[ad_1]
Snow Fall in Soudi Arabia: সৌদি আরবের খটখটে মরুভূমিতে বিস্ময়কর ঘটনা। তুষারে ঢাকলো মরুভূমি। তাহলে কি পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে? প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। কেন এমনটা হচ্ছে? এর আসল ব্যাখ্যাটা ঠিক কী? চলছে পবিত্র রমজান মাস, এই সময় বিশ্বের হাজার হাজার মানুষ এখন সৌদিতে, তারা সাক্ষী হলেন এক বিরল তুষারপাতের।
সৌদি আরবে এখন বহু জায়গায়, অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেশি বের না হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তৈরি হয়েছে এক বৈরি আবহাওয়া। সবাইকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হচ্ছে। যদি বলা হয়, সৌদির তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রীর কাছাকাছি চলে গিয়েছে। তাহলে কিন্তু কেউ অবাক হবেন না। কিন্তু যদি বলা হয়, এখানে শিলাবৃষ্টি হচ্ছে, তুষারপাত হচ্ছে, তাহলে একটু অবাক হওয়ারই মত। যদিও এই ধরনের ঘটনাকে একেবারেই বিরল ভাবলে ভুল করবেন। কারণ দেশটিতে মাঝেমধ্যেই আকস্মিক বৃষ্টিপাত, তুষার পাত, বন্যার মতোই পরিস্থিতি তৈরি হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, দেশটার উত্তর অঞ্চলের সীমান্ত, তাবুক, হাইল, মদিনা, কাশিম আল জাওয়াকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তার সঙ্গে থাকতে পারে বজ্রঝড় আর শিলা। উপত্যকা গুলো প্লাবিত হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মক্কার বিভিন্ন জায়গাতেও। পাশাপাশি গোটা সৌদি আরবে হুড়মুড়িয়ে কমতে পারে তাপমাত্রা।
যদিও আবহাওয়ার এমন অস্বাভাবিক আচরণে সৌদিবাসীকে কখনো বিপদে পড়তে হয়নি। উল্টে এমন আবহাওয়া দেশটার মানুষকে মুগ্ধ করেছে। অনেকেই আছেন যারা তুষারপাত উপভোগ করতে রাতেও বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। রীতিমতো উৎসবে মাতেন তারা। সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সৌদির তুষারে ঢাকা মরুভূমির ছবি আর প্রচুর ভিডিও। যেখানে দেখা যাচ্ছে ধূসর মরুভূমি ঢেকে গিয়েছে শুভ্র তুষারে। দেখুন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব বলতেই চোখে ভেসে ওঠে মরুভূমির দুর্গম অঞ্চল। এর আগেও বেশ কয়েকবার দেশটার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবুক পাহাড়ে তুষারপাত দেখা দিয়েছে। প্রতিবছরই শীতকালে এই অঞ্চলটা সৌদিদের কাছে একটা বিশেষ অঞ্চলে পরিণত হয়। সোজা কোথায় চোখের প্রশান্তি যাকে বলে।
এর আগেও, ২০২১ সালে নজিরবিহীন তুষারপাত দেখা গিয়েছিল আফ্রিকা আর সৌদি আরবের মরুভূমিতে। তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল প্রায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তখন একদল বিশেষজ্ঞ আশা করেছিলেন, হয়তো এই মরুভূমি আবারও সবুজ হবে। বলা হয়, সৌদি আরবের উত্তরাঞ্চলে এবং তার সংলগ্ন এলাকায় তুষারপাত মূলত দুটো প্রধান কারণের উপর নির্ভর করে। প্রথমত, এই অঞ্চলে যে বাতাস চলাচল করছে তার তাপমাত্রা ঠিক কতটা। উপযুক্ত আদ্রতা পেলেই আলকান এবং আল- লজ পর্বতের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে তুষারপাত হয়ে থাকে। আর যদি নিম্নচাপ বৃদ্ধি পায়, তাহলে তুষারপাতের আবহাওয়া ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণের অঞ্চলে। শুধু তাই নয়, তুষারপাত হতে পারে তাবুকের পশ্চিমে হাসমি পর্বতেও। এছাড়াও মনে করা হয়, মেরু অঞ্চলে যখন হিমায়িত এলাকা সৃষ্টি হয়, তখন এই অঞ্চলেও বায়ুমণ্ডলীয় স্তরের প্রভাব পড়ে। বৃষ্টির ছোঁয়ায় সৌদির শুষ্ক মরুভূমি রূপ নিচ্ছে সবুজ অরণ্যে। সৌদি আরবও ‘সৌদি সবুজায়ন’ ও ‘মধ্যপ্রাচ্যের সবুজায়ন’ নামক দুটি বিশাল কর্মপরিকল্পনার ঘোষণা করেছে। যার মাধ্যমে ব্যাপক আকারে আরবদ্বীপগুলোতে সূচনা হয়েছে সবুজায়নের ধারা।
সব কিছুরই ভালো আর খারাপ আছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন হচ্ছে, আর তার এফেক্ট যে গোটা বিশ্বজুড়ে গ্রাস করছে, সে তো জানেনই। আবহাওয়ার ভোলবদলের কারণে সৌদিতেও তার প্রভাব পড়েছে। বদলে যাচ্ছে দেশটার চেনা পরিচিত আবহাওয়ার ছক। তবে সৌদি যদি সবুজ হয়ে ওঠে, তাহলে ব্যাপারটা মন্দ হবে না। অনেকটা শাপে বর পাওয়ার মত। আপনি কি বলেন?
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়