Home ঘুরে আসি ভার্জিন ভুটান ~ ঘুরে আসুন ‘বজ্রগর্ভ মেঘ’-এর দেশ থেকে …

ভার্জিন ভুটান ~ ঘুরে আসুন ‘বজ্রগর্ভ মেঘ’-এর দেশ থেকে …

ভার্জিন ভুটান ~ ঘুরে আসুন ‘বজ্রগর্ভ মেঘ’-এর দেশ থেকে …

হিমালয়ের কোলে ছোট্ট একটা দেশ, জনসংখ্যা সাকুল্যে সাত লক্ষ! রূপকথার ছবির মতোই ঝকঝকে সে দেশে রাজার শাসন চলে আজও। তিরতিরে নদীর ধারে রাজপ্রাসাদ, তারই পাশে হাইকোর্ট-পার্লামেন্ট। জংলি ফুলের মতো রাস্তার ধারে ধারে ফুটে থাকে সূর্যমুখীর দল, ছড়িয়ে ছিটিয়ে আপেল-পিচ-কমলালেবু গাছের সারি। প্রকৃতি যেন তার সবটা দিয়ে ঢেলে সাজিয়েছে সেই রাজত্বকে। সাধ্যের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের সাধ থাকলে ভুটানই আপনার জন্য সেরা গন্তব্য। মূলত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর অবধি ভুটানের পর্যটন মরসুম। বিমান, রেল কিংবা সড়কপথে পৌঁছে যেতে পারেন পড়শি এই দেশে। পাসপোর্ট লাগবে না, সচিত্র পরিচয়পত্রই যথেষ্ট।

Image result for bhutan tour

যাত্রাপথের হদিস

বিমানপথ: ড্রুক এয়ার ও ভুটান এয়ারলাইন্স — ভুটানের এই দুই সংস্থাই দিল্লি, গয়া, বাগডোগরা, কলকাতা, মুম্বই, গুয়াহাটি থেকে পারো পর্যন্ত সরাসরি বিমানপরিষেবা দেয়। পারো-ই সে দেশের একমাত্র বিমানবন্দর। এছাড়া বাগডোগরা বিমানবন্দর হয়ে সড়কপথেও সহজে পৌঁছনোর উপায় আছে।

Image result for druk air 

রেলপথ: যাত্রাপথের খরচ কমাতে রেলই ভালো। ভারতের সীমান্ত শহর জয়গাঁও-এর সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশনটি হল নিউ জলপাইগুড়ির হাসিমারা। কলকাতা তো বটেই, দিল্লি, রাঁচি, কানপুর থেকেও হাসিমারা যাওয়ার সরাসরি ট্রেন মেলে।

Image result for bhutan tour

সড়কপথ: সড়কপথে ভুটান যেতে হলে পশ্চিমবঙ্গের জয়গাঁও শহর হয়ে ঢোকাই ভালো। ভুটানের সীমান্ত শহর, ফুন্টশেলিং থেকে এর দূরত্ব মোটে ৪.৩ কিলোমিটার। ভাড়ার গাড়িও সহজলভ্য। হাসিমারা স্টেশন হোক কিংবা বাগডোগরা বিমানবন্দর— বেরোলই সার বাঁধা প্রাইভেট কার চোখে পড়বে। দরদাম করে উঠে পড়লেই হল।

Related image

পারমিট বৃত্তান্ত

সড়কপথে ভুটান যেতে ফুন্টশেলিং থেকে ভারতীয় সচিত্র পরিচয়পত্র দেখিয়ে থিম্পু ও পারোর জন্য পারমিট নিতে হয় পর্যটকদের। সচিত্র পরিচয়পত্র না থাকলে ভারতীয় দূতাবাস থেকে বিশেষ আইডেনটিফেকেশন স্লিপ নিয়ে পারমিট করতে হয়। থিম্পু বা পারো ছাড়াও পুনাখা, ওয়াংদি, বুমথাং, মঙ্গার, হা ভ্যালি ঘোরার জন্য থিম্পু অভিবাসন দপ্তর থেকে স্পেশ্যাল এরিয়া পারমিট নিতে হয়। বিমানে ভুটানে গেলে পারো বিমানবন্দর থেকেই পারমিট দেওয়া হয়।

