Home আপডেট Duttapukur Blast Exclusive: বাজি ছাড়াও ‘অন্য কাজে’ হাত লাগান মোচপোল-কাঠুরিয়ার মহিলারা! ঝুঁকি বেশি নাকি লাভ

Duttapukur Blast Exclusive: বাজি ছাড়াও ‘অন্য কাজে’ হাত লাগান মোচপোল-কাঠুরিয়ার মহিলারা! ঝুঁকি বেশি নাকি লাভ

Duttapukur Blast Exclusive: বাজি ছাড়াও ‘অন্য কাজে’ হাত লাগান মোচপোল-কাঠুরিয়ার মহিলারা! ঝুঁকি বেশি নাকি লাভ

[ad_1]

দত্তপুকুর মোচপোলে বিস্ফোরণের পর থেকেই প্রকাশ্যে আসছে বড় বড় নাম। তৃণমূল নেতাদের ইন্ধনেই নাকি বেড়েছে বেআইনি কারবার। তবে কর্মচারী ছিল সাধারণ গ্রামবাসীরাই। বাজির খোল বাঁধা, মশলা ভরা থেকে প্যাকেট করা— মহিলা ও শিশুরা হাতে হাত লাগিয়ে করত সেসব। রোজগার দিন গেলে ১০০ থেকে ২০০ টাকা। পুরুষদের রোজের অর্ধেক। কিন্তু শুধুই বাজি বানিয়েই দিন চলে কাঠুরিয়া, মোচপোল, বেরুনান পুকুরিয়ার মহিলাদের? নাকি রয়েছে ‘অন্য কাজ’ও?

(আরও পড়ুন: ফেরার এবাদুলের বাড়ির পাশেই কাঠুরিয়া স্কুল!শিশুদের গায়েও কি পড়ছে বারুদের ঘ্রাণ)

কেরামত, সামসুলদের নেতা হয়ে ওঠার কাহিনি বলছিলেন মোচপোলের আমিনা বিবি*। বলতে বলতেই সেলাই করছিলেন বালাপোশ। একটা সেলাই করে কত আয়? ৫০ থেকে ৭০ টাকা রেট। তুলো কেমন, সেই মোতাবেক রেট বাড়ে কমে। বাজির কাজ নাকি মহিলারাও করতেন? ‘আমরা কখনও সে কাজে যাইনি ভাই। সামসুলের বাড়ির ওদিকের মহিলারা করত। আর করে নারায়ণপুরে।’ সপাট উত্তর আমিনার। পাশের গ্রাম কাঠুরিয়ার খাদিজা বিবির* থেকে পুকুর লিজ নিয়ে মাছচাষ করত বিষ্ফোরণে নিহত কেরামত। খাদিজা বিবিও বললেন লেপ, তোষক সেলাইয়ের কথা। ৫০ থেকে ৭০ টাকা রেট । তবে তিনি করেন না। বয়স হয়েছে। করে তাঁর বউমা। পাশে বসেই বালাপোশের কভার সেলাই করছিল সে। সেলাই শেষে তাতে তুলো ভরা হবে।

 স্টোনচিপসের সঙ্গে মেশানো বাজির মশলা

(নিজস্ব চিত্র)

কেরামত আলির প্রথম স্ত্রীর বাড়ি শোক-থমথমে। ১৭ বছর বাড়ি ছাড়া ছিল সে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথমপক্ষের সঙ্গে আর সম্পর্ক নেই। ছেলে রবিউল ও মেয়ে সাবিনাকে নিয়ে কেরামতের প্রথম স্ত্রী মারুফার* একা সংসার। বিস্ফোরণের দিন সকালে রবিউল কেরামতের কাছে টাকা চাইতে যায়। ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল। তার কিছুক্ষণ পরেই বিস্ফোরণ। খবর এল রবিউল হাসপাতালে। বারাসত জেলা হাসপাতাল পুলিশে ছয়লাপ, ঢুকতে পারেননি কেউ। বাঁচানোও যায়নি রবিউলকে। জানালেন মারুফার বাবা। তিনি রিক্সা চালান খড়দায়। মেয়ের দুর্দিনে চলে এসেছেন মোচপোল। কী কাজ করেন মারুফা? ১৮ টাকা ডজন রেটে কাপড়ে হেম আর বালাপোশ সেলাই। এটাই সম্বল। তুলো কারা দিয়ে যায়? দীপ্তিকল থেকে লোক আসে।

(আরও পড়ুন: নারায়ণপুরে বাজির রমরমা, বারুদের ঝুঁকিতে কি বিশ্ববিদ্যালয়ও? কী বলছে কর্তৃপক্ষ)

দীপ্তিকল এলাকা থেকে তুলো আসে কাঠুরিয়া, মোচপোলের আমিনা, খাদিজা বিবির বাড়ি। মোচপোল যাওয়ার পথে দুই বিশাল কমপ্লেক্স‌‌। সেখানে এলাকার কিছু বাড়িতে বালাপোশ, তোষক, লেপের ব্যবসা। তুলো কিনতে হয় গোবিন্দ মাস্টার, টুটু, নারানদের থেকে। প্যাকিং করে তুলো দিয়ে আসা হয় কাঠুরিয়া, মোচপোলের বাড়ি বাড়ি। আমিনার মতো কারিগররা শুধু একজনের কাজ করেন না। একসঙ্গে ২-৩ জনের ব্যবসায়ীর কাজ ধরেন।

তোষক সেলাই চলছে

দীপ্তিকলের ব্যবসা লকডাউনের পর থেকে ধুঁকছে। আগে প্রত্যেক ব্যবসায়ী মাসে ৩০০-৪০০ পিস লেপ, তোষকের অর্ডার পেত। সিজনে আরও বেশি। এখন বছরে গড়ে ১৫০। দু-তিনটে ব্যবসায়ীর কাজ ধরে কমবেশি এই অর্ডারই পান কাঠুরিয়ার মহিলারা। রেট গড়ে ৬০ টাকা হলে মাসে ৯ থেকে ১০ হাজার আয়। দীপ্তিকল থেকে মাল যায় গয়া, ঝাড়খন্ড, কাটিয়াড়া, ঔরঙ্গাবাদ, কোচবিহারের মতো জায়গায়। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘এই লেপ বানিয়েই গ্রামের বেশিরভাগ মহিলারা স্বনির্ভর। বাজির কাজ করতে লোভ দেখিয়েছে অনেক। তবে গোনাগুনতি মহিলারাই ওসব করেন।’

এ কাজে ঝুঁকি নেই তা নয়। নির্মাণকর্মীদের অনেকে যেমন সিলিকোসিসে ভোগেন, এখানেও তার প্রকোপ। নাকে মুখে ঢুকে যায় তুলো। তার থেকে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের কঠিন রোগ। রোগের জেরে এখন অনেককেই ডাক্তার দেখাতে হয়। অনেকে আবার এসবের জন্য কাজ করাও বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু বাজির থেকে এ কাজ কয়েক গুণ নিরাপদ। এক কথায় সেটাই মেনে নিচ্ছেন কাঠুরিয়া-মোচপোলের মহিলারা‌।

(* চিহ্নিত নামগুলি বিশেষ কারণে পরিবর্তিত)

[ad_2]

খবরটি “খবর ২৪ ঘন্টা” অ্যাপে পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here