[ad_1]
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এত হইচই কেন ? অন্যান্য দেশের নির্বাচন নিয়ে কই বিশ্বজুড়ে তো এমনটা হয় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা সব জায়গাতেই থাকে। কিন্তু এতটা সহিংস হয় কি? তাহলে গলদটা কোথায়? বাংলাদেশের সিস্টেমে নাকি নির্বাচন কমিশনে? ২০১৪ আর ২০১৮ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা একদমই ভালো নয়। সেটাই কি তাহলে রিপিট হতে চলেছে? নির্বাচন আবার সহিংস হয়ে উঠবে না তো?
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে এত ঘোটালা, তা কিন্তু প্রথম থেকেই পছন্দ করেনি দেশটার শাসক দল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথায়, তিনি বুঝতেই পারছেন না কেন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে এত মাথা ঘামাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এবছর প্রায় ২০ থেকে ২২ টি দেশের নির্বাচন হয়েছে, হচ্ছে। কিন্তু অন্য কোন দেশ নিয়ে তো এত চর্চা নেই, তাহলে বাংলাদেশ কেন?
ভূ রাজনৈতিক ইস্যুতে কৌশলগতভাবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্র চীন সহ বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রের আগ্রহ রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। শুধু শাসক দল নয়, বাংলাদেশের আমজনতারও প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকরা বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার কেন তাগিদ দিচ্ছে? শেখ হাসিনা একবার বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র নাকি বাংলাদেশকে ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায় বঙ্গোপসাগরের উপর। যদি এমনটা হয়, তাহলে এই অঞ্চল স্থিতিশীল থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের নির্বাচন নয়, গণতন্ত্র নয়। বরং নির্বাচনের নাম দিয়ে বাংলাদেশে এমন একটা অবস্থা তৈরি করা, যেখানে ভারত মহাসাগর আর বঙ্গোপসাগরের জায়গাটা ব্যবহার করতে পারে।
আপাতত আওয়ামী লীগ সংবিধানের বাইরে এক পাও যেতে নারাজ। তবে সবাইকে নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে যেতে চায়। ওবায়দুল কাদেরের কথায়, ইউরোপ আমেরিকা তো অনেক হলো, প্রচুর চিঠি চালাচালি হয়েছে। কখনো ভগবান আসে, কখনো অবতার আসে। এসব অনেকবার শোনা হয়ে গেল।কিন্তু প্রশ্নটা হল, যখন বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামানো হচ্ছে তখন বিশ্বটা কোথায়? এই যে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে সেখানে ইউরোপ কি করল? অথচ দেখুন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে জটিলতা বেড়েই চলেছে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, দেশটা আর দেশটার বাইরে যেভাবে সমালোচনা হচ্ছে, আলোচনা হচ্ছে, লেখালেখি হচ্ছে, এশিয়ার অন্য কোন দেশের নির্বাচন নিয়ে কি এমনটা হয়েছে? বাংলাদেশের রাজনীতি পরিস্থিতি আর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর থেকে। ২০১৪ আর ২০১৮ সালে বাংলাদেশের যে নির্বাচন হয়েছিল, দেশটার মানুষের সে অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো নয়। বিদেশের মাটিতেও সেই নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। তখন বহু মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আসল কথা, বাংলাদেশে সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। তার মাঝেই ঘোষণা হয়ে গিয়েছে নির্বাচনের তফসিল। রাজনৈতিক অস্থিরতায় নির্বাচন হলে, বিশ্বের বহু দেশ থেকে বাংলাদেশের দিকে ছুটে আসবে প্রশ্নের তীর। যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই চাপ দিচ্ছে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের উপর। মানে নির্বাচনে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করবে। কিন্তু গোঁ ধরে বসে আছে বিএনপি সহ বহু বিরোধী দল গুলো।
খেয়াল করে দেখুন তো, কয়েক বছর আগেই নেপালের নির্বাচন হয়েছে। কোন প্রশ্ন উঠেছে কি? পাকিস্তানে হাজারো রাজনৈতিক সমস্যা থাকলেও, তাদের দেশের নির্বাচন নিয়ে এত হইহট্টগোল হয় না। আসলে অবাধ সুষ্ঠু অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য একটা সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। তফসিল ঘোষণার পর প্রচুর প্রক্রিয়া রয়েছে। সেখানে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ চাই। তাই আগে দরকার সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতা আর সমাধান।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়