Home আপডেট বাংলায় মমতা তো মহারাষ্ট্রে উদ্ধব! আসন বণ্টনে বিড়ম্বনা কাটিয়ে উঠতে পারবে কি কংগ্রেস?

বাংলায় মমতা তো মহারাষ্ট্রে উদ্ধব! আসন বণ্টনে বিড়ম্বনা কাটিয়ে উঠতে পারবে কি কংগ্রেস?

বাংলায় মমতা তো মহারাষ্ট্রে উদ্ধব! আসন বণ্টনে বিড়ম্বনা কাটিয়ে উঠতে পারবে কি কংগ্রেস?

[ad_1]

জয়ন্ত মণ্ডল

‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভোটকৌশল কার্যত থমকে রয়েছে আসন বণ্টন জটে। এতে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েছে কংগ্রেস। বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে সমঝোতা করতে গিয়ে দলের অন্দরেই জাঁকিয়ে বসেছে মতানৈক্য। আসন ভাগাভাগি নিয়ে একদিকে যখন বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, অন্য দিকে মহারাষ্ট্রে বেঁকে বসছে শিবসেনা।

উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলিতে সঠিক ভাবে আসন বণ্টনের উপর জোর দিচ্ছে কংগ্রেস। কিন্তু এই রাজ্যগুলিতে শাসক অথবা প্রাক্তন শাসক দল আবার কংগ্রেসকে খুব একটা বেশি আসন ছাড়তে চাইছে না। কিন্তু এই রাজ্যগুলির প্রদেশ কংগ্রেস নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের গোঁ ধরেছে। এমন পরিস্থিতিতে আটকে রয়েছে আসন বণ্টনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি।

পশ্চিমবঙ্গ

বিজেপি-বিরোধী ২৮টি দলের ‘ইন্ডিয়া’ জোটে আসন বণ্টন এখনও হয়নি। ইতিমধ্যেই জোটের অন্তর্ভুক্ত দলগুলো নিজেদের দাবি পেশ করতে শুরু করেছে। তৃণমূল সুপ্রিমো এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, ‘‘সারা দেশে ‘ইন্ডিয়া’ থাকবে। বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস লড়াই করবে। কারণ, তৃণমূলই পারে বিজেপিকে শিক্ষা দিতে। সারা ভারতকে পথ দেখাতে।’’ ফলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-বিরোধী জোট আদৌ ফলপ্রসূ হবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা থাকছেই।

আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু করার জন্য কংগ্রেস সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল তৃণমূল। সেই নির্ধারিত সময়সীমাও (৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩) পার হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিও এখন তৃণমূলকে সরাসরি আক্রমণ করছেন।

ক’দিন আগে তৃণমূলে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে জোর জটলা চলছিল। এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরঞ্জন চৌধুরী সম্প্রতি বলেন, ‘দুর্নীতির ক্যানসার, সেই ক্য়ানসারে আক্রান্ত তৃণমূলের জন্য বাঁচার কোন অ্যানসার নেই। তৃণমূল পার্টির বাঁচার দিন শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই তৃণমূল পার্টির পতন দ্রুত গতিতে শুরু হয়ে গিয়েছে।’ অধীরের এ ধরনের মন্তব্যের পর কেউ কি বাংলায় ‘ইন্ডিয়া’ জোটের একটা আধা-স্বচ্ছ ছবিও কল্পনা করতে সময় ব্যয় করবেন!

রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের গাঁটছড়া বাঁধার ঘোর বিরোধী অধীর। সেটা সাম্প্রতিক অতীতেও তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যে প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু বিজেপি-বিরোধী জোটের কথা মাথায় রেখে তৃণমূল সম্পর্কে অনেকটা নরম কংগ্রেস হাইকমান্ড। সেই জায়গায় অধীরের এই মন্তব্য প্রদেশ নেতাদের একটা বড়ো অংশের অবস্থান স্পষ্ট করে দিচ্ছে।

মহারাষ্ট্র

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার পর পরই উদ্ধব ঠাকরের দল শিবসেনা (ইউবিটি)-ও মহারাষ্ট্রে প্রাপ্য আসনের দাবিতে সরব। শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেছেন, “ভেঙে যাওয়ার পরেও আমরা মহারাষ্ট্রে বৃহত্তম দল। আমরা ২৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। গত নির্বাচনে আমরা এর মধ্যে ১৮টি আসনে জয়ী হয়েছিলাম। এ বারও আমরা একই সংখ্যক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব”। একইসঙ্গে রাউত বলেন, শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপি (শরদ পওয়ারের দল) লোকসভা ভোটে মহারাষ্ট্রে একসঙ্গে লড়বে।

আসন বণ্টন প্রসঙ্গে শিবসেনার সাফ কথা, “মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় দল হল শিবসেনা, কংগ্রেস একটি জাতীয় দল। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা ঠিকঠাকই এগোচ্ছে। আমরা বলেছি মহারাষ্ট্রের ২৩টি লোকসভার আসনে শিবসেনা (ইউবিটি) লড়ছে। আমরা আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে জয়ী আসন নিয়ে পরে আলোচনা হবে। কংগ্রেস, এনসিপি এবং শিবসেনা মহারাষ্ট্রে একসঙ্গে কাজ করবে। এতে কোনো দলেরই কোনো সমস্যা নেই”। উল্লেখ্য়নীয়, এখানে রয়েছে শরদ পওয়ারের এনসিপি-ও।

পঞ্জাব

দিল্লিতে আপ-এর সঙ্গে আসন সমঝোতা আপাত মসৃণ পথে এগনোর সম্ভাবনা থাকলেও কাঁটা পঞ্জাবে। পঞ্জাব কংগ্রেসের একটা বড় অংশ আপ-এর সঙ্গে জোট চায় না। কংগ্রেসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য পঞ্জাব। সে রাজ্যে ২০২২-এর বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে পথে বসিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল আপ। সেই আপ-এর সঙ্গে স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের জোটে অ্যালার্জি থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

কংগ্রেস কী চায়?

ইতিমধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে কংগ্রেসের অ্যালায়েন্স কমিটি। শোনা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৫ থেকে ২০টিতে প্রার্থী দিতে চায় কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনের মধ্যে ১৬ থেকে ২০টি আসন, বিহারের ৪০টি আসনের মধ্যে ৪ থেকে ৮টি এবং পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে ৬ থেকে ১০টি আসনে লড়তে চায় কংগ্রেস। এ ছাড়াও ঝাড়খণ্ডের ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৭টি, পঞ্জাবের ১৩টি আসনের মধ্যে ৬টি, দিল্লির ৭টি আসনের মধ্যে ৩টি, তামিলনাড়ুর ৩৯টি আসনের মধ্যে ৮টি, কেরলে ২০টি আসনের মধ্যে ১৬টি এবং জম্মু ও কাশ্মীর ২টি আসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে কংগ্রেস।

উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি, বিহারে আরজেডি, জেডিইউ এবং বাম, দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে হয়তো খুব একটা ঘাম ঝরাতে হবে না কংগ্রেসকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র এবং পঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলির শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলি যে কংগ্রেসের চাহিদা মতো আসন সহজে ছাড়বে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!

আরও পড়ুন: তৃণমূলের সঙ্গে ফের আসন ভাগাভাগিতে কংগ্রেস, কার ভাগে ক’টা

[ad_2]

খবরটি “খবর ২৪ ঘন্টা” অ্যাপে পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here