Home আপডেট লাগামছাড়া করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ, লকডাউনের ঘোষণা বিভিন্ন রাজ্যে

লাগামছাড়া করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ, লকডাউনের ঘোষণা বিভিন্ন রাজ্যে

লাগামছাড়া করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ, লকডাউনের ঘোষণা বিভিন্ন রাজ্যে

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ লাগামছাড়া। দেশের একাধিক রাজ্যে দৈনিক পাঁচ সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ২৪টা রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এমন রয়েছে যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজারের ওপরে। মৃত্যুহার কম থাকলেও সংক্রমণ যে হেতু অত্যধিক বেশি, মৃতের সংখ্যাও তাই অনেকটাই বেশি।

করোনা সংক্রমণের এই দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যই লকডাউনের শরণাপন্ন হয়েছে। কিছু রাজ্য বেশ কিছু দিন আগে থেকেই লকডাউন বা লকডাউনসুলভ নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করেছে। বাকি রাজ্যগুলি গত কয়েক দিন ধরেই এমন ঘোষণা করে চলেছে।

লকডাউন নিয়ে কোন রাজ্যের কী ঘোষণা দেখে নিনঃ

মহারাষ্ট্র: গত ১৪ এপ্রিল থেকে এই রাজ্যে লকডাউনসুলভ নিয়ন্ত্রণ চলছে। ব্যাপারটাকে সম্পূর্ণ লকডাউন হিসেবে ঘোষণা করেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু যা নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সেগুলি লকডাউনেরই সমতুল। এই লকডাউনের সুফল কুড়োচ্ছে মুম্বই শহর। সেখানে সংক্রমণ এবং সংক্রমণের হার দু’টোই কমেছে অনেকটাই। তবে রাজ্যের কিছু জেলায় সংক্রমণ এখনও বেশি রয়েছে, সে কারণে মহারাষ্ট্রের দৈনিক সংক্রমণ কমছে না, কার্যত এক জায়গাতেই আটকে রয়েছে।

দিল্লি: ১৯ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে দিল্লিতে। এক সপ্তাহের জন্য এই লকডাউনের ঘোষণা করা হলেও পরবর্তী কালে তা আরও দু’দফায় বাড়ানো হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে লকডাউনের সুফল পাচ্ছে দিল্লি। দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের নীচে নেমেছে। অন্য দিকে সংক্রমণের হার গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ শতাংশের ঘরে। দশ দিন আগেও এটা ৩৬ শতাংশের ওপরে ছিল।

কর্নাটক: লকডাউনের পক্ষে ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদিউরাপ্পা। কিন্তু সংক্রমণ লাগামছাড়া হওয়ায় লকডাউন ঘোষণা করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। গত ২৭ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে কর্নাটক। আপাতত ১২ মে পর্যন্ত লকডাউন জারি রয়েছে গোটা রাজ্যে। কিন্তু লকডাউনের কোনো সুফল এখনও কুড়োতে পারেনি কর্নাটক। দৈনিক সেখানে ৫০ হাজার মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন।

কেরল: ভোটের পর থেকেই সংক্রমণ লাগামছাড়া কেরলে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজারের বেশি মানুষ। সংক্রমণের হার ২৭ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন ঘোষণা করতে হয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে। শনিবার সকাল থেকে ১৬ মে সকাল পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে।

মধ্যপ্রদেশ: গত দু’ সপ্তাহ ধরে ‘করোনা কার্ফু’ চলছিল মধ্যপ্রদেশে। তাতে একটু সুফল পাওয়া গিয়েছে। সংক্রমণের হার যেটা এক সময়ে ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল তা নেমে এসেছে ১৮ শতাংশে। কিন্তু এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। সে কারণে বৃহস্পতিবার রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ১৫ মে পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন চলবে মধ্যপ্রদেশে।

বিহার: ৪ মে থেকে সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে বিহারে। চলবে ১৫ মে পর্যন্ত

ওড়িশা: ৫ মে থেকে দু’সপ্তাহের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে ওড়িশা। চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।

রাজস্থান: করোনা মোকাবিলায় ১০ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজস্থান সরকার। মে মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠানও করা যাবে না। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গ: গত শুক্রবার ৩০ এপ্রিল থেকে আংশিক লকডাউন চলছে রাজ্যে। সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকেল ৫টা  থেকে সন্ধ্যে  ৭ টা পর্যন্ত বাজার দোকান খোলা থাকবে। লোকাল ট্রেন বন্ধ। বন্ধ করা হয়েছে শপিং মল, সুইমিং পুল, রেস্তোরাঁ, বার, পাব ইত্যাদি। গণপরিবহণেও ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না।

উত্তরপ্রদেশ: সম্পূর্ণ লকডাউন রাজ্যে জারি না হলেও উইকএন্ড লকডাউন চলছে। সেটাকেই আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সংক্রমণ একটু কমলেও, এখনও মারাত্মক কোনো সুফল উত্তরপ্রদেশ পায়নি।

ঝাড়খণ্ড: ২২ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে। আপাতত ৬ মে পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে। আগামী দিনে সেটা যে আরও বাড়বে তা বলাই বাহুল্য।

গুজরাত: সম্পূর্ণ লকডাউনের পথে হাঁটেনি গুজরাত। নৈশ কার্ফু এবং রাজ্যের ২৯ শহরে কার্ফুর মধ্যে দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে তারা।

হরিয়ানা: ৩ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত এক সপ্তাহের লকডাউন জারি হয়েছে হরিয়ানায়। তবে তা যে আরও বাড়বে তা বলাই বাহুল্য।

সম্পূর্ণ লকডাউনে ঘোষণা এখনও পর্যন্ত না করলেও তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং সিকিমে লকডাউনসুলভ অনেক নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। আবার অন্য দিকে তেলঙ্গানা সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যে কোনো ভাবেই লকডাউন ঘোষণা করা হবে না .