ঘোড়া ~~~~~~~ (এক) তোর চোখে যে চাঁদের শিশির আছে তার বয়স আলোকবর্ষ সেই রোজনামচার নদীতে আমি ভেসেছি যখন তুই বলেছিলি অপেক্ষা কর্, আমি তো বুঝেছি বট অশ্বত্থ নয় অপেক্ষার কচ্ছপ জন্ম চাই মহাভারতীয় ঘোড়া তো ইতিহাস উদযাপনের কালো ঘোড়া হয়ে উঠছে নারী আর আমি বেটিং করছি আসলে পুরুষ তো নারীকে দ্রৌপদী ভাবতে ভালবাসি (দুই) প্লেনটা যে রানওয়ে দিয়ে নামল আমি সেই ধোঁয়াময় ফ্রেমে স্পষ্ট দেখলাম সাদা ঘোড়া পক্ষীরাজ হল তুমিও চলে গেলে প্রেম না দিয়ে এই যুগে ঘোড়া মেলে ভিক্টোরিয়াতে আর ভালবাসা মিউজিয়ামে... (তিন) তোমরা যে ঘোড়ার ছবি দেখে মুগ্ধ হও বাড়ির দেওয়ালে লাগাও সেই ঘোড়া কর্কটক্রান্তির রেখা পেরিয়ে এসেছে তুমি তো সিঁদুরের গন্ডি না পেরিয়েই ঘোড়ার মত সম্পর্কে লাথি দিয়ে অনলাইন হয়ে রাত জাগছ আমায় পাত্তা দিচ্ছো না (চার) যে ঘোড়ার গায়ে অনেক রং তোমরা তাতে নিজেকে খুঁজো না সময়ের ঘূর্ণন, দূরন্ত সময় মানুষ কালিমা লিপ্ত হয় ঘোড়ার নানা রংগুলো ঐ রকমই দীর্ঘ সময়ের কালিমা (পাঁচ) পিঠে বেত মেরে আরও দ্রুত হল ঘোড়ার পা... রক্তাক্ত দিনের কমরেডদের দেখে ঘোড়ার পিঠ মনে পড়ে আসলে নেতারা তো ঘোড়ার মালিক (ছয়) ঘোড়ার থেকেও দ্রুত-সুমেখারের ফেরারি তবু দেখ্ জীবনে হর্স পাওয়ার খোঁজো আসলে পুরুষ ও নারী হলি, কখনও পুরুষ মানুষ বা নারী মানুষ হয়ে উঠলি না দেশ তাই কাঁদছে, পৃথিবী তাই বিপণ্ন (সাত) মহাভারতের ভেঙে যাওয়া রথের চাকা কোনারকে লাগিয়ে অশ্বমেধের যুদ্ধ শেষ করে রাজা এলো জাগ্রত পাহাড়ে। রবার্ট ব্রুসের মতো পুরু তখন অপেক্ষা করছে। মুখেন মারিতং জগত- নয়, আলেকজান্ডার ফিরিয়ে দিল রাজাকে তার রাজত্ব। আসলে বুশেফেলাস নামক ঘোড়াটির মাথা মহিষের মতো হলেও মনটা কিন্তু অসুরের মতো নরম, তাই তো মা দুর্গার পায়ের তলায় চির অপেক্ষমান। ঘোড়ার মতো পুরুষের দল নারীর সাথে যুদ্ধ করে। যে পুরুষ যুদ্ধ করে না নারীর সাথে, সে টিকে যায় সংসারে। ঘোড়া তো দাঁড়িয়ে ঘুমায়। সংসারী পুরুষেরা ঘুমায় স্বপ্নে। (আট) “বাবু এখন এসো। পরে কথা বলব। এখন একটু মাঠে যাব, খেলা আছে।” এই বলে ঘোড়ার রেসের মাঠে টিকিট বিক্রি করতে চলে গেল ক্লাস টু-তে পড়া ছেলেটি... ফার্স্ট জেনারেশন লার্নার। ফ্লাইওভারের তলায় থাকে, মা-বাবা পকেটমার ছেলেটার চোখে বিশ্ব জয় করার স্বপ্ন দেখেছিলাম- ছেলেটিও ধীরে ধীরে ঘোড়া হয়ে উঠছে। (নয়) তুই তখন এগিয়ে এলি রাজকুমারীর বেশে। আমার ক্যানভাসের ছবিটা দেখে হাসলি। আমি তো অবাক। পুরো ডনের মতো রাগী মুখ নিয়ে তাকালাম। হেসে বললি “গোলাপি ঘোড়া জন্মে দেখিনি...” বন্দুক তাক করে বললাম “বন্ধু গোলাপ দুরন্ত গতিতে ঘোড়া হয়ে উঠছে” (দশ) আইফেল টাওয়ারে দাঁড়িয়ে সারা শহরটিকে দেখতে পেলাম। দ্রুত গতির জীবনগুলো এগিয়ে চলল হাজার হাজার মাইল, আমি ফিরে এলাম ঘরে, রং তুলিতে গল্প আঁকতে লাগলাম। ঘোড়াই আঁকলাম, নালগুলো পরে আছে পুরীর সমুদ্রে একটা নাল তোমার বাড়ির দরজাতেও রয়েছে। (এগারো) মদ খেয়ে নেশা হয়ে যাওয়া তোমার চোখে আমি ঘোড়ার আগুন দেখতে পাই বারংবার। সমাজ ও সাহিত্য একেই বলে ব্ল্যাক বিউটি। আমি বুঝতে পারি তোমার ভিতর দুটো তুমি, একটা তুমি আমার প্রেমিকা, একটা তুমি স্ত্রী (বারো) কৃষ্ণ যখন থামিয়ে দিল কাল, অর্জুন দেখল মহাবিশ্ব যুদ্ধ সংঘটনের আগের এই মুহূর্তটাই মহাভারত। ডার্ক হর্স তখন ভাবছিল কবে শ্বেত হবে যুদ্ধের পরেই শান্তি ভীষণ প্রয়োজনীয়... সোমাদ্রি:26/05/2017