আজ ২০শে জুন, বিশ্ব “শরণার্থী” দিবস ~

আজ ২০শে জুন, বিশ্ব “শরণার্থী” দিবস ~

বিশ্ব “শরণার্থী” দিবস

এই দিবসটি ইতিহাস সম্পর্কে বলা যায় ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ৫৫/৭৬ ভোটে অনুমোদিত হয় যে, ২০০১ সালে থেকে জুন মাসের ২০ তারিখ আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস হিসেবে পালন করা হবে। তার এ কারণে এ দিনটি বাছাই করা হয় যে, ১৯৫১ সালে অনুষ্ঠিত শরণার্থীদের অবস্থান নির্ণয় বিষয়ক একটি কনভেনশনের ৫০ বছর পূর্তি হয় ২০০১ সালে।

২০০০ সাল পর্যন্ত আফ্রিকান শরণার্থী দিবস নামে একটি দিবস বিভিন্ন দেশে পালিত হয়ে আসছিল। জাতিসংঘ পরবর্তীকালে নিশ্চিত করে যে, অর্গানাইজেশন অব আফ্রিকান ইউনিট অথবা ওএইউ পরবর্তীকালে ২০ জুনকে আফ্রিকান শরণার্থী দিবস-এর পরিবর্তে আন্তর্জাতিকভাবে শরণার্থী দিবস হিসেবে ২০ জুনকে পালন করতে সম্মত হয়েছে।

বিশ্ব জুড়ে উদ্বাস্তুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেও অবস্থা এত ভয়াবহ হয়নি। সেই ব্ল্যাকআউট, সেই ছেচল্লিশের মনান্তরের কথা কেউ কী ভুলতে পারে! যারা বাংলাদেশ তৈরির আগে বা মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশে এসেছিলেন, কলোনি গড়ে উঠেছিল, তারা আজও উদ্বাস্তুর মানুষের কথাটা বুঝবেন। আসলে রিফিউজি শব্দটা এখন বাঙালির কাছে ইতিহাস। তবু অনেক মানুষ বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসে। এখন আমরা তা বেআইনি বললেও আজও আসে অনেক শরনার্থী। বর্তমানে আন্তর্জাতিক উদ্বাস্তু দিবসে এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে এনেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু হাইকমিশন। ২০১৫ সালের হিসাব অনুসারে, বিশ্ব জুড়ে ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা ৬ কোটি ৫০ লক্ষ, ব্রিটেনের লোকসংখ্যার থেকে যা সামান্য বেশি। পৃথিবীর প্রতি ১১৩ জন মানুষের মধ্যে একজন গৃহহীন, শতাংশের হিসেব করলে এমনই দাঁড়াচ্ছে সমীকরণ। ভয়ঙ্কর এই অবস্থায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিশুরা। হিসেব বলছে, পৃথিবীর প্রায় এক লক্ষ শিশু এই ছিন্নমূলের দলে রয়েছে, তারা সকলেই অনাথ। যাদের পরিবারের একজনেরও খবর নেই। আই এস এর চাপে সিরিয়া, ইরাক, দক্ষিণ সুদান ও সোমালিয়া থেকে বিপুল সংখ্যায় মানুষ ভিটে ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তার মধ্যে শুধু সিরিয়া থেকেই পালিয়েছেন প্রায় ৪১ লক্ষ মানুষ। সোমালিয়া, আফগানিস্তান ও সিরিয়াই উদ্বাস্তুদের বেশিরভাগের বাসস্থান। তবে, পাশে থাকার জন্য আমেরিকা, অস্ট্রিয়া, ইরান, পাকিস্তান ও তুরস্ককে আলাদাভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। দেশগুলির মধ্যে তুরস্কই প্রায় ২০ লক্ষ উদ্বাস্তুকে জায়গা দিয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত দেশকেই আবেদন করা হয়েছে, প্রশাসন যেন ছিন্নমূল মানুষদের শিক্ষা ও কর্মের অধিকারের দিকটা খেয়াল রাখে। বাচ্চারা যেন স্কুলে যেতে পারে, বড়রা যেন কাজ পায়। জাতির উন্নতিতে তাদের যেন একটা ভূমিকা থাকে। তাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের বলা উচিত কথা, মানুষ হিসেবে চাই না আর নীরবতা।

কয়েকটি ভয়ঙ্কর তথ্যঃ

  • বিশেষ ভাবে গণনা করে দেখা গেছে ৫০ শতাংশ উদ্বাস্তু আঠারো বছরের নীচে।
  • সিরিয়ানদের অবস্থা এখন ভয়ঙ্কর। (জঙ্গি আইএস, তার উপর নিপীড়ন দুটোই বোধহয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও বেশি)
  • পাকিস্তানে প্রায় ১৬ লাখের উপর উদ্বাস্তু।
  • আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে উদ্বাস্তুকে তার পুরোনো দেশে ফেরত পাঠানো যাবে না।

বিশ্বের প্রথম সারীর পাঁচটি উদ্বাস্তু দেশ হলঃ

  1. তুরস্ক
  2. পাকিস্তান
  3. লেবানান
  4. ইরান
  5. ইউথোপিয়া

 

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here