[ad_1]
ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন অশান্তি শেষ হবে একটা পন্থাতেই। কেন দ্বি- রাষ্ট্র সমাধান নীতিই চাইছেন জো বাইডেন? ভারতও সমর্থন করে এই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান তত্ত্ব এটা কী? গ্রিন লাইনের গন্ডগোলের সমাধান কি সত্যিই সম্ভব? কোন গন্ডগোল তখনই মেটানো সম্ভব হয় যখন তা দুপক্ষই সেটা মেটাতে চায়। ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন অশান্তি মেটাতে পারে সেই দ্বি- রাষ্ট্র সমাধান বা টু স্টেটস সলিউশন নীতি আসলে কী? হামাস কি কোনওদিনও মেনে নিয়েছে এই নীতি ইজরায়েল কেন এই একটা ক্ষেত্রে আমেরিকার কথা শুনছে না? রাষ্ট্রপুঞ্জকে মুখের ওপর নেতানইয়াহু বলে দিয়েছেন যুদ্ধ কিছুতেই থামাবেন না তারা। তার মধ্যে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট আরও একবার প্রস্তাব রাখলেন যাতে দ্বি- রাষ্ট্র সমাধান নিয়ে কথা বলে দুপক্ষ।
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান কী?
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান খুবই সহজ একটি বিষয়। এই নীতির মাধ্যমে মূলত প্যালেস্টাইন ও ইসরায়েল নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্রের সৃষ্টি হবে। যে দুটি দেশের মানুষ একে-অপরের পাশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। ২০২২ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারত বলেছিল ইজরায়েল প্যালেস্টাইন অশান্তি-বিবাদ-দ্বন্দ্ব মেটাতে। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কোনও বিকল্প হতে পারে না। দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের তত্ত্ব উঠে এসেছিল ১৯৯৩ সালে, অসলো শান্তি আলোচনার মাধ্যমে। এই আলোচনায় ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিরা নিজস্ব অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে বলে আশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি কারণ এতে সবথেকে বড় বাধা ছিল ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সীমানা কী হবে তা নির্ধারণ করা ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধ মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ। সেই যুদ্ধের আগে যেমন ফিলিস্তিনের সীমানা অনেকেই মনে করেন তেমন থাকা উচিত সেই যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর এবং গাজা দখল করে নিয়েছিল ইসরায়েল।
তারপর থেকে এসব অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক ইসরায়েলি বসতি স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৬ লাখ ইসরায়েলি পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসবাস করছে। আন্তর্জাতিক আইনে এসব অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতিগুলোকে বেআইনি বিবেচনা করা হলেও তাদের অস্তিত্ব ফিলিস্তিনিদের টিকে থাকাকে ধীরে ধীরে কঠিন করে তুলেছে এটাই হল আসল ফ্যাক্ট। এছাড়াও রয়েছে বিতর্কিত জেরুজালেম। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয় পক্ষই প্রাচীন এই শহরটিকে নিজেদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে। এই শহরটিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষেরই ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে। ইহুদি ও ইসলাম ছাড়াও খ্রিষ্টান ধর্মেরও বেশ কয়েকটি পবিত্র স্থানের আবাসস্থল জেরুজালেম। এই শহরেই রয়েছে আল-আকসা মসজিদ পূর্ব জেরুসালেমের পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত আল-আকসা মুসলিমদের কাছে ‘হারাম আল-শরীফ’ নামে পরিচিত হলেও ইহুদিদের কাছে এটি তাদের পবিত্রতম স্থান ‘টেম্পল মাউন্ট’।
তাহলে দুটো আলাদা দেশ তৈরি হলেও প্যালেস্টাইনের প্রশ্ন তাদের যেসব এলাকা ইজরায়েল দখল করে রয়েছে সেটা তারা ছেড়ে দেবে। ইজরায়েল ছেড়ে দেবে না সেটার জন্যই লড়াই। তবে ইসরায়েলের সরকারি অবস্থান একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে সমর্থন করে। এক্ষেত্রে তারা ফিলিস্তিনি জনগণকে নিরস্ত্রীকরণের শর্ত দিয়েছে যেটা হামাসের পক্ষে আবার মেনে নেওয়া সম্ভব নয় কারণ হামাস চায় ইজরায়েলকেই শেষ করে দিতে, কিন্তু বর্তমানে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলছেন এই দ্বিরাষ্ট্র সমাধান নীতির কথা। একটা তথ্য জেনে রাখুন ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়া শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী আমেরিকা সব সময় দ্বি রাষ্ট্র তত্ত্বের কথাই বলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে আনার পর ওই তত্ত্বের অপমৃত্যুই হয় বলে অনেকেই মত কারণ জেরুজালেমকে ইজরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনিদের মারাত্মকভাবে ক্ষুব্ধ করেছিল।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্র সমাধান হলে ১৯৬৭ সালের সীমানা রেখা চুক্তিকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে যা এখন গ্রিন লাইন নামে পরিচিত। এই সীমানা রেখা অনুযায়ী সীমান্ত নির্ধারণে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা করতে হবে এবং একে-অপরকে ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে। এছাড়া জেরুজালেমকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল কারণ দুপক্ষ এতে সর্বতভাবে রাজী নয় তাই এখনও দ্বি-রাষ্ট্র তত্ত্ব আসলে কোনো সমাধান হয়ে উঠতেই পারেনি এখনও পর্যন্ত।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়