Home আপডেট বিলকিস মামলার ১১ অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, ফের জেলে পাঠানোর নির্দেশ  

বিলকিস মামলার ১১ অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, ফের জেলে পাঠানোর নির্দেশ  

বিলকিস মামলার ১১ অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ খারিজ সুপ্রিম কোর্টে, ফের জেলে পাঠানোর নির্দেশ  

[ad_1]

নয়াদিল্লি: শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল গুজরাত সরকার। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই বিলকিস বানো মামলার ১১ অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, সোমবার তা খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ মুক্তি পাওয়া ১১ অপরাধীকে ফিরে যেতে হবে জেলে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, মেয়াদ শেষের আগেই বিলকিস মামলার অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত গুজরাত সরকারের এক্তিয়ার বহির্ভূত। কখন, কীভাবে কারাগারে ফিরতে হবে অপরাধীদের, সে কথাও জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।    

ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, গুজরাত সরকার জালিয়াতি করে এবং তথ্য ধামাচাপা দিয়ে আদালতের কাছ থেকে ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্ত আদায় করেছিল। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার গুজরাতের নেই। যে হেতু মামলার শুনানি মহারাষ্ট্রে হয়েছে, সে হেতু মহারাষ্ট্র সরকারই পারে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ১১ জন অপরাধীকে আগামী দু’ সপ্তাহের মধ্যে জেলে গিয়ে রিপোর্ট করতে হবে। মুক্তির জন্য ওই অপরাধীদের মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে নতুন করে আবেদন করতে হবে। কারণ মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতেই বিলকিস-সহ ২০০২ গুজরাত দাঙ্গাপর্বের মামলাগুলির বিচার হয়েছিল।

গুজরাত সরকার বিলকিসকাণ্ডে দণ্ডিত ১১ জনকে ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তার আগে ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন। তাদের সেই আবেদনের ভিত্তিতেই গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলে আদালত। গুজরাতের বিজেপি সরকার ১১ অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আদালতে সওয়াল করে। এর পরই ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

১১ জন মুক্তি পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় দেশ জুড়ে। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এ নিয়ে বিতর্ক বাধে। গুজরাত সরকার জানায়, জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ‘ভালো আচরণ’ করেছে। সে কারণেই তাদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে। যদিও প্রতিপক্ষ দাবি করে, ওই ১১ জন বিভিন্ন সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়েছে এবং সেই সময়ে জেলের বাইরে থাকাকালীন তাদের বিরুদ্ধে ফের নানা অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি এদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে প্যারোলে মুক্ত থাকার সময় অপরাধমূলক কার্যকলাপের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।

রায় স্বাগত জানালেন রাহুল

বিলকিস বানো মামলায় গণধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত দোষীদের জেলে ফেরত পাঠানোর যে রায় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়েছে তাকে স্বাগত জানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শাসকদল বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় ফের দেশকে জানিয়ে দিল কারা অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষক।’’

রাহুল লিখেছেন, ‘‘নির্বাচনী লাভের জন্য ন্যায়বিচারকে হত্যা করার প্রবণতা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক।’’ পাশাপাশি দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের জন্য বিলকিসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিলকিস বানোর অক্লান্ত সংগ্রাম অহংকারী বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়ের প্রতীক।’’

‘বুকের ওপর থেকে পর্বত সরল’

“আজ সত্যিই আমার নতুন বছর। আমি আনন্দে কাঁদছি। দেড় বছরে এই প্রথম আমি একটু হাসতে পারলাম। আমি আমার সন্তানদের আদর করেছি। মনে হচ্ছে বুকের ওপর থেকে পর্বতপ্রমাণ পাথরটা সরে গেল” – সোমবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের খবর পেয়ে এ ভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বিলকিস বানো।

নিজের আইনজীবী শোভা গুপ্তার মাধ্যমে এক বিবৃতি জারি করে বিলকিস বলেছেন, “আমার মনে হয় এই হল ন্যায়বিচার। সকলের জন্য সমান ন্যায়বিচারের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে সে সম্পর্কে আমার মনে, আমার সন্তানদের মনে এবং প্রতিটি  নারীর মনে আশা জাগানো এবং তার সত্যতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি সম্মাননীয় সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ জানাই।”

কী হয়েছিল সেদিন

২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাতে যে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ে তার জেরে ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারেন দাঙ্গাকারীরা। সেখানে বিলকিসের আরও ৬ জন আত্মীয়কে হত্যা করে তারা। ওই দাঙ্গায় প্রায় হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, যার অধিকাংশই ছিল মুসলিম।

এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি হত্যা ও ধর্ষণের অপরাধে ১১ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। সেই ১১ অপরাধীকে ২০২২-এর ১৫ আগস্ট মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার।

[ad_2]

খবরটি “খবর ২৪ ঘন্টা” অ্যাপে পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here