মালিক পন্ধের ও কোলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলা সি বি আই কে দেওয়া হয়। ১০ই এপ্রিল ২০০৭ এ সি বি আই কোলী ও বাড়ীর মালিক পন্ধেরের বিরুদ্ধে  রিম্পা ও পিঙ্কি র ধর্ষণ ও হত্যার চার্জশীট দেয়। ১২ই ফ্রেব্রুয়ারি ২০০৮ এ নিম্ন আদালত কোলী ও পন্ধের কে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে। ১১ই সেপ্টেম্বর এলাহাবাদ হাইকোর্ট বাংলোর মালিক পন্ধেরকে ক্লিন চিট দিয়ে দেয় এবং ৭ই জানুয়ারি ২০১০ এ সুপ্রিম কোর্ট কোলীর মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি অব্যাহত রাখে।

গত ২৪শে জুলাই ২০১৭ গাজিয়াবাদের সি বি আই কোর্টের স্পেশাল জর্জ পবন কুমার তিবারি এই কেইস কে ‘rarest of rare’ আখ্যান দিয়ে মনিন্দর সিং পন্ধের ও সুরিন্দর কোল ীকে ফাঁসির শাস্তি দেন।

- A word from our sponsors -

spot_img

Most Popular

আরও খবর...

শিন্ডের শিবসেনা শিবিরে যোগ দিলেন গোবিন্দা, লড়বেন লোকসভা ভোটেও

ভোটের বাজাারে চমক। একনাথ শিণ্ডের হাত ধরে শিবসেনায় যোগ দিলেন...

- A word from our sponsors -

spot_img

সব খবর...

প্রাক্তন বিচারপতির সঙ্গে মেয়রের ফোনে কথোপকথন, দু’‌পক্ষের মধ্যে কী কথা হল?‌

কলকাতায় বেআইনি বাড়ির বিরুদ্ধে চলা সাংবাদিক বৈঠকের মাঝে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়কে ফোন করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দুপুর ২.২৫ মিনিটে ফোনটি আসে প্রাক্তন বিচারপতির কাছে। তখন লাইভ সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন অশোকবাবু। তার মধ্যেই কথা হয় দু’‌জনের। অশোকবাবু পরে জানান, তাঁর জীবনে এরকম ঘটনা আগে...

বাড়িতে বসে EDর ওপর হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিল শাহজাহান, আদালতে বলল সিবিআই

ইডির ওপর হামলার মামলায় তৃণমূলি মাফিয়া শেখ শাহজাহানকে ১২ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠাল বসিরহাট আদালত। এদিন সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষে শাহজাহানকে আর নিজেদের হেফাজতে চাননি তাদের আইনজীবী। তবে শাহজাহানের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে তারা। এদিন আদালতে সিবিআই জানায়, গত ৫ জানুয়ারি শেখ শাহজাহানের...

শিন্ডের শিবসেনা শিবিরে যোগ দিলেন গোবিন্দা, লড়বেন লোকসভা ভোটেও

ভোটের বাজাারে চমক। একনাথ শিণ্ডের হাত ধরে শিবসেনায় যোগ দিলেন অভিনেতা তথা প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ গোবিন্দা। সূত্রের খবর, তাঁকে প্রার্থীও করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, উত্তর পশ্চিম মুম্বই কেন্দ্র থেকে শিবসেনার টিকিটে লোকসভা ভোটে লড়বেন তিনি। ২০০৪ সালে কংগ্রেসের টিকিটে লোকসভা ভোটে লড়ে ৫০ হাজার রেকর্ড ব্যবধানে জিতেছিলেন...

রাজ্যে BJP ৩৬টা আসন পেলে ৬ মাসে রাজ্য সরকারকে বঙ্গোপসাগরে বিসর্জন দেব: শুভেন্দু

লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ৩৬টি আসন পেলে ৬ মাসের মধ্যে তৃণমূল সরকারকে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেবেন তিনি। বৃহস্পতিবার যাদবপুর কেন্দ্রের রানিকুঠিতে নির্বাচনী সভায় এমনই দাবি করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ২০২১ সালে তৃণমূল সরকারকে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে সিপিএম।আরও পড়ুন: ব্যক্তি...

