[ad_1]
পূর্ব বর্ধমান, কাটোয়া: ভিডিওতে যে মেয়েটিকে দেখতে পাচ্ছেন তার নাম মালতী বিশ্বাস। বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরে। মালতী যে দৌড়াচ্ছে এই দৌড়ই মালতীর একমাত্র নেশা। এই নেশা মালতীর দীর্ঘদিনের। জানা গেছে সে প্রায় ছয়-সাত বছর ধরে তার এই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই এই দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীর ঝুলিতে রয়েছে প্রচুর পদক এবং ট্রফি। জেলা এবং রাজ্য স্তরের একাধিক দৌড় প্রতিযোগিতাতে অংশগ্রহন করে সাফল্য অর্জন করেছেন মালতি।
মালতী রোজ ভোর তিনটেয় উঠে রেডি হয়। তারপর কাটোয়া স্টেশন থেকে চারটে সময় ট্রেন ধরে বলাগড় যায় তার কোচ তরুণ ঘোষের কাছে প্রশিক্ষন নিতে। মালতীর দৌড়ানোর এতই নেশা সে কখনো থেমে থাকেন না। খেলাধুলা তার খুব পছন্দের। এই প্রসঙ্গে মালতী জানিয়েছেন,”ছয়-সাত বছর ধরে আমি এই খেলাধুলা করছি। এতদিন ধরে আমি খেলাধুলা করছি কারণ খেলাধুলা আমার খুব পছন্দের। আমি ছোট থেকেই খেলাধুলা করতে ভালবাসি। আমি সকালে আর বিকালে দৌড়ানো প্রাকটিস করি।”
ভবিষ্যতে বড় অ্যাথলিট হওয়াই স্বপ্ন মালতীর। দেশের জন্য লড়াই করার ও সাফল্য পাওয়াই তার ইচ্ছা। কিন্তু বর্তমানে মালতীর পরিবারের অভাব অনটন প্রভাব ফেলেছে তার খেলাধুলার উপর। মালতীর বাবা টোটো চালায় মালতীরা মোট ছয় বোন। তার মধ্যে দুই বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাকি চার বোনের যাবতীয় দায়িত্ব বাবার কাঁধে। টোটো চালিয়ে দিন গেলে ইনকাম হয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। তাই এই ইনকামের মধ্যে মালতীর জন্য খেলার পিছনে আর আলাদা করে খরচ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন মালতীর বাবা। তাই এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন মালতী।
এই বিষয়ে মালতী জানিয়েছে,”কেউ যদি আমাকে সাহায্য করে তাহলে আমি সারাজীবন আমার খেলাধুলা চালিয়ে যাব। আমার ইচ্ছা আছে বিয়ের পরেও খেলাধুলা করব। এখন খাওয়া দাওয়াতেই একটু বেশি সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। বাবা টোটো চালায়, টোটো চালিয়ে সেরকম ইনকাম হয়না তাই আরও বেশি সমস্যা হয়।”
মালতীর মা জনিয়েছেন,”মালতী খেলাধুলা করে এগিয়ে যাচ্ছে যা তার ভাল লাগে। কিন্তু এভাবে তারাও আর পেড়ে উঠছেন না।” মালতির মা আরও বলেন,”ওকে রোজ বলি, বারণ করি তাও সেই বারণ না শুনে খেলতে চলে যায়।” পাশাপাশি তার গলায় অভাব অনটন আর হতাশার সুর। একরাশ আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন,”মেয়েটাকে ভাত তরকারী ছাড়া ঠিকমত খেতেও দিতে পারিনা , আমাদেরও খারাপ লাগে কিন্তু আমরা নিরুপায়।”
আরও পড়ুনঃ Red Card in Cricket: ক্রিকেটে কেন রেড কার্ড দেখানো হয়, কী রয়েছে নিয়ম, জেনে নিন বিস্তারিত
তাই বর্তমানে অভাবকে সঙ্গী করেই মালতী তার দৌড়ানো চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে যদি কেউ মালতীকে সাহায্য না করে তাহলে হয়ত হারিয়ে যাবে মালতীর মত উজ্জল এক সম্ভাবনা। খেলোয়াড় হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করার স্বপ্ন চাপা পড়ে যাবে অভাবের জাতাকলে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী
পূর্ব বর্ধমান
পূর্ব বর্ধমান
Tags: Dream, Purba bardhaman, Running, Sports