[ad_1]
বহুতল ভেঙে পড়ে মৃত্যুমিছিল দেখা গিয়েছিল গার্ডেনরিচে। যা রাজ্য–রাজনীতিতে বড় খবর। তবে আজ, শুক্রবার দিনও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ল। গার্ডেনরিচ বিপর্যয়ের চারদিন অর্থাৎ ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। তারপর উদ্ধার হয়েছে আবদুল রউফ নিজামি ওরফে শেরুর দেহ। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে ধ্বংসস্তূপ থেকে শেরু চাচার দেহ উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর সেখানেই আজ ভোররাতে তাঁকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১। আহত বেশ কয়েকজন এখনও চিকিৎসাধীন।
এদিকে বৃহস্পতিবার মাঝরাতে তল্লাশি চালানোর সময় এই দেহ উদ্ধার হয়। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা তা সামনে নিয়ে আসেন এবং হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গার্ডেনরিচ বহুতল বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা ছিল ১০। বৃহস্পতিবার রাত ২টো ৫০ মিনিট নাগাদ আবদুল রউফ নিজামি ওরফে শেরু নিজামের দেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকায় ‘শেরু চাচা’ নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই আত্মীয়দের মধ্যে কান্নার রোল উঠেছে। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিম কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কাজে ক্ষোভ উগরে দেন। এমনকী শোকজ করা হয়েছে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, সাব ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ারকে।
আরও পড়ুন: পরপর তিনদিন ডায়মন্ডহারবারে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রেকর্ড গড়তে পরিকল্পনা
অন্যদিকে বহুতল ভেঙে বিপর্যয়ের পরেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান শেরু চাচা। এই দুর্ঘটনার পর খোঁজখবর শুরু করলে শেরু চাচার হদিশ মিলছিল না। আর তখনই তাঁর মোবাইলে ফোন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অপর প্রান্ত থেকে শেরু চাচা ফোন ধরে জবাবও দেন। ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকেই শেরু চাচা ফোনে বলেছিলেন, ‘আমি বেঁচে আছি। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন আটকে আছে। তাড়াতাড়ি এখান থেকে বের করো।’ তাড়াতাড়ি করলেও শেরু চাচার কাছে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। আর তাই আজ ভোররাতে সবাই হারালেন শেরু চাচাকে। রবিবার রাতে গার্ডেনরিচের ফতেপুর ব্যানার্জি বাগান লেনের অভিশপ্ত বহুতলের দোতলায় আড্ডা চলছিল। আর তখনই ঘটে গেল অনভিপ্রেত ঘটনা। নির্মীয়মাণ বহুতলটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তেই আটকে পড়েন এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল রউফ নিজামি ওরফে শেরু চাচা।
এছাড়া ওই ফোনটিতেই শেষ কথা বলেছিলেন শেরু চাচা। আজ সব শেষ। নিস্তব্ধতা চরমে। শেরু যে বেঁচে নেই সেটা প্রায় ধরে নিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তবে আজ সেই বাস্তবের মুখোমুখি হতে হল তাঁদের। চোখের জল এখন থামছে না ছেলের। তবে উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। শেরু চাচার কথা অনুযায়ী তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন সেখানে আটকে ছিল। সেই দেহগুলি কোথায়? উদ্ধারকাজ চলছে। সেগুলি পাওয়া গেলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সংখ্যাটা ১১–তে দাঁড়িয়ে। শেরুর পরিবারে আছেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে এবং চার মেয়ে। ছেলে কলেজে পড়ে। মেয়েদের দু’জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাকি আছে দু’জন।