[ad_1]
আজ সরস্বতী পুজো। বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে সর্বত্র বীণাপানির আরাধনা চলছে। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে গৃহস্থ বাড়িতে চলছে বাগদেবীর পুজো। কিন্তু বাদ্যযন্ত্রই নেই। এমন ঘটনাও ঘটেছে। ঋক বেদের মতো প্রাচীন গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে বীণার। সেখানে এই বাদ্যযন্ত্র পুরুলিয়া–বাঁকুড়ার মতো জেলা সদরে আর সেভাবে বিক্রি নেই। সঙ্গীতের শহর বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে বীণার দেখা মিলছে না। আর তাই বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে তানপুরাকে অনেকেই পার্থক্য করতে পারছেন না। এমনকী মৃৎশিল্পীরাও নিজের ভুলে সরস্বতী দেবীর হাতে বীণার বদলে তানপুরা তৈরি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। আর সেই প্রতিমা বিক্রিও হয়ে গিয়ে পুজো হচ্ছে।
এদিকে মিশরে ২৫০০ খৃস্টপূর্বাব্দে বীণার উৎপত্তি বলে কথিত আছে। পরে কালের গতিতে সরস্বতী দেবীর হাতের এই বীণার মধুর আওয়াজে বিস্তার লাভ করে বলেই পুরাণে লেখা আছে। কিন্তু সেই বীণার আজ আর দেখা মেলে না। এমনকী সরস্বতী পুজোতে পুরুলিয়া শহরের নামোপাড়ার একটি বাদ্যযন্ত্র দোকানের মালিক চন্দ্রনাথ রাই বলেন, ‘এটা ১৭৮ বছর পুরনো দোকান। আমরা ষষ্ঠ প্রজন্ম। এই বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসা করছি। গত ৩০ বছর আমাদের দোকানে কোনও বীণা বিক্রি হয়নি। তাই বিষয়টি এখানে তেমন চল নেই।’
অন্যদিকে প্রাচীন সঙ্গীত চর্চার ইতিহাসে বীণার ঝঙ্কার ছিল মধুর বলে জানা যায়। এই পুরুলিয়া–বাঁকুড়াতে অতীতে বীণার চল ছিল। এখন তা হারিযে গিয়েছে। বিষ্ণুপুরের রামশরণ সঙ্গীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আঁতুড়ঘরে তা আর পাওয়া যায় না। বিষ্ণুপুরের এই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ে আলমারি বন্দি হয়ে রয়েছে সেকালের বিশাল রুদ্রবীণা।’ তবে পুরুলিয়ার মধ্যবাজারে এক বাদ্যযন্ত্র দোকানের মালিক শুভাশিস দে বলেন, ‘বরাত পেলে আমরা কলকাতা থেকে বীণা এনে দিই। এখন বছরে দুটো বিক্রি হয়। ইলেকট্রিক তানপুরা বের হয়ে গিয়েছে। তাই বীণার কদর নেই।’
আরও পড়ুন: এবার সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে র্যাগিংয়ের অভিযোগ, বহরমপুরে তোলপাড় কাণ্ড
এছাড়া এমন পরিস্থিতিতে অনেক সরস্বতী প্রতিমার হাতে আর বীণা দেখা যায় না। তার পরিবর্তে তানপুরা দিয়ে দেওয়া হয়। তার ফলে নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছে বুল বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে। পুরুলিয়ার বাসিন্দা সঙ্গীত শিক্ষিকা এবং কয়েকজন গায়িকা বলেন, ‘বীণার ব্যবহার আর আমাদের জেলায় দেখা যায় না। অনেকেই বীণার সঙ্গে তানপুরাকে পার্থক্য করতে না পেরে চালিয়ে দিচ্ছেন। মৃৎশিল্পীরাও সরস্বতীর হাতে বীণার বদলে তানপুরা দিয়ে দেন। তাই আজ এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। বীনা আজকাল চোখেই পড়ে না। বাদ্যযন্ত্র বাজানো তো দূরের ব্যাপার।’