Home বিদেশ Jessore Road History: একটা রাস্তা আগলে রেখেছে ভারত-বাংলাদেশকে, বাঙালির যন্ত্রণার সাক্ষী

Jessore Road History: একটা রাস্তা আগলে রেখেছে ভারত-বাংলাদেশকে, বাঙালির যন্ত্রণার সাক্ষী

Jessore Road History: একটা রাস্তা আগলে রেখেছে ভারত-বাংলাদেশকে, বাঙালির যন্ত্রণার সাক্ষী

[ad_1]

Jessore Road History: এই পথ পরম মমতায় আগলে রেখেছে ভারত-বাংলাদেশকে। কাঁটাতারের বেড়া এর কাছে অতি তুচ্ছ। রাস্তার দুপাশে থাকা শতবর্ষী গাছগুলো জানান দেয়, সময়েরও দৌড় ঝাঁপে ইতিহাস কখনো মুছে যেতে পারে না। বলে দেয়, বাঙালির যন্ত্রণার কথা। নিজের মাতৃভূমি ছেড়ে এই পথ ধরে দেশ ছাড়তে হয়েছিল বহু বাঙালিকে। এটা যশোর রোড। নামটা আপনি নিশ্চই শুনেছেন।

এ পথের শতবর্ষী গাছগুলোর সঙ্গে জুড়ে রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। এই পথ ধরে পূর্ব বাংলার প্রায় এক কোটি বাঙালি আশ্রয় নিয়েছিল কলকাতার শরণার্থী শিবিরে। পথে যেতে যেতে ক্লান্ত শরণার্থীরা গাছ গুলোর ছায়াতে কেউবা পেয়েছিলেন একটু মনের জোর, আবার কেউবা এই পথেই হারিয়েছেন পরিবার-পরিজনকে। যশোর রোডের প্রতিটি ইঞ্চি বলে ইতিহাসের কথা। কিন্তু আফসোসের বিষয়টা কি বলুন তো, এই পথ নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য হয় না। শুধুমাত্র ইতিহাস ধারণ করে আছে, বর্তমান প্রজন্মের মনে কি পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে? এটা একটা বড় প্রশ্ন।

বাংলাদেশ আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বুক চিরে চলে গিয়েছে এই ঐতিহাসিক পথ। এ পথের শুরুটা হয়েছে বাংলাদেশের যশোর জেলা থেকে, মিশেছে বেনাপোল-পেট্রাপোল পেরিয়ে কলকাতায় এসে। প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। যার মধ্যে ৩৫ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। আর বাকিটা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এই পথকে চেনে যশোর-বেনাপোল রোড নামে। যদিও ভারতের অংশে মানুষ এই পথকে চেনে যশোর রোড হিসেবেই।

এই শহরেই ছিল একটা আস্ত বিমান ঘাঁটি। কলকাতার সঙ্গে এই বিমান ঘাঁটির যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি করার জন্য আধুনিকভাবে নির্মাণ করা হয় যশোর রোড। এটা গেল একদিকের কথা। ইতিহাসের আর একটি কথা অনুযায়ী, এখনকার তৎকালীন জমিদার ছিলেন কালীপ্রসাদ পোদ্দার। শুধু কলকাতাতেই নয় বহু জায়গায় ছিল তার ব্যবসা বাণিজ্যের পসার। একবার নাকি জমিদারের মা নৌকার মাঝিদের অসহযোগিতার কারণে গঙ্গা স্নানে যেতে পারেননি। এই ঘটনায় ভীষণ অপমানিত বোধ করে রীতিমত ঘরের দরজা বন্ধ করে বৃদ্ধা অনশনে বসেন। ঠিক করেন, গঙ্গা স্নানের জন্য যশোর থেকে রাস্তা নির্মাণ করলে তবেই তিনি অনশন প্রত্যাহার করবেন। সেদিন মায়ের কথা ফেলতে পারেনি ছেলে, জমিদার বাবু নিজেই এই রাস্তা নির্মাণ করেন। তাই অনেকে এই পথকে বলেন কালী বাবুর সড়ক। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই পথই হয়ে ওঠেছিল বেঁচে থাকার স্বপ্ন পূরণের পথ। এই পথের প্রত্যেকটা ধূলিকণা বলে, হাজারো শরণার্থীদের ক্লান্তি আর দুর্ভোগের কথা। জমিদার রাস্তার দু’ধারে রেইনট্রি গুলো রোপন করেছিলেন। যাতে তীর্থস্থানে যাওয়ার পথে তার মা কিংবা অন্যান্য পুণ্যার্থীরা গাছের ছায়ায় একটু বসে দু’দণ্ড আরাম করতে পারেন। এখন সব থেকে বেশি বয়সী গাছগুলো দেখা যায় পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে বারাসাত পর্যন্ত রাস্তায়। তার পর বড় গাছের সংখ্যাটা একটু কম।

১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় ভারতের সেনাবাহিনী এই পথে সংস্কারের কাজ করে। যখন এই পথ দিয়ে লক্ষ লক্ষ শরণার্থী ওপার বাংলা থেকে ভারতে এসে আশ্রয় নেয়, গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল সেই দৃশ্য। শরণার্থীদের সেই ঢল নিয়ে রয়েছে বিখ্যাত মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ নামক কবিতা। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি হয়ে উঠেছিল একটা জীবন্ত ইতিহাস। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসার জন্য বাঙালির কাছে অন্যতম পথ হয়েছিল এই পথ। যশোর রোডের ইতিহাসই বলুন, আর সৌন্দর্য, দু-পাশে থাকা শতবর্ষের গাছগুলো বড্ড দামি। সোজা কথায়, ইতিহাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এই যশোর রোড। কিন্তু বেশিরভাগ ইতিহাস বইতেই এই রাস্তার কথা আপনি পাবেন না। কবিতার মাধ্যমে যশোর রোড বিশ্বখ্যাত হলেও, নতুন প্রজন্মের কজন জানেন এই পথের কথা?

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

[ad_2]

খবরটি “খবর ২৪ ঘন্টা” অ্যাপে পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here