Home আপডেট খাদ্যের মধ্যে আর্সেনিক ~ অজান্তে শরীরে বিষের অনুপ্রবেশ

খাদ্যের মধ্যে আর্সেনিক ~ অজান্তে শরীরে বিষের অনুপ্রবেশ

খাদ্যের মধ্যে আর্সেনিক ~ অজান্তে শরীরে বিষের অনুপ্রবেশ

খাদ্যের মধ্যে আর্সেনিক! এবং শুধুমাত্র ভেজাল খাবারেই নয়, খাবার সম্পর্কে যারা যথেষ্ট সচেতন তারাও নিজেদের অজান্তে শরীরে এই বিষের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছেন। ভোজনরসিকদের জন্য সুখবর না হলেও কথাটা সত্যি। প্রতিনিয়ত নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের সঙ্গে একটু একটু করে নিজেদের অজান্তেই শরীরে প্রবেশ করছে আর্সেনিক। শুধুমাত্র নলকূপের জল থেকেই নয়, আহার্য বস্তু – যেমন মাছ, মাংস, এমনকি বিদেশি শৌখিন পানীয়র মধ্যেও আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে।

আর্সেনিক যে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক সেটা সকলেই জানে। অত্যাধিক আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় বমি, পেট ব্যথা, আন্ত্রিক হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু এর থেকেও স্বল্পমাত্রার আর্সেনিকের শরীরে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বেশি চিন্তার কারণ।আর্সেনিক সাধারণত দুই প্রকার – জৈব এবং অজৈব। যদিও দুই প্রকার আর্সেনিকই ক্ষতিকারক ৷ কিন্তু মানব শরীরে অজৈব আর্সেনিকের প্রভাব বেশি। এটা শরীরের কোষের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তার সাধারণ কর্ম ক্ষমতা নষ্ট করে, যার ফল স্বরূপ অন্তত ২০০-র বেশি enzyme এর মারাত্মক বিষক্রিয়া তৈরি হয়।পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র রাসায়নিক হিসাবে আর্সেনিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ। কিন্তু এখনও কাঠের আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রীকে পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে আর্সেনিক ব্যবহার করা হয়। এবং সেই আর্সেনিক খাবারের সাথে মিশে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এবং এটা শুধুমাত্র আমিষ ভোজীদের জন্যই চিন্তার কারণ নয় ৷ দুধ, ফলের জুসের প্যাকেটেও আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও পশু পাখির মাংস, যা আমরা সাধারণত খাই, মাছ, shellfish – এই সমস্ত খাবারের মধ্যেও কম-বেশি মাত্রায় আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে। আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় ভিটামিন-এ ডেফিসিয়েন্সি, হাঁপানি, লিভারের সমস্যা, চর্মরোগ, নার্ভের সমস্যা, এমনকি ক্যানসার পর্যন্ত হয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি বিভাগের প্রধান ড: প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস জানান, ‘‘কোন প্রকার আর্সেনিক কত মাত্রায় শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক এ সমস্ত কোনও আলোচনার বিষয় নয়। সরকারের উচিৎ অবিলম্বে অজৈব আর্সেনিকের ব্যবহার বন্ধ করা, পোলট্রি ফার্ম এ নিয়মিত সার্ভে চালানো এবং মুরগির growth development এর জন্য আর্সেনিকের প্রয়োগ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া, এবং এ সম্পর্কে কড়া আইন প্রণয়ন করা ৷ মনে রাখা উচিৎ আর্সেনিকের সুদূরপ্রসারী বিষক্রিয়া থেকে বাঁচতে হলে এর স্বমূলে নির্মূল অত্যন্ত জরুরি।’’