[ad_1]
প্রচণ্ড ঝড়ে ফুঁসে ওঠে সমুদ্র। গিলে খেতে আসে রাক্ষুসে ঢেউ। আছড়ে পড়ে জাহাজের উপর। ঠিক সেই সময়, মাঝ সমুদ্রে থাকা জাহাজগুলো কী করে? কীভাবে নিজেদেরকে ভাসিয়ে রাখে? ভেবে দেখেছেন কখনো? বাইচান্স যদি জাহাজটা খারাপ হয়ে যায়, তাহলে ফিরবে কীভাবে? ঝড় উঠলেই জাহাজ পাঠিয়ে দেওয়া হয় সমুদ্রে, কারণটা কী? চলুক আজ আপনাকে জানাই, সমুদ্রের কিছু ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্ট।
এই তথ্যটা তো আপনাকে ভীষণ আশ্চর্য করবে। বিশ্বের বহু দেশ ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পাওয়া মাত্রই বড় বড় জাহাজগুলোকে গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেয়। ভাবছেন, এ আবার কেমন অমানবিক কাজ? আসলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজের নিরাপত্তা আর ক্ষতি কমানোর জন্যই এমনটা করে। উপকূলবর্তী অংশে জাহাজগুলো থাকলে প্রচণ্ড ঝড়ে একে অপরের উপর আছড়ে পড়তে পারে। তখন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হবে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর অনুযায়ী, প্রাকৃতিক ভাবে বেষ্টিত সুরক্ষিত নৌ বন্দর না থাকলে ঝড়ের সময় বড় জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মাঝারি আর ছোট জাহাজ গুলো থাকে তীরের কাছাকাছি। কিন্তু মাঝ সমুদ্রের ঢেউয়ের মাঝে জাহাজগুলো কীভাবে ব্যালেন্স করে? বড় জাহাজে দুটো ইঞ্জিন একসঙ্গে বড় বড় ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। যখন প্রচণ্ড ঝড়ে উত্তাল হয়ে ওঠে সমুদ্র, পরিবেশ হয়ে ওঠে ভয়াবহ, তখন জাহাজকে বিশেষ কৌশলে নির্দিষ্ট গতিতে চালান নাবিকরা। দুর্দান্তভাবে ব্যালেন্স করেন ঢেউয়ের সঙ্গে।
যদি মাঝ সমুদ্রে জাহাজ খারাপ হয়ে যায়, তখন কি আছে কপালে? তখন তো সমুদ্র স্রোতের সঙ্গেই জাহাজ চলতে শুরু করবে। আসলে এমনটা হয় না। প্রত্যেক জাহাজে দুটো ইঞ্জিন থাকে। একটা খারাপ হলে আরেকটা চলতে থাকে। যদি দুটো ইঞ্জিনই খারাপ হয়ে যায় আর সেভাবে কোন ব্যবস্থা না থাকে তাহলে ট্র্যাক বোট জাহাজটিকে টেনে তীরে নিয়ে আসে। আবার কখনো চারিদিকে হেলিকপ্টারের সাথে জাহাজটিকে অ্যাটাচ করে তীরে নিয়ে আসা হয়।
এখানেই থেকে যাচ্ছে বড় একটা প্রশ্ন, তাহলে কি সমুদ্রের মাঝখান বেশি শান্ত? শুনুন তবে। সমুদ্রের পৃষ্ঠদেশে জলের সঙ্গে বায়ুর ঘর্ষণের ফলে তৈরি হয় ঢেউ। এই ঢেউ ঠিক কত বেগে আর কত বড় আকার নিয়ে তীরে আছড়ে পড়বে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সমুদ্র তলের আকার, উপকূলের ভূমির প্রকৃতি, জলের গভীরতা আর আবহাওয়ার উপর। ঢেউগুলো যখন ঠিক উপকূলের কাছাকাছি চলে আসে, তখন তলদেশ ভূমি স্পর্শ করে। ঘর্ষণের জন্য ধীরে ধীরে হারাতে থেকে গতি। কমতে থাকে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য। কিন্তু শক্তির পরিমাণ একই থেকে যায়। যার কারণে বাড়তে থাকে ঢেউয়ের উচ্চতা। এইভাবে বাড়তে বাড়তে যখন ঢেউয়ের উচ্চতা ঢেউয়ের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সাত ভাগের এক ভাগকে ছাড়িয়ে যায়, তখন ঢেউটা ভেঙে যায়। তাই উপকূলের কাছে ঢেউয়ের দাপট একটু বেশি, তুলনামূলক ভাবে মাঝ সমুদ্র বেশি শান্ত।
কিন্তু প্রকৃতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলে তখন পেরে ওঠা খুব মুশকিল। যতই উন্নতি প্রযুক্তি আসুক, মানুষ এখনো প্রকৃতির কাছে জিততে পারেনি। সমুদ্রর ঢেউ যখন আকাশ ছোঁয়া হয়ে যায় তখন কিচ্ছু করার থাকে না। সে মাঝ সমুদ্র বলুন, কিংবা সমুদ্র উপকূল, নিমিষে ধূলিসাৎ হয়ে যায় বড় বড় জাহাজ, জলোচ্ছ্বাসে তছনছ হয়ে যায় সবকিছু।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়