[ad_1]
গত শুক্রবার বৌবাজারে তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালান তদন্তকারীরা। এহেন তাপস রায় যে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন, তা যেন বিশ্বাস হচ্ছে না বিরোধীদের। অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য, তাপস রায়ের বিষয়ে সেই অর্থে নেতিবাচক মনোভাব নেই কারও। বরানগরের বিধায়ক অবশ্য শনিবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সুয়োগ পেলে আবারও গরিম মানুষকে চাকরি দেওয়ার সুপারিশ করব যাতে তাঁদের পরিবার বেঁছে যায়। দলীয় কর্মীদেরও চাকরির সুপরিশ করব। তবে কোনও কিছুর বিনিময়ে তা করব না।’ তাপস রায় আরও বলেন, ‘কংগ্রেসে থাকাকালীনও অনেকের চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলাম। তৃণমূলের সরকার গঠনের পর অবশ্য চাকরির সুপারিশ করার সুযোগ সেভাবে পাইনি। তবে ভবিষ্যতে তা পেলে আবারও করব।’ (আরও পড়ুন: ঠান্ডার মধ্যে SSKM ছেড়ে জেলে ফিরলেন বালু, সেলে ক’টা কম্বল পেলেন মন্ত্রী?)
আরও পড়ুন: সোমের মকরস্নানের আগেই ভিড় উপচে পড়ল গঙ্গাসাগরে, প্রকাশ্যে পুণ্যার্থীদের সংখ্যা
এদিকে ইডি হানা প্রসঙ্গে তাপস রায় বলেন , ‘টাকার বিনিময়ে চাকরি বা ছাত্র ভরতির বিরোধিতা করে এসেছি আমি চিরকাল ধরে। সেটা সাই জানে। আর সেই আমার বাড়িতেই দুর্নীতির তদন্ত করতে এল ইডি। এটা কীভাবে হয়? এর আগে বাম জনামাতেও দীর্ঘ লড়াই করেছি। তবে বাড়িতে কখনও পুলিশ আসেনি।’
এর আগে গত শুক্রবার সকাল সকাল তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে তাপস রায়ের ফ্ল্যাটে প্রবেশ কেছিলেন ইডি আধিকারিকরা। এরপর তল্লাশি শেষে তাঁর বাড়ি থেকে তদন্তকারীরা বের হন সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে। শাসকদলের এই বর্ষীয়ান নেতা ২০১১ সাল থেকে বরানগরের বিধায়ক। তিনি দলের দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও বটে। উল্লেখ্য, পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বরানগর পুরসভার ওপর আগেই নজর পড়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। পুরসভার শিক্ষক, ক্লার্ক, গাড়িচালক মিলিয়ে এর আগে ৩২ জনকে তলব করেছিল সিবিআই। সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল বরানগরের পুরপ্রধান অপর্ণা মৌলিককেও। গতবছর ইডির জেরার মুখে পড়েছিলেন তিনি। আর গত শুক্রবার বরানগরের বিধায়কের বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি।
অভিযোগ উঠেছিল, শিক্ষা দুর্নীতির ধাঁচেই পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল বরানগরে। নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআর শিট কারচুপি হয়েছিল। এবং তার প্রমাণও হাতে আসে তদন্তকারীদের। অভিযোগ, ওএমআর শিটে চাকরিপ্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছিল বরানগর পুরসভায়। এই আবহে সুমন চৌধুরী নামে এক চাকরিপ্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ্যে এসেছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, পরীক্ষায় তিনি ১৯ নম্বর পেলেও মেধাতালিকায় তা বেড়ে হয়েছিল ৩১। সেই তালিকায় সই ছিল বরানগর পুরপ্রধানের। প্রকাশ্যে আসা ওএমআর শিট অনুসারে, ২০১৩ সালের ১২ অগাস্ট বরানগর পুরসভায় মজদুর পদের জন্য লিখিত পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষায় বসেছিলেন সুমন চৌধুরী নামে এক যুবক। প্রশ্নপত্রে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ১৯ নম্বর পান তিনি। সেই ওএমআর শিটে অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোনের সিল ও তার আধিকারিকের সই রয়েছে। কিন্তু মেধাতালিকায় দেখা যায় তিনি পেয়েছেন ৩১। সেই তালিকায় আবার পুরপ্রধানের সই রয়েছে পুরপ্রধানের। এদিকে পরীক্ষায় যে সুমন ১৯ পেয়েছিলেন, তাও উল্লেখ করা ছিল তালিকায়। জানা গিয়েছে, বিগত বছরগুলিতে দু’বার বরানগর পুরসভার নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্বে ছিল অয়ন শীলের সংস্থা।