ওয়েব ডেস্কঃ নদী যেখানে সমুদ্রে এসে পড়ে তাকে নদীর মোহনা বলে । এই মোহানাতে নদীর জলের সঙ্গে বাহিত পলি জমে ( নুড়ি, কাঁকর, কাদা, বালি) যে নতুন ভূভাগের সৃষ্টি হয় তাকে দ্বীপ বলে। আজ যে চমৎকার দ্বীপের কথা বলব, সেখানে প্রকৃতি নিজেকে মেলে ধরেছে নিজের করে তাই চমৎকার বলব। কিন্তু এতে যে আছে অলৌকিকতার সম্ভার। কারণ দ্বীপটির বাইরে গেলেই মরতে হবে, এমনটা কথা থাকে না,তবে এটাই নিয়ম সেখানে।
কেন? কারণ এখানের উপজাতিরা বড্ড পুরাতন। কিন্তু শুধু পুরাতন বললে যে, পরিসমাপ্তি হয় না বরং আদিম। কিন্তু সৌন্দর্য যে উপভোগ করবে মানুষ তার তো উপায় নেই। কারণ বিষের তীব্র তীর আপনাকে শেষ করে দেবে। আসুন তবে সামান্য হলেও জেনে নি এদের সম্বন্ধিত কিছু কথা।
আন্দামানের ভয়াবহ দ্বীপ, সর্ব সমগ্র ৩৯ জন। পুরুষ মাত্র ২১ জন, আর ১৮ জন মহিলা। সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী তবে কারা? আন্দামানি জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি জাতিগোষ্ঠী। গ্রেট আন্দামান উত্তর সেন্টিনেলী দ্বীপপুঞ্জে এই জনগোষ্ঠীর বাস। বাইরের জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের নীতি রেখেই এরা চলে। এরা শিকার নির্ভর জাতি। শিকার, মাছ ধরা, এবং বন্য লতাপাতার সংগ্রহ এদের জীবন জীবিকা।বিস্ময় কর বিষয় হলো এদের মাঝে কৃষিকাজ ও আগুণের ব্যবহার এখনও নেই। কারণ আধুনিকতা ছোঁড়া কোন অংশেই নেই।
বিস্ময়কর বিষয় হলো, যে, এরাই এতোটাই হিংস্র যে, এদের কবলে অনেকেই, আর প্রাণ হারিয়েছেন বহুজন। জানেন কি, ১৯৭৫ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক পরিচালক একটা তথ্যচিত্র বানাবার উদ্দেশ্যে গিয়ে পৌঁছিয়েছিলেন সেই দ্বীপে।কিন্তু তাদের মধ্যে একজন বিষাক্ত বিষের কবলে, তাই আর কেউ এগোয়নি। দ্বীপের মানুষের কোন ছবি তাই এখনো তোলা অসম্ভব। যা তোলা গেছে সবটাই আবছা। মাঝে মাঝে হেলিকপ্টার করে কিছু খাদ্য পাঠানো হয়, কিন্তু সেখানেও তারা আক্রমণাত্মক হামলার শিকার। বলা হয়, এরাই আদিম মানব। কিন্তু পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ, অসম্ভব কারণ এখানে প্রবল অন্তরায় বিষাক্ত তীর। তাই রহস্য অধরা আর অলৌকিকে মোড়া দ্বীপ হয়েই স্থির ” সেন্টিনেল আইল্যান্ড “।
যা দুষ্কর যা খুঁজে পাওয়া অসম্ভব তা নিয়ে আমাদের কৌতুহলের শেষ নেই। জানেন কি এরা কতটা স্বাধীন। কারণ ম্যাপ দেখলে যে কেউ বুঝবেন, সেন্টিনেলদের বাসস্থল এই দ্বীপটি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আন্দাবান নিকোবার অঞ্চলের -এর একটি অংশ হিসেবে চিহ্নিত। কিন্তু এরা অনেক স্বাধীন।কারণ সরকার অনেক দ্বীপপুঞ্জে স্বাধীন ভাবে পৌঁছে গেছে, কিন্তু না এখানে অসমর্থ হয়েছে। ১৯৬৭ সাল থেকে পোর্ট ব্লেয়ারে অবস্থিত ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন যে তারা ভারতের ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার ম্যানেজমেন্টের সাহায্য নিয়ে সেন্টিনেন্টাল দের সাথে যোগাযোগ করবে। তাই খাবার ছড়িয়ে দিয়ে, মৈত্রী স্থাপনের চেষ্টাও করে ২০০৬ সালে যখন হেলিকপ্টারে করে তারা মৃতদেহ আনতে যায়, তখন এরা তাদের বিষ তীর দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।