[ad_1]
ভারতে এবার জলের দরে বিদ্যুৎ? লোডশেডিং সমস্যা মিটে যাবে? কোন ফর্মুলায় এই কামাল? বাংলাদেশের পরিস্থিতিটা কী? বিদ্যুতের দাম কমালে ভারত কে আর দ্যাখে কে? জানেন কিভাবে এগিয়ে যাবে দেশটা? আন্দাজ করাও কঠিন। ভারতের হাতে প্রবল সৌরশক্তি। সূর্যের ফোটন থেকে অনর্গল তৈরি হচ্ছে সৌরবিদ্যুৎ। কমছে জ্বালানি খরচ, বাড়তি বিদ্যুৎ ধরে রাখতে পাওয়ারফুল ব্যাটারির খোঁজ শুরু। নবায়নযোগ্য জ্বালানির বেনিফিট পাচ্ছে ভারত, ভবিষ্যত সোনার মতো উজ্জ্বল।
বিশ্ব বাজারে যখন ক্রমশ জ্বালানির দাম বেড়ে যাচ্ছে তখন জ্বালানির খরচে রাশ টানতে দুরন্ত পারফরম্যান্স ভারতের। ধীরে ধীরে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে এগোচ্ছে দেশ। সূর্য ঢেলে দিচ্ছে, আর তার ফায়দা লুটছে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কম যায়না ভারত ও। কিন্তু বাংলাদেশ? বছরে তিনশ’ দিনেরও বেশি রোদ থাকে ওপার বাংলায়। তারপরেও ভারতকে টেক্কা দিতে পারছে কী? তথ্য বলছে, সৌরশক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের এমন প্রধান দশটি অর্থনীতির পাঁচটিই এশিয়ায়। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনামের সঙ্গেই এক সারিতে রয়েছে ভারত। ভারত ২০৩০-এ সৌরবিদ্যুতে ৫০০ গিগাওয়াটের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ভাবতে অবাক লাগছে? কিন্তু এটাই ফ্যাক্ট। প্ল্যানিং হয়ে গেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশির বিভিন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রতিদিন অন্তত ৫০০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে আশা করছে ভারত, বলছে সৌরবিদ্যুৎ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক জোট ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যালায়েন্স মানে ইসা। এক হাজার মেগাওয়াট পরিমাণ বিদ্যুৎকে এক গিগাওয়াট বলা হয়। তাহলে ৫০০ গিগাওয়াট মানে বুঝুন। ইসা বলছে, সৌর বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়লেও বাড়তি বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। আর তার জন্য শক্তিশালী ব্যাটারি প্রয়োজন। ভারতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ব্যাটারির সক্ষমতা এখনও কিন্তু সেই পর্যায়ে পৌঁছায়নি, কিন্তু তাতেও নো টেনসন।
ব্যাটারি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর যা তৎপরতা, তাতে আশা করা যায় ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বাজারে নতুন প্রজন্মের ব্যাটারি চলে আসবে। কোম্পানিগুলো যদি নিজেদের মধ্যকার অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে আসে, তাহলে ব্যাটারির দামও কমবে। ফলে, সবটুকু সৌরবিদ্যুৎ সংরক্ষণ ও ব্যবহার সম্ভব হবে। সাধারণ ভোক্তা পর্যায়েও বিদ্যুতের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমবে। সবথেকে ইন্টারেস্টিং ইনফোটা শুনে নিন। প্রতিদিন পৃথিবীতে এক ঘণ্টায় যে পরিমাণ সৌরশক্তি পৌঁছায় তা দিয়ে পুরো পৃথিবীর দু বছরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যাবে সহজেই। একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হবে
২০২২ এ জ্বালানি খরচে মারাত্মক হারে রাশ টানতে পেরেছে ভারত। তথ্য বলছে, ২০২২ এর প্রথমার্ধে জ্বালানির খরচে ৪.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সঞ্চয় করা সম্ভব হয়েছে। ১৯.৪ মিলিয়ন টন কয়লার ব্যবহারও রোধ করা গেছে। মূলত, সৌরশক্তি উৎপাদনের দিকে জোর দেওয়ার জন্যই এই ফল পেয়েছে দেশটা। ২০২২ এর জানুয়ারি থেকে জুন অবধি মোট বিদ্যুতের চাহিদার ১১ শতাংশ এসেছে সৌরশক্তি থেকে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইসা বলছে বর্তমানে ভারতে সৌর ও অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে, তা যদি সংরক্ষণ করা যেত তাহলে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ ঘাটতি কমত, অন্যদিকে গ্রাহক পর্যায়ে এর দামও কমে আসত।
তবে সেক্ষেত্রেও খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না ভারতকে। আসলে, বর্তমান বিশ্বে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভারত জানে, বোঝে। এটা মানতে হবে।
সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় নিয়মিত রেকর্ড ভাঙা তাপপ্রবাহ-ঝড়-বৃষ্টি-বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে। পৃথিবী ক্রমশ উষ্ণ হয়ে উঠতে থাকার কারণে এসব দুর্যোগ শুরু হয়েছে। গত প্রায় ২০০ বছর ধরে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন, ক্রমবর্ধমান এই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য মূলত দায়ী। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর যদি তাদের এই আশঙ্কা সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে পৃথিবীর প্রাণ-প্রকৃতিতে রীতিমতো বিপর্যয় শুরু হয়ে যাবে। যা ঠেকানো কঠিন হবে তাই আগেভাগেই জীবাশ্ম থেকে উৎপাদিত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে চীন, জাপান, ভারতের মতোই থাইল্যান্ড ফিলিপিন্সের ভূমিকাও উল্লেখজনক।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়