‘‌আমার বাংলায় একসঙ্গে সবাই যেন ভাল থাকতে পারি’‌, ব্যান্ডেজ নিয়ে ইফতারে মমতা

তিনি বারবারই বলেছেন, বিবিধের মধ্যে ঐক্য অটুট রাখতে হবে। তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা। তাঁর সভা থেকে শোনা যায়, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। হ্যাঁ, তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি দুর্গাপুজোর উদ্বোধনও করেন, ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের নিয়ে রাস্তায় হাঁটেন, গুরুদ্বোয়ারায় গিয়ে পুজো...

কলকাতা মেট্রো এবার ছুটবে বিমানবন্দর পর্যন্ত, দুর্গাপুজোর আগে চালুর সম্ভাবনা

গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো এখন হাওড়া পৌঁছে গিয়েছে। তাতে যাত্রীদের মধ্যে একটা খুশির হাওয়া বইছে। কম সময়ে নিরাপদে পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে হাওড়া স্টেশনে। এবার কলকাতা বিমানবন্দর পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো পৌঁছে যাবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা চলতি বছরের দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে কাজ শেষ যাবে বলে সূত্রের...

বাংলায় নতুন আটটি মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন, চিকিৎসা জগতে বড় সুখবর

আরও আটটি মেডিক্যাল কলেজ পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। এই আটটি নতুন মেডিক্যাল কলেজের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই আটটিরই অনুমোদন মিলেছে বলে খবর। দেশজুড়ে নতুন মেডিকেল কলেজ চালুর জন্য আবেদন কেন্দ্রের কাছে জমা পড়েছিল। তার মধ্যে থেকে মোট ১১২টির ক্ষেত্রে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার মধ্যে...

Mamata calls Councillor: তোমাকে প্রার্থী করতে পারলাম না, বরাহনগরের কাউন্সিলরকে ফোন মমতার

বরানগর বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে জল্পনার মধ্যেই স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন তৃণমূলনেত্রী। বরাহনগর পুরসভার কাউন্সিলর রঞ্জন পালকে ফোন করে মমতা বলেন, তোমাকে প্রার্থী করতে পারলাম না। তবে ভালো প্রার্থী দিয়েছি।আরও পড়ুন: প্রচারে ব্যস্ত, ইডির ডাকে সাড়া দিয়ে দিল্লি যাচ্ছেন না...

নবীনবরণকে কেন্দ্র করে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সরগরম

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীনবরণ উৎসবের রাশ কার হাতে থাকবে?‌ এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ এই প্রশ্ন তুলে ধরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন পড়ুয়া। তাঁদের অভিযোগ, গত ২১ এবং ২২ মার্চ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। বরাবর...

PM Modi’s economic advisor on Kolkata: সিগারেট-মদেই ডুবে থাকে, বাঙালিদের তোপ মোদীর উপদেষ্টার, ‘অপমান’ মৃণাল সেনকে

জীবনে বড় কিছু করার কোনও ইচ্ছা নেই। মৃণাল সেনের সিনেমা পর্যন্তই দৌড় বাঙালিদের। এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তথা অর্থনীতিবিদ সঞ্জীব সান্যাল। সিদ্ধার্থ আহলুওয়ালির 'দ্য নিওন শো' পডকাস্টে কলকাতা ও বাঙালিদের ‘অধঃপতন' নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে...

দু’সপ্তাহ, ৩৫০ ঘণ্টা পার, শ্বেতপত্র কই? প্রশ্ন অভিষেকের, জবাব দিল বিজেপিও

আবাস যোজনা এবং একশ দিনের কাজ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন বিজেপিকে। কিন্তু তা নিয়ে গেরুয়া শিবির কোনও হেলদোল না দেখানোয় ফের সেই প্রসঙ্গ তুলে  বিজেপি তোপ দাগলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘প্রায় দু’সপ্তাহ ৩৫০ ঘণ্টা হয়ে গেল। বিজেপি এখনও আমার চ্যালেঞ্জ...

Rat inKMC: ইঁদুর মারা চলবে না, শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে তাড়ানোর ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুরসভা

কলকাতা পুরসভায় ইদুরের তাণ্ডব দীর্ঘদিনের। তার ওপর সম্প্রতি সাপের দেখা মিলেছে পুরসভার ট্রেজারি বিভাগে। যার ফলে পুরসভা কর্মীদের আতঙ্ক বেড়েছে। এমন অবস্থায় কামড়ের ভয়ে অনেকেই চেয়ারে পা তুলে বসে থাকছেন। এর ফলে আবার দেখা দিচ্ছে পায়ের ব্যাধি। তারওপর ইঁদুর মারার নির্দেশ নেই। কারণ বিশ্ব...