ওয়েব ডেস্কঃ বর্তমানে যেখানে যৌনতা নিয়ে এতো খুঁটি নাটি আলাপ, আবার একটু সেকেলে পরিবার “ভার্জিনিটি ” নিয়ে বিশেষ আঙ্গুল তোলে সেখানে, টোটো উপজাতি প্রথা ভেঙ্গে একটু এগিয়ে। কেন? কারণ,এরা বিয়েই আগেই গর্ভবতী হয়। তবে সেই সন্তানের বাবাই তাঁর স্বামী।
আসুন সামান্য হলেও এদের সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক। আলিরপুরদুয়ারের আদিম ক্ষুদ্রতম টোটো উপজাতি।ভূটানের ছোট ছোট পাহাড়তলি , গা ঘেঁষে নদী, ঝোপ পেরিয়ে এদের বাস। তবে বর্তমানে ছিন্ন হয়ে আসা আলিপুরদুয়ার মাদারিহাট থানার অন্তর্গত এই টোটো দের গ্রাম।
হাউড়ি-কাংদুংতি, দাতিংতি, দীপ্তি, চুয়াতি, নিতিংতি, জৈপ্তি, গোয়াতি, নামসিতি, কিতিংতি, মুটি, উদিংতি, মেরেমতি এই ১২ টি নদী আর
পদুয়া, হিস্পা, দাম্পি ও দপ্রুং লাকা এই চার পাহাড় ঘিরে রেখেছে টোটো উপজাতিকে। কিন্তু পাহাড়ে বৃষ্টি মানেই কিন্তু এরা বিচ্ছিন্ন। পাহাড়তলি কিনা, তাই এরা কিন্তু ছোট চোখ বিশিষ্ট, বাদামী রঙের, কালো চুলের উপজাতি । ইতিহাস বলে , ভূটান ব্রিটিশ যুদ্ধের সময় বন্দুকে টোটো বয়ে নিয়ে যেতেই এদের আসা। কিন্তু আরো শোনা যায় গো মাংস ভক্ষণের জন্য সমস্যা হলে কোচবিহার রাজা তাড়িয়ে দেন,তাই তারা এমন বিচ্ছিন্ন ভাবে থাকে। তবে ইতিহাসে এর প্রমাণ পাওয়া যায় না।
তবে এদের বিয়ের আচার একদম অন্যরকম। ছেলে মেয়ে কে পছন্দ হলে ছেলের বাবা দু হাঁড়ি “ইউ” আর মুরগি নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেবে। একে বলে বাগদান। তবে বিয়ে এখানে দুই প্রকার বড়ো বিয়ে আর ছোট বিয়ে। আগে সাত আট বছরেই বাগদান হয়ে যেত। তারপর মেয়ে কয়েকদিন পর শ্বশুরঘর চলে যেতো। গর্ভবতী হলে তবে বিয়ের কথা হতো। এই সমাজে নিজেদের পছন্দ মতো বিয়ে প্রচলিত যাকে, নিয়াংকোষা’প্রথা বলা হয়। তবে এরা পণপ্রথা মানে না। এদিক থেকে এরা এগিয়ে। তবে এরা ব্যভিচার মানে না। ব্যভিচারে খুব কড়া ব্যবস্থা হয়। উপজাতি হলেও এদের প্রথা অনেকটাই সাবলীল আর সংস্কার মুক্ত। শুধু এরা প্রথা মেনে কবর দেয়।
আধুনিকতা, শিক্ষার চল হলেও এ উপজাতি মনের দিক থেকে অনেকটা উদার। সমাজপতিরা বেশ কড়া, অন্যায় মানা হয় না। যদিও বর্তমানে অনেক শিথিল এদের নিয়ম, তবু পরিশ্রম, প্রাকৃতীয়তাকে সঙ্গী করে এরা এগিয়ে চলেছে। যে কোন বয়সে বাদিলনওয়া” অন্নপ্রাশন এদের রীতি। তবে উৎসব, রীতি যাই হোক না কেন যৌন তা নিয়ে এদের সাবলীল উদার ভাব স্বাধীনতার মধ্যেই পড়ে। ক্ষুদ্রতম হলেও উপজাতি নুড়ি পাথর আর সবুজ ঘাসের উপজাতি হিসাবেই পরিণত।