আমার একটা নাম ছিল *********************** যারা আমাকে এখনো পার্কস্ট্রিট কান্ডের নিগৃহীতা বলে উল্লেখ করেন , সেই সব আইন বাঁচানো , সংস্কৃতিপ্রিয় দেশবাসীদের জানাই , আমার একটা নাম ছিল। কার দেয়া জানা নেই, কিন্তু নামটা আমার বেশ পছন্দের। সেই রাতের পর সব কিছুর সাথে আমার নামটাও হারিয়ে গেল । আমকে সবাই জানলো, ধর্ষিতা বা একটু ভদ্র করে নিগৃহীতা বলে। আমার নাম সুজেত জর্ডন, যদি কঠিন লাগে, তবে ছোটো ক’রে সুজি। সেই ঘটনার পর পুলিশের উপহাস , চরিত্রের দিকে উঠে আসা আঙ্গুলগুলোর দিকে তাকানোর মত অবস্থা আমার ছিলনা। শারীরিক পরীক্ষার টেবিল থেকে অন্য টেবিলে নিজেকে একতাল মাংস ছাড়া কিছুই মনে হচ্ছিল না। আমার সব ওলট পালট হয়ে যাওয়া মাথায় কিছুতেই ঢুকছিল না যে আমার জ্ঞানহারা শরীরটাকে নিয়ে সেই অমানুষগুলো কি কি করেছিল যে আমাকে এতো যন্ত্রণা পেতে হয়েছে। নড়তে পারছিলাম না , এই সাঁইত্রিশ বছর বয়েসে বাবার কাঁধে ভর দিয়ে বাথরুম যেতে হয়েছে। যারা কবিতা লেখেন তাদের বলি , আপনাদের সোনার কলমে আমার নামটা উঠে এলো না। আমার নিজের কথা, নিজের নাম শেষমেষ আমাকেই লিখতে হলো। আপনারা আজ আমার শেষ যাত্রার আয়োজনে ব্যস্ত , হয়ত’ আমাকে একটু ভালো ভাবে বিদায় দিতে চান , শুধু ভুলে যাবেন না , যার সব ব্যথার আজ অবসান হলো , তার নাম কোনো ধর্ষিতা বা নিগৃহীতা নয়। আমি সুজেত জর্ডন, মনে থাকবে তো ? দেবব্রত সান্যাল : 24/05/2017