Home অফ-বিট পৃথিবীর অভিশপ্ত কিছু ভৌতিক বস্তু ~ যা আজও ব্যবহার করেন অশরীরীরাই

পৃথিবীর অভিশপ্ত কিছু ভৌতিক বস্তু ~ যা আজও ব্যবহার করেন অশরীরীরাই

পৃথিবীর অভিশপ্ত কিছু ভৌতিক বস্তু ~ যা আজও ব্যবহার করেন অশরীরীরাই

বলা হয় “মা” ডাকের থেকে “মায়া” কথাটির জন্ম, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন~ “মৃত্যুর পরও নিজের শরীর বা রূপের প্রতি থেকে যাওয়া মায়া বা টানের জন্যই আত্মা ফিরে আসে নশ্বর দেহের কাছে”। কখনো কখনো তা খুব প্রিয় মানুষ বা কোনো বস্তুও হতে পারে, যেমন কোনো বাড়িকে ঘিরে চলে তাঁদের আনাগোনা। তেমনই কোনো ছোট বস্তুও হতে পারে অশরীরীদের মায়ার কারন। চলুন দেখেনি পৃথিবীর কুখ্যাত কিছু জিনিস যা আজ অব্ধি সেই আত্মাদের কুক্ষ্যিগত রয়ে গেছে…

১~ ডি বু ক ব ক্স (The Dibbuk Box)

Image result for dybbuk box

 

 

সময়টা ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে। একজন অ্যান্টিক বিক্রেতা পুরোনো কিছু জিনিসপত্র কিনতে আসেন ওরিগনের পোর্টল্যান্ডে। এসব জিনিস ছিল একজন ১০৩ বছর বয়সী মহিলার পুরোনো ব্যবহার্য আসবাব। তার ভেতর ছিল অই মহিলার একটি ওয়াইন ক্যাবিনেট, অ্যান্টিক বিক্রেতা এই বাক্স কিনে নেন এবং নিজের ওয়ার্কশপে রাখেন।

Image result for dybbuk box

 

তারপর থেকেই ঘটতে থাকে অদ্ভুত সব ঘটনা। অ্যান্টিক বিক্রেতা নিজের মাকে এই বাক্স উপহার দেন। এর পর তার মা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ক্রমাগত কাঁদতে থাকেন তিনি এবং ‘H-A-T-E G-I-F-T’ কথাটি উচ্চারণ করতে থাকেন। এরপর পরিবারের আরও কয়েকজনকে উপহার হিসেবে এই বাক্সটি দেবার চেষ্টা করেন, কিন্তু তারা সবাই কিছুদিনের মাঝে তা ফিরিয়ে দেয়। তাদের সবারই মনে হচ্ছিল বাক্সটি অশুভ। কিছুদিন পর তিনি ঘনঘন একই দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। পরে জানতে পারেন, এই বাক্স যাদের কাছে ছিল তারা সবাই একই দুঃস্বপ্ন দেখছেন। জেগে থাকা অবস্থাতেও আশেপাশে  তিনি অশরীরী উপস্থিতি টের পেতেন। এসব ঘটনার পর তিনি ইবে-তে বিক্রির জন্য ওঠান এই বাক্সটিকে এবং এর ব্যাপারে সব ঘটনা প্রকাশ করেন। পরে মিসৌরির একটি মেডিকেল মিউজিয়ামের কিউরেটর জেসন হ্যাক্সটন এটি কিনে নেন। তিনি এ নিয়ে একটি বই লেখেন, যার ওপরে ভিত্তি করে তৈরি হয় The Possession নামের সিনেমাটি।

 

 

২~ অ্যা না বে ল (Annabelle)

Image result for annabelle doll

 

১৯৭০ সালে এক মহিলা নিজের মেয়ের জন্য একটা পুতুল কেনেন। কলেজ পড়ুয়া মেয়ের পুতুলটি বেশ পছন্দ হয়ে যায় । সে সেটা নিজের অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে যায়। কিন্তু শিগগিরই সে এবং তার রুমমেট এই পুতুলকে ঘিরে অদ্ভুত সব ঘটনা লক্ষ করতে থাকে। মেয়ে দুটি এসব ঘটনায় ভয় পেয়ে এক সাইকিক মিডিয়ামের শরণাপন্ন হয়। সে বলে, এই পুতুলের ওপর ভর করেছে একটি বাচ্চা মেয়ের আত্মা যার নাম ‘অ্যানাবেল” , তাঁর মৃত্যু হয়েছিল এই অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়েই। ‘অ্যানাবেল’ জানায়,  সে ওই দুই কলেজ ছাত্রীকে পছন্দ করে এবং তাদের সাথেই থাকতে চায়। কিন্তু এই পুতুল রেখে দেওয়ার পর থেকে আরও ভয়ঙ্কর সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে। একদিন একটি ছেলে তাদের অ্যাপার্টমেন্টে আসে এবং এই পুতুলের আক্রমণের শিকার হয়। তার শরীরে থেকে যায় মারাত্মক সব আঁচড়ের দাগ। ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে এরপর এসব পারলৌকিক বিশেষজ্ঞ এড এবং লোরেইন ওয়ারেনের সাহায্য নেয় মেয়ে দুটি। তারা জানায়, এই পুতুলের ওপরে মোটেই কোনো বাচ্চার আত্মা ভর করে নেই বরং রয়েছে এক শয়তান । মেয়ে দুটির আস্থা অর্জন করার জন্যই সে বলেছিল সে একটি বাচ্চামেয়ের আত্মা। সে আসলে ওই দুটি মেয়ের কোনো একজনের ওপর ভর করার সুযোগ খুঁজছিল।

 

মেয়ে দুটি এরপর সেই পুতুল ওয়ারেন দেরকে দিয়ে দেন। তারা একটি কাঁচের বাক্সে একে আটকে রাখে, আজ অব্ধি এই পুতুল কানেকটিকাটের নিজেদের অকাল্ট মিউজিয়ামে রাখা আছে।

৩~ ই~বে পেইন্টিং (“eBay Haunted Painting”)

Image result for ebay haunted painting

 

২০০০ সালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা শিল্পী বিল স্টোনহ্যামের আঁকা এই পেইন্টিং ইবে-তে তোলেন যার নাম হলো ‘The Hands Resist Him’। এখন ছবিটি পৃথিবীর সবচাইতে ভৌতিক পেইন্টিংয়ের অন্যতম। ১৯৭২ সালে এই ছবিটি আঁকা হয় এবং হলিউড অভিনেতা জন মার্লি এটি কিনে নেন। পড়ে ক্যালিফোর্নিয়ার এক দম্পতি এটি কেনে। এরপর ইবে-তে নিলামে ওঠানো হয় একে। সেই সাথে এর ব্যাপারে ভুতুড়ে সব তথ্য দেওয়া হয়। ওই দম্পতির কথা অনুযায়ী, এই পেইন্টিংয়ের ভেতরে থাকা বাচ্চা ছেলে এবং পুতুল রাত্রে বেলা নড়াচড়া করে, এমনকি কখনো একেবারে ফ্রেম থেকে বের হয়ে যায়। এমনকি যে ঘরে পেইন্টিং ছিল সেই ঘরে ঢুকে যায় ছেলেটি, এবং ওই ঘরে থাকা সবাই অসুস্থ বোধ করতে থাকে। ছোট বাচ্চারা এই ছবি একবার দেখেই ভয়ে পালিয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্করা মাঝে মাঝে অনুভব করেন অদৃশ্য কোনো হাত তাদেরকে চেপে ধরছে, অথবা গরম দমকা হাওয়া এসে আঘাত করছে তাদেরকে।

 

যারা অনলাইনে এই ছবি দেখে তাদেরও অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়। একজনের মতে, তার একেবারে নতুন প্রিন্টারে এর ছবি প্রিন্ট করতে পারেনি, যদিও অন্য সব ছবির ক্ষেত্রে তা ঠিকই কাজ করছিল।

৪~ বি য়ে র পো শা ক ( Haunted Wedding Dress)

Image result for haunted wedding dress

 

১৮৪৯ সালে অ্যানা বেকার নামের এক ধনী পরিবারের মেয়ে প্রেমে পড়ে যায় এক নিম্নবিত্ত কামারের সাথে। অ্যানার বাবা এলিস বেকার কিছুতেই মেয়েকে তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে দিতে রাজি হননি।  পেনসিলভেনিয়ার সেই শহর থেকে বিতাড়িত করা হয় সেই কামারকে আর মেয়েকে সারাজীবন কুমারি করে রেখে দেন। রাগে-দুঃখে আর কখনোই কাউকে ভালোবাসেনি অ্যানা, কখনো বিয়ে করেনি। সে মারা যায় ১৯১৪ সালে। প্রেমিককে শহর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার আগে অ্যানা একটি পোশাক পছন্দ করে এবং নিজের বিয়েতে তা পরবে ঠিক করে। কিন্তু বিয়েটা শেষ পর্যন্ত হয় না। এই পোশাক কিনে নেয় স্থানীয় আরেকটি মেয়ে, ধনী পরিবারের এলিজাবেথ ডিসার্ট। ১৯১৪ সালের পর বেকার পরিবারের বাড়িটি মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করা হয় এবং এলিজাবেথ ডিসার্টের বিয়েতে ব্যাবহৃত অ্যানা-র সাধের সেই পোশাকটি রাখা হয় অ্যানা বেকারের শোবার ঘরে।

Image result for haunted wedding dress

এখানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, এই পোশাকটি নাকি নিজে নিজে থেকেই বেড়িয়ে এসে ঘরের ভিতর ঘুরে বেড়ায়, বিশেষ করে পূর্ণিমা রাতে। দেখে মনে হয় কেউ এই পোশাকটি পরে আছে আর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘুরেফিরে নিজেকে দেখছে।

৫~মির্টলস প্লাণ্টেশন-এর আয়না (The Myrtles Plantation Mirror)

Image result for Myrtles Plantation Mirror

 

মির্টলস প্লাণ্টেশন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ভুতুড়ে বাড়ী হিসেবে পরিচিত, পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত হানাবাড়ি। 1796 সালে  এটি একটি আদি আমেরিকান সমাধি স্থলের উপর নির্মিত হয়েছিল। যে জায়গাটি অন্তত দশটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল হিসেবে জানা যায়। প্রায় প্রতিদিনই এই বাড়িটিতে ভূতুড়ে কাণ্ড দেখতে পাওয়া যায়।  এই বাড়ির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর জিনিসটি হল একটি আয়না, যা 1980 সালে বাড়িতে আনা হয়। Mrs.  Woodruffs নামের  এক মহিলা ও তাঁর সন্তানের অতৃপ্ত আত্মা ঘুরে বেড়ায় এই হানাবাড়ি জুড়ে, যাদের এককালে বিষ মিশিয়ে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়েছিল বলে জানা যায়।

 

আয়নায় Mrs.  Woodruffs এবং তাঁর সন্তানের প্রতিবম্ব অনেকেই দেখেছেন, এমনকি তার ফোটোও তোলা হয়েছে, আয়নার কাঁচে থেকে থেকেই একটি শিশুর হাতের ছাপ পড়ে। মনে করাহয়, এই আয়নাটি সম্পুর্নভাবে ওনাদের আত্মার দ্বারা পরিবেষ্ঠি‌ত।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here