[ad_1]
China Lilliput Village: এই গ্রামে মানুষ জন্মালেই বেঁটে হয়ে যায়। এই গ্রামে একটা বয়সের পর আর বাড়ে না কেন মানুষ? কার অভিশাপ রয়েছে চীনের এই গ্রামে? রহস্যময় এই এলাকা প্রকাশ্যে আসার পর অবাক হয়েছে গোটা দুনিয়ার মানুষ।
এই গ্রামে গেলে মনে হবে একেবারে গলিভার ট্রাভেলসের দেশে এসে পড়েছেন। কারণ সে দেশেও সকলেই ছিল বামন। এখানেও হুবহু তেমনটাই ঘটে গেছে। চীনের এই গ্রামে অদ্ভূতভাবে ৪ ফুটের থেকে বেশি কাউকে দেখতে পাবেন না আপনি। জন্ম নেওয়ার পর কোন অভিশাপ এমনটা হয় চীনের ইয়াংসিতে? চীনের সিচুয়ান প্রদেশের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত ইয়াংসি গ্রাম। অন্যান্য গ্রাম থেকে এ গ্রামটি একদিক দিয়ে একেবারেই আলাদা। অসংখ্য বামনদের বসবাস এই গ্রামকে একেবারে আলাদা করে দিয়েছে। চীনের এই মানুষদের কথা অনেক পরে জানতে পারে বিশ্ব। তাহলে কি এতদিন লুকিয়ে রাখা হয়েছিল এদের ?
একজন স্বাভাবিক মানুষের উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম হয়ে থাকলে তাকে খর্বাকৃতির বা বামন বলে গণ্য করা হয়। সাধারণত বামনদের গড় উচ্চতা ধরা হয় ৪ ফুট। ইয়াংসি গ্রামের সর্বাপেক্ষা লম্বা বামনের উচ্চতা ৩ ফুট ১০ ইঞ্চি। সর্বাপেক্ষা খাটো বামনের উচ্চতা ২ ফুট ১ ইঞ্চি। তবে প্রশ্ন ওঠে কেন এই গ্রামে কারোর জন্ম হলেই তার উচ্চতা আর বাড়ে না। ইয়াংসি গ্রামের লোকদের সম্পর্কে সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে জানাজানি হয় ১৯৫১ সালে। যদিও ১৯১১ সাল থেকে এই গ্রাম ও গ্রামের অধিবাসী নিয়ে
কানাঘুষা শোনা যেত। কিন্তু ১৯৫১ সালের আগে ঠিক কেউ আমলে নেয়নি ব্যাপারটি। পরে সবটা জানাজানি হতে বিজ্ঞানীরা এর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করেন। তারা জানতে চান এই গ্রামে কি এমন কিছু ঘটেছিল যার ফলে খর্বাকৃতির মানুষ জন্মের সংখ্যা বিশেষ করে এই এলাকাতেই কেন ঘটছে?এরপরই নাকি শুরু হয় গবেষণা। তারা সম্ভাব্য সকল রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করেন। যেমন ইয়াংসির বামুন মানুষদের শরীরের বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করা হয়। ঐ এলাকার জল, মাটি, এমনকি শস্যেরও নিরীক্ষা করে দেখা হয়। তারা ধারণা করেছিলেন ওই এলাকার মাটিতে হয়ত অতিরিক্ত মাত্রায় পারদের উপস্থিতি রয়েছে। যার কারণে তা শরীরে এমন প্রভাব ফেলছে। কিন্তু মাটি পরীক্ষা করে এমন কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি গ্রামের প্রত্যেক খর্বাকৃতির মানুষকে আলাদাভাবে পরীক্ষা করা দেখা হয়। কিন্তু সেরকম কোনো প্রমাণ মেলেনি। যার ফলে বিজ্ঞানীরা এমন অস্বাভাবিকতার যুক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে পারেনি কোনওকিছুকেই। ধোঁয়াশাতেই রয়ে গেল পুরো ব্যাপারটি। জানা গেল না প্রকৃত কারণ। তবে গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তির মতে, আমরা সকলে বেশ সুখে-শান্তিতেই বসবাস করছিলাম। হঠাৎ এক গ্রীষ্মের রাতে অজানা এক রোগ ছড়িয়ে পড়ে আমাদের গ্রামে। ৫-৭ বছর বয়সী শিশুরা এতে আক্রান্ত হয় এবং ওদের স্বাভাবিক দৈহিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। শুধুমাত্র যে তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিই থেমে গিয়েছিল তা নয় নানা রকম শারীরিক বিকলাঙ্গতাও দেখা দেয়। অনেকে বলে থাকেন, “অশুভ কিছুর ছায়া পড়েছে এই গ্রামে তাই এমন একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটে চলেছে দিনের পর দিন“। কুসংস্কারে বিশ্বাসী অনেক মানুষের ধারণা, তারা হয়ত তাদের পূর্বপুরুষদের মৃতদেহের সৎকার ঠিকঠাকভাবে করতে পারেনি। তাই তাদের অতৃপ্ত আত্মার অভিশাপে এমনটা ঘটছে।
চীন সরকার যে এমন একটি গ্রাম সম্পর্কে জানতো না তা নয়। তবে চীনের কখনো কোনো মাথাব্যথা ছিল না এই গ্রামকে নিয়ে। এমনকি পর্যটকদের জন্যও কখনো এই গ্রামটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়নি। পরে অবশেষে ইয়াংসিবাসীদের জীবনযাত্রার মানকে কিছুটা উন্নত করার জন্য ২০০৯ সালে এখানে একটি বিনোদন পার্ক স্থাপন করা হয়। ১৯-৪৯ বছর বয়সী প্রায় ১০০ জন বামন এখানে নাচ, গান সহ নানা রকম বিনোদনমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে থাকে। এই পার্কের মূল উদ্দেশ্য ছিল বামনদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক সাফল্য।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়