“পড়লে পরে দুধু ভাতু, না পড়লে ঠেঙার গুঁতুঁ”…
রাঢ়ের পটভূমি ও তার সামজের চিত্র অঙ্কনে কলমে কথাসাহিত্যের এক স্বতন্ত্র ধারায় আজকের শ্রদ্ধা স্মরণ তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। জীবনের প্রাথমিক পর্যায় যখন কাব্যচর্চা দিয়ে ঘটেছে, সেখানে তার প্রভাব যে ছোটগল্প ও উপন্যাসে পড়বে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পিতা হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। হিন্দু সমাজের বাল্য বিধবার হাতে তার বেড়ে ওঠা। তবে ১৯১৬ সাল তাঁর জীবনের এই মাতৃসুধার স্নেহপাশ থেকে, বাস্তবের করাল ভূমিতে নিয়ে আসে। সমাজের বুকে তখন চলছিল, গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলন। তাই সেই আন্দোলনে যে যুবক মন আত্মনিয়োগ করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শেষ হয় তাঁর প্রথাগত শিক্ষা। তারপরই তাঁর আত্মনিয়োগ কংগ্রেস স্বক্রিয় রাজনীতিতে। কার্যকারণ নীতিতে জীবন সবসময় বাঁধা থাকে। তাই বারে বারে কারাবরণ করেন নি।কিন্তু মুক্তির পর গ্রামে ফিরে যান এবং সাহত্যে আত্মনিয়োগ করেন। তাঁর প্রথম গল্প “রসকলি এক্স,কল্লোলের পত্রিকায় প্রকাশ।এরপর বঙ্গশ্রী, কালিকলম, প্রবাসী প্রভৃতিতে লেখা প্রকাশিত হতে থাকে। জীবন কিন্তু তাঁকে রাজনীতির বাইরে রাখে নি। বারে বারে সেইটানে ছুটে যাওয়া তাঁর।
১৯৭০ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে সভাপতি নির্বাচিত হন। শিল্পীর গভীরতা বর্ণনায় তিনি আত্মনিয়োগ করেন বারে বারে। তবে ঐতিহ্যকে বারে বারে এঁকেছেন পুনর্নিমণের স্তরে। তিনি গল্পে দেশজ মিথের ব্যবহার করেছেন বারে বার। আবার নিষ্প্রাণ প্রেমের বাণী প্রতিকীওরূপে এঁকেছেন তিনি, আর সেখানেই প্রান্তিক নারীর আচার ভারতীয় জীবনধারা ধরা পড়েছে। নারী শহরের রূপায়ন হলে, জৈববোধের আদলে অস্তিত্ব খুঁজেছেন তিনি, আর মনোগ্যামির চিরাচরিত শিল্পী রূপে আত্মপ্রকাশ করেছেন। নানা বৈচিত্র্যে উপন্যাস উঠে এসেছে বারে বার। যেমন – ধাত্রীদেবতা, গণদেবতা, পঞ্চগ্রাম, হাঁসুলিবাঁকের উপকথা ইত্যাদি।লেখনীতে উঠে এসেছে সমাজ ব্যবস্থা, প্রাচীন ও নবীনের সংঘাত, বৃত্তিনির্ভর মানুষ আর গ্রামীণ সংস্কার। জীবনের কোমল পেলব মনন, প্রাণধর্ম সার্থকরূপ পেয়েছে মানবিকতায়। প্রকৃতি এখানে বলিষ্ঠ, বিশাল ও জীবন্ত।রাঢ় ভূমির সার্থক রূপকারে এবং প্রবৃত্তির মানবিক রূপায়ণে আজকের স্মরণ বলিষ্ঠ আধ্যাত্মবোধে।এখানেই তাঁর সার্থকতা। জীবন প্রকৃতি মনের আবেদনে, “লোকে কয় আমি কৃষ্ণ কলঙ্কিনী ; সখি, সেই গরবে আমি গরবিনী গো ” আজ স্তুতিরূপ প্রতিফলনে শ্রদ্ধার নিবেদন বারে বারে কালি কলম মননে নিত্য সার্থকতায় পর্যবেশিত।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের গল্প, উপন্যাস ও নাটক নিয়ে মোট ৪০ টির বেশী ছবি তৈরি হয়েছে।সত্যজিৎ রায় তারাশঙ্কর বন্ধ্যোপাধ্যায়ের “জলসাগর ” ও “অভিযান ” উপন্যাসের সার্থক রূপ দিয়েছেন। তাঁর যেসকল রচনা চলচিত্রে রূপ পায় সেগুলি হল –
গণদেবতা
কবি
উওরায়ন
আগুণ
অগ্রদ্রাণী
জলসাগর
ডাকহরকরা
দুইপুরুষ
দুইপুরুষ
ধাত্রীদেবতা
বিচারক
সপ্তপদী
সন্দীপন পাঠশালা
হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
সন্দীপন পাঠশালা ইত্যাদি
গণদেবতা
কবি
উওরায়ন
আগুণ
অগ্রদ্রাণী
জলসাগর
ডাকহরকরা
দুইপুরুষ
দুইপুরুষ
ধাত্রীদেবতা
বিচারক
সপ্তপদী
সন্দীপন পাঠশালা
হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
সন্দীপন পাঠশালা ইত্যাদি
উল্লেখ্যোগ্য নাটকের তালিকায় রয়েছে –
দীপান্তর
পথের ডাক
দুই পুরুষ
দীপান্তর
পথের ডাক
দুই পুরুষ
রবীন্দ্র, সাহিত্য, জ্ঞানপীঠ বিবিধ পুরস্কারের একত্রীকরণ আজ এই মহান ব্যক্তিত্ব কে শ্রদ্ধা জানাই নিরবধি।