[ad_1]
বাঘের হানায় মৃত্যু হলে বা আহত হলে ক্ষতিপূরণ মেলে। তবে সেক্ষেত্রে একাধিক শর্ত থাকে। কিন্তু একাধিক ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে সব শর্ত পূরণ করার পরেও বাঘের হানায় আহত বা নিহত হলে সেই পরিবার সঠিক সময় ক্ষতিপূরণ পান না।
ঘটনাটি হয়েছিল ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর। সুন্দরবন কালীচর এলাকায় পঞ্চমুখানি-২ জঙ্গল লাইনে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন কয়েকজন। সেই সময় বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়ে। ক্য়ানিংয়ের গোসাবা ব্লকের বাসিন্দা রাধাকান্ত আউলিয়া ও শম্ভূ মণ্ডলের উপর বাঘ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। শম্ভুর উপরেই প্রথমে আক্রমণ করেছিল বাঘ। এরপর বন্ধুকে বাঁচাতে গেলে রাধাকান্তকেও টেনে নিয়ে যায় বাঘ। শম্ভুর দেহ পরে পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু রাধাকান্তর দেহ মেলেনি।
এরপর শুরু হয় ক্ষতিপূরণের জন্য় তদ্বির। সরকারের সব দরজায় কড়া নেড়েছিলেন মৃতদের পরিবার। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে ও পুলিশের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসাবে বাঘের হানার কথা উল্লেখ করা থাকলেও কিছুতেই ক্ষতিপূরণ মিলছিল না তাদের। এরপর এনিয়ে এনিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় পরিবার।
অবশেষে স্বস্তি মিলল কলকাতা হাইকোর্টে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনও অঞ্চলে বাঘের হানায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সুন্দরবনের যে কোনও জায়গায় বাঘের হানায় মৃত্য়ু হলেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ১৫ দিনের মধ্য়ে দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে মৃতের পরিবারের তরফে বার বার বনদফতরের কাছে ক্ষতিপূরণের জন্য় আবেদন করা হয়েছিল। সরকারি নিয়মেই তাঁদের পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকার ছিল। কিন্তু সেই ক্ষতিপূরণ তাঁরা কিছুতেই পাচ্ছিলেন না। বার বার তাঁদের ঘোরানো হয়েছে। কিন্তু এবার খোদ হাইকোর্টের বিচারপতি ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কিছুটা হলেও স্বস্তি পেল দুই পরিবার।
আসলে পেটের টানে সুন্দরবনের খাঁড়িয়ে মাছ কাঁকড়া ধরতে যান অনেকেই। কিন্তু জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে বাঘ। পদে পদে মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে মাছ ধরতে যান স্থানীয়রা। তবে এবার ক্ষতিপূরণ পেলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে পরিবার।