আজব-ভাবনা (২) করলার ইলিশ *************** "ভাবতে পারেন করলার ইলিশ বাহান্ন টাকা কিলো !" দীনু বাবুকে সোজা ভাষায় কমপ্লেনিং টাইপ বলা যায়। সকালে আদর্শ হেলথ কমপ্লেক্স এ দেখা। বয়েস পঞ্চাশ ছুঁলে সবাই , সকালে আদর্শ হেলথ কমপ্লেক্সে আসে। মুখ দেখে দীনু বাবুকে বিশেষ বিরক্ত মনে হলো। "তাও যদি তিস্তার ইলিশ হোত । আমি আর দিনবাজারে যাচ্ছি না।" যাবার দরকারও নেই। এখন জলপাইগুড়িতে সব কেনাকাটা অনলাইনে হয়। ভজ বাজারু (মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি স্মরণে ) সাইটে আপনার বাড়ীতে কি রান্না হবে আপলোড করে দিলেই কাজ শেষ । মাপ মত, আনাজ, সবজি মশলা তেল , সব চলে আসবে। মাছের তো ব্যাপারই আলাদা। জলপাইগুড়ির নোবেল পুরস্কার পাওয়া বৈজ্ঞানিক ড: হীতেন রায়ের আবিষ্কারের ফলে জলপাইগুড়ির সব নদীতেই ইলিশ ভেটকির গাদা গাদি। দীনু বাবুর মত যারা আছেন, মানে যাদের দরদাম -ওজন দেখে, মাছওয়ালার সাথে একটু খুনসুটি করে, বাজার না করলে হজম হয়না, তাদের মানসিক শান্তির জন্য এবং গবেষকদের উৎসাহে দিনবাজারের একটা অংশ এখনো সংরক্ষিত আছে। যারা ভাবছেন এখন জলপাইগুড়িতে আসা মানে, ওখানকার বিখ্যাত দুষ্টু- মিষ্টি , রক-এন -রোল, প্রেমলিপি, মাছের মচ্ছব ইত্যাদি খেয়ে, কয়েক কে.জি ওজন বাড়িয়ে যাওয়া , তারা ভুল করবেন। এখানকার 'বেঁচে থাকার গান', 'ঘচাং ফু' ইত্যাদি রেস্তোঁরায় , ঢোকা মাত্র আপনার স্বাস্থ্য রিপোর্ট (স্নোডেন সার্ভার থেকে) দেখে নিয়ে, সেইমত রান্না হবে। দাম একটু বেশী , প্রায় আশি টাকার মত প্লেট , তবে স্বাস্থ্য সচেতন জলপাইগুড়ির লোক সেটা মেনে নিয়েছে। তবে এখনো জলপাইগুড়িতে সফটওয়ারে কবিতা লেখা, ছবি আঁকা, গান গাওয়া বারণ । তাই বসন্তে কোকিল ডাকে, হাওয়ায় ওড়া আঁচল এখনো গানের বিষয় হয়, দুর্গাপুজোর আয়োজন নিয়ে এখনো মাতামাতি চলে। ~~~ দেবব্রত সান্যালঃ৩১/০৫/২০১৭