 

সঙ্গে রাখুন: কোথায় কোথায় ঘুরবেন, তার একটা তালিকায়। যে হোটেল বুক করেছেন, তার ভাউচার। পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং একা ঘুরতে গেলে মুচলেকা।  

Image result for bhutan tour

খেয়াল রাখুন: পারমিটের ফর্ম ভরার সময় জীবীকার জায়গাটি নিয়ে অত্যন্ত সচেতন থাকুন। শুধু সরকারি বা বেসরকারি চাকরি লিখলেই চলবে না, কোন সেক্টরে আপনি কাজ করেন এবং পদ কী— তা-ও উল্লেখ করুন। থিম্পুতে গিয়ে পারমিট নিতে হলে সকাল সকালই অভিবাসন দপ্তরে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করুন, বেলা হলে ভিড়ের জন্য একটা দিন বরবাদ হতে পারে। পরিচয়পত্রের ফোটোকপি অবশ্যই সঙ্গে রাখুন। ট্যুরিস্ট পারমিট পাবেন একেবারে নিখরচায়।

Image result for hotels in bhutan

হোটেল বুকিং

পর্যটন ব্যবসা ধীরে ধীরা মাথা তুলছে ভুটানে। পকেট বুঝে, পছন্দমাফিক হোটেল পেয়ে যাবেন সহজেই। তা বাদে ‘হোম স্টে’র অপশন তো থাকছেই। সীমান্ত শহর ফুন্টশেলিং থেকে রাজধানী থিম্পু— সাধ্যের মধ্যে হোটেল মিলবে সর্বত্র। ভরা মরসুমে চলনসই একটি হোটেল রাতপ্রতি ২৫০০ টাকা চাইবে। অন্য সময় গেলে ওই একই ঘর ১৩০০-১৫০০ পেয়ে যাবেন।

Image result for bhutan flower garden

মুদ্রা-কথা

ভারত ও ভুটানের কারেন্সি একদমই এক। সে দেশের টাকার নাম নালট্রাম বা ন্যু। পাঁচ-২০০০, ভারতের টাকার মতো নালট্রামেরও সব নোট মিলবে সেখানে। হোটেল-রেস্তোরাঁ, ভারতীয় টাকাও দিব্য চলে সর্বত্র।

Image result for bhutan tour

ভ্রমণপথে থাকবে

পারো’র দুর্গ রিনপুং দেজং

 

পুনাখা’র দুর্গ পুনাখা দেজং

৩৯৮৯ মিটার উচ্চতায় চেলে লা পাস (পারো)

Image result for bhutan travel

থিম্পুর ১৬৯ ফুটের বুদ্ধমূর্তি

ভুটানি শহিদদের স্মৃতিতে তৈরি দোচুলা পাস

Image result for bhutan dochula pass

টাইগার’স নেস্ট বা টাকসাং মনেস্ট্রি (পারো)

ট্রেকের জন্য চমলহারি

 

ন্যাশনাল মিউজিয়াম (পারো)

থিম্পুর চিড়িয়াখানা, ইত্যাদি

Image result for bhutan national century

ব্যাগ গোছানোর আগে

শাল, জ্যাকেট বা শ্রাগ— পুরুষ বা মহিলা, সঙ্গে রাখুন অবশ্যই। বৌদ্ধদের যে কোনও প্রার্থনাগৃহে ঢোকার জন্য তা লাগবেই। রেনকোট, ছাতাও ভুলবেন না। পাহাড়ি দেশটায় বৃষ্টি নামে যখনতখন। গরম জামাও আবশ্যিক। উষ্ণ প্রসবণে স্নানের ইচ্ছে থাকলে স্নানের পোশাক রাখুন। পছন্দের কায়দার জুতোর পাশাপাশি স্নিকার রাখুন সঙ্গে। পাহাড়ি পথে শরীর খারাপের ভয় থাকলে গুছিয়ে নিন দরকারি ওষুধও।

Related image