ছবি ******** অদিতি চক্রবর্তী বুকের ওপর হামাগুঁড়ি দিয়ে এগুচ্ছি , কাঁচঘর । জানলা , দরজা কিছুই নেই । গান ও নুপূরের ধ্বনি ভেসে আসছে । একটু কী সাধ থাকতে নেই ? বেয়ে বেয়ে উঠে পড়েছি প্রায় । অমনি উর্দিপরা একটা লোক আটকে দিলো। বললাম সেই লোকটিকে "একটু নাচ গান দেখব।" হাসল । বলল, "তুমি ভিক্ষু ,দাঁড়াতেও পারোনা । ওসব বড়লোকি ব্যপার ।" ঠিক সে সময়, তিনি বেরিয়ে এলেন কাঁচঘর থেকে । "রামুজিইইই ... , কে ? , কে ও ?"কণ্ঠ শুনে বুঝলাম উর্দি পরা লোক রামুজি । তিনি এগিয়ে এসে বললেন,"নাচ গান দেখবে ?" বললাম, "হুমম্"। বললেন, "একটি শর্তে সুযোগ হবে । আগামীকাল রাতে । তোমার ছবি তুলব ।" আমি মহাখুশী । পরদিন তিনি হাজির আমার ডেরায় । ছবি আর তার সাথে প্রশ্নবান । কোথায় থাকি ? কি খাই ? রাজনীতি নিয়ে ভাবি কিনা ? ইত্যাদি । তারপর চলে গেলেন । রাতে কাঁচঘরে বসে আছি । রামুজির কথা মিথ্যা মনে হলো । নাচ, গান চলছে । রঙিন গেলাসে রঙিন পানীয় নিয়ে সুন্দর সুন্দর মানুষেরা এদিক -ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন ।আমি এককোণে মাদুরে বসে । হঠাৎ দেখি সেই লোক, যিনি সকালে আমার ছবি তুলেছেন । এগিয়ে এলেন, সাথের ফর্সা লোকটিকে আমাকে দেখিয়ে বললেন, "ওই যে ওই লোক । পঙ্গু। ব্যাটা খাঁটি শুদ্র । ওর একদিনের জীবন সেলুলয়েডে বেঁধে ফেলেছি । সাথের ফর্সা লোকটি বললেন, "বেশ করেছ । এবার পাঠিয়ে দাও আমেরিকায় । এসব ছবি ওরা হাই-রেট দেবে ।" কানে এলো ওদের কথা আমি নাচে-গানে বেহুঁশ। অতোশতো বুঝি না । ফেরার সময় রামুজি বলল,"তুমি আমেরিকা দেখবে না কোনোদিন। কিন্তু আমেরিকা তোমায় এমনি আসর বসিয়ে দেখবে ।" হামাগুঁড়ি দিয়ে নামতে বড়ো ঝামেলা । নামছি । 19/05/